সমুদ্রকিনারে ছুটে চলেছেন ঊর্মিলা। হাওয়ায় এলোমেলো চুল। পরনে দুধসাদা ছোট্ট পোশাক। সমুদ্রের ঢেউ আর ঊর্মিলার শরীরী বিভঙ্গে তখন হিল্লোল দর্শকমনে। ঠিক ধরেছেন, ‘রঙ্গিলা’ ছবির সেই বিখ্যাত ‘তানহা তানহা ইঁহা পে জিনা’ গানটির কথাই হচ্ছে। কিন্তু জানেন কি, ঊর্মিলার পরনের পোশাকটি আসলে নায়িকারই নয়। সেটি ছিল জ্যাকি শ্রফের গেঞ্জি। অবাক হচ্ছেন! আসুন, গোটা গল্পটাই শুনে নেওয়া যাক।
নায়িকার পরনে নায়কের পোশাক। সে আর এমন বড় কথা কী! বিশেষত বলিউডে যখন বদলের হাওয়া লেগেছিল, তখন নায়ক-নায়িকার পোশাকেও বিস্তর পরিবর্তন এসেছিল। কিন্তু কথা সেটা নয়। নায়কের গেঞ্জি পরেই শ্যুটিং করছেন নায়িকা, এমনটা কি খুব শোনা যায়? মোটেও না। সম্ভবত বলিপাড়ায় একবারই ঘটেছিল এরকম ঘটনা। আর সেখানে কুশীলব দুজন, ঊর্মিলা মাতন্ডকর এবং জ্যাকি শ্রফ।
আরও শুনুন: হিরো হওয়ার গেরো, স্টারডমের জন্যই চরিত্র হাতছাড়া হয়েছিল কিং খানের
শুটিং চলছে ‘রঙ্গিলা’ ছবির সেই বিখ্যাত গানের- ‘তানহা তানহা ইঁহা পে জিনা’। সমুদ্রের জল ধুয়ে দিচ্ছে নায়িকার পা, আর এলোমেলো পায়ে ছুটে আসছেন তিনি। দৃশ্যটা ছিল এরকমই। সিনেপ্রেমী দর্শক নিশ্চয়ই তা মনে করতে পারছেন। শুটিং চলছে। নায়িকার জন্য কস্টিউমও রেডি। কিন্তু বেঁকে বসলেন খোদ পরিচালক রামগোপাল ভার্মা। নায়িকার পোশাক হিসাবে তিনি অন্য কিছু চাইছেন। কিন্তু কী যে চাইছেন, তা স্পষ্ট করে বলছেন না। দৃশ্যে দৃশ্যে পালটে যাবে নায়িকার পোশাক। সেইমতো তৈরি ডিজাইনার থেকে গোটা ইউনিট। এখন পরিচালকের আবদার মেটানো যায় কীভাবে!
আরও শুনুন: জ্বরে পুড়ছে গা, ছিলেন ঋতুমতী… তবু বৃষ্টি ভিজে রোম্যান্টিক গানে অভিনয় রবিনার
সকলেই খানিক চিন্তায় রয়েছেন। এমন সময় সেখানে এগিয়ে এলেন ছবির অন্যতম নায়ক জ্যাকি শ্রফ। চটজলদি একটা উপায় বাতলালেন। ঊর্মিলাকে বললেন, বেশি চিন্তা না করে তাঁর গেঞ্জি পরেই ঊর্মিলা যেন দৃশ্যটির শ্যুট করে ফেলেন। আর হলও তাই। জ্যাকির গেঞ্জি হয়ে উঠল ঊর্মিলার পরনের ছোট্ট পোশাক। সমুদ্রের অনুষঙ্গে নায়িকার যে শরীরী হিল্লোল চাইছিলেন পরিচালক, ক্যামেরায় চোখ রেখে পেয়ে গেলেন তা-ও। সেই সময়ের নিরিখে এই পোশাক ছিল বেশ সাহসী। ঊর্মিলার ওই ছোট্ট পোশাক নিয়ে রীতিমতো চর্চা হয়েছিল সেসময়। অথচ তার নেপথ্যের গল্পটা বহুদিন অজানাই ছিল সকলের। একবার এক রিয়ালিটি শোয়ে এসে এ-কথা ফাঁস করেন ঊর্মিলা। বলেন, তাঁরা সকলেই চাইছিলেন দৃশ্যটা যেন রিফ্রেশিং হয়। যেন নতুন কিছু থাকে তার মধ্যে। আর কোনওভাবেই যেন কৃত্রিম না মনে হয়। অর্থাৎ একেবারে স্বাভাবিক থাকতে চাইছিলেন তাঁরা। পোশাকের ভাবনাও সেইমতো ভাবা হয়েছিল। তারপরই পরিচালক চাইলেন নতুন কিছু। তখন জ্যাকি সাতপাঁচ না ভেবেই নিজের গেঞ্জি খুলে দিয়ে দিয়েছিলেন ঊর্মিলাকে। আর তাতেই বাজিমাত। সিনেমা হিট তো করেইছিল, গানটাও দারুণ জনপ্রিয় হয়। এই ছবির পর জনপ্রিয়তা বাড়ে ঊর্মিলার। আর সেই জনপ্রিয়তার নেপথ্যে যে জ্যাকি শ্রফেরও খানিক অবদান আছে, বিশেষত গানটির ওই সাহসী দৃশ্যের ক্রেডিট যে পুরোপুরি জ্যাকিরই, সে-কথা কবুল করতে অবশ্য ভোলেন না ঊর্মিলা।