বন্ধুর শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণরোগ। তাই সারোগেসির মাধ্যমে তাঁকে মাতৃত্বের স্বাদ দিতে এগিয়ে এলেন এই মহিলা। মানবিকতার এই অনন্য উদাহরণ সামনে আসায় ওই বন্ধুকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। আসুন শুনে নিই দুজনের বন্ধুত্বের সেই গল্প।
বান্ধবী আক্রান্ত হয়েছেন ক্যানসারে। ফলত সন্তানধারণের জন্য সাময়িক ভাবে তিনি অক্ষম। তাঁর এমন অসহায়তা দেখে এগিয়ে এসেছেন তাঁরই প্রিয় বান্ধবী। সারোগেসির মাধ্যমে নিজের গর্ভেই বান্ধবীর সন্তানকে বহন করার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: মুসলিমদের থেকে দীপাবলির সামগ্রী কেনা ‘শাস্ত্রবিরোধী’, হিন্দু নেতার দাবিতে বিতর্ক
চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিকতম আবিষ্কার হিসেবে সারোগেসির সাফল্য অভাবনীয়। বিভিন্ন দেশেই এই প্রক্রিয়ায় সন্তানের জন্ম দেওয়া আইনসিদ্ধ। বিশেষ কোনও শারীরিক কারণে নিজের গর্ভে সন্তানধারণে অক্ষম মহিলারা খুব সহজেই সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম দিতে পারেন নবজাতককে। সেই সারোগেসির মাধ্যমেই নিজের প্রিয় বান্ধবীকে মাতৃত্বের আস্বাদ দিয়েছেন এক মার্কিন মহিলা। ২০১৬ সালে কেসি বুশ নামে জনৈক মহিলার শরীরে দেখা দেয় ক্যানসার। জানা যায়, সারভাইক্যাল ক্যানসারে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসার নিয়ম অনুযায়ী কয়েকদিনের মধ্যেই রেডিওলজির মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এইসময় কোনও ভারী কাজ বা শারীরিক ধকল নেওয়ার মতো কাজের অনুমতি ছিল না তাঁর। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সন্তানধারণের মতো জটিল বিষয়েও ছিল নিষেধাজ্ঞা। সদ্য সন্তানধারণের প্রস্তুতি নেওয়া কেসি এমন বারণ শুনে রীতিমতো ভেঙে পড়েন। প্রিয় বান্ধবী বেকি সিডেলের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন। এরপর বান্ধবীর এমন অসহায়তার কথা শুনে একটি প্রস্তাব রাখেন সিডেল। তিনি কেসিকে আস্বস্ত করেন, বিজ্ঞানের এই আধুনিকতম পদ্ধতির কথা জানান। বলেন, সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়ার কথা। আর সেই কাজে বান্ধবীকে সাহায্য করার কথা বলেন সিডেল স্বয়ং। সেইমতো ২০১৭ সালে নিজের ডিম্বাণু সংরুক্ষণ করে রাখেন কেসি। তারপর ২০২১ সালে সারোগেসির মাধ্যমে কেসির সন্তানকে নিজের গর্ভে ধারণ করেন তাঁর বান্ধবী সিডেল। নির্দিষ্ট সময়ে জন্মও হয় নবজাতকের।
আরও শুনুন: হিন্দুরা সুরক্ষিত নয়, দাবি জানিয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি ১৮০টি প্রবাসী হিন্দু সংগঠনের
তবে বর্তমানে কেসি সম্পূর্ণ ভাবে ক্যানসার মুক্ত। নিজের সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য এতদিনে সক্ষম হয়ে উঠেছেন তিনি। আর বন্ধুত্বের এই গল্পই এখন ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। নেটিজেনরা বলছেন, সবরকম বিপদে যিনি পাশে থাকেন, তিনিই তো প্রকৃত বন্ধু। এই মহিলা সেই কথাটিই যেন আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন।