ইতিহাস গড়ে ব্রিটেনের প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ঋষি সুনাক। তাঁর ভারতীয় যোগ থাকার দরুন ইতিহাসের একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হল বলেই মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি চমকে দেওয়ার মতো তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও। যৌথ সম্পত্তিতে ঋষি ও তাঁর স্ত্রী নাকি টেক্কা দিতে পারে ব্রিটেনের রাজাকেও। ঠিক কত সম্পত্তির মালিক তাঁরা? আসুন শুনে নিই।
শ্বেতাঙ্গদের মসনদে একজন অ-শ্বেতাঙ্গ। এই প্রথমবার। ঋষি সুনাক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় খুলে গেল বলেই মনে করছেন অনেকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষির ব্রিটেনের কুরশিতে বসা নিঃসন্দেহে বিশ্ব ইতিহাসের এক চমকপ্রদ ঘটনা। একইরকম চমকপ্রদ ঋষির সম্পত্তির খতিয়ান। প্রখ্যাত ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের জানাচ্ছে, ঋষি ও তাঁর স্ত্রী-র যৌথ সম্পত্তি রাজা দ্বিতীয় চার্লসের ব্যক্তিগত সম্পত্তির থেকেও বেশি।
আরও শুনুন: ধর্ম বাধা নয়, পাকিস্তানের মানুষ সযত্নে আগলে রেখেছেন শংকরাচার্যের স্মৃতি
ঋষি সুনাক যে সে-মুলুকের ধনীতম ব্যক্তিতের অন্যতম তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। চলতি বছরে ‘দ্য টাইমস অফ লন্ডন’ যে ২৫০ জন ধনী ব্রিটিশ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে জায়গা করে নিয়েছিলেন ঋষি ও তাঁর স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি। অর্থাৎ তাঁদের মিলিত সম্পত্তিতে তাঁরা ব্রিটেনের প্রথম সারির ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। ফোর্বস-এর হিসাব অনুযায়ী, ঋষি ও তাঁর স্ত্রী-র যৌথ সম্পত্তি মোটামুটি ৮১০ মিলিয়ন ডলারের। সেখানে রাজা দ্বিতীয় চার্লসের ব্যক্তিগত সম্পত্তি, ফোর্বসের মতে, আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন ডলারের। অর্থাৎ তাঁদের মিলিত সম্পত্তি রাজার সম্পত্তি থেকে খানিক বেশিই।
আরও শুনুন: দারিদ্র্য ঘোচেনি, তবু ধনকুবেরদের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে তৃতীয় ভারত
চারটি প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক ঋষি ও অক্ষতা। দুটি লন্ডনে, একটি ইয়র্কশায়রে, আর একটি লস অ্যাঞ্জেলসে। ইয়র্কশায়রের প্রাসদটি প্রায় ১২ একর জায়গা জুড়ে। তাঁদের ক্যালিফর্নিয়ার পেন্টহাউসে বেওয়াচের শুটিং হয়েছিল বলেই জানা যায়। স্থাবর সম্পত্তির এই মাত্রা দেখেই আন্দাজ করা যায় তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ। রাজনীতিতে আসার আগে ঋষি সুনাক দুটি প্রখ্যাত সংস্থায় অ্যানালিস্ট হিসাবে যুক্ত ছিলেন। মধ্য কুড়িতে পৌঁছেই তিনি মাল্টি মিলিওনারির তকমা পেয়ে যান। তবে তাঁদের বর্তমান এই বিপুল সম্পত্তির নেপথ্যে অনেকটাই অবদান ঋষি-র স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির। অক্ষতা মূর্তি ইনফোসিস কর্তার কন্যা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ঋষিরা যে সম্পত্তির শীর্ষে আরোহণ করেছেন তা অক্ষতার জন্যই।
বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়ার দরুন বিভিন্ন সময় সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের। প্রশ্নের মুখেও পড়েছেন ঋষি সুনাক। তবে সেই প্রশ্ন হেলায় উড়িয়ে দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের দেশে মানুষকে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে বিচার করা হয় না। করা হয় তাঁর চরিত্র আর কাজ দিয়েই’। সম্পত্তি নয়, তাঁর কাজই যে তাঁর পরিচয় উঠবে, ব্রিটেনের রাজনীতির শীর্ষে পৌঁছে তাই-ই যেন বুঝিয়ে দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।