আসছে দীপাবলি। প্রত্যাশিত ভাবেই পুজোর নানা সামগ্রী এই সময় কিনে থাকেন মানুষ। আর সেই সামগ্রী হিন্দুরা যেন কোনওভাবেই মুসলমান বিক্রেতাদের থেকে না কেনেন। সম্প্রতি এমনই ডাক দিলেন এক হিন্দু নেতা। কেন তাঁর এমন ভাবনা? এ বিষয়ে কী জবাব ওই নেতার, আসুন শুনে নিই।
এবার ‘হালাল-মুক্ত দীপাবলি’ উদযাপনের ডাক দিল একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। মুসলিম বিক্রেতাদের কাছ থেকে পূজাসামগ্রী কেনা হিন্দু শাস্ত্রে অনুমোদিত নয়, এমনটাই দাবি করেছেন শ্রীরামসেনা প্রধান প্রমোদ মুতালিক। দীপাবলির উৎসবে পুজোর জন্য ফুল-ফল থেকে বহু সামগ্রীরই প্রয়োজন হয়। কর্ণাটকে হিন্দু বিক্রেতাদের পাশাপাশি মুসলমান বিক্রেতারাও তা করে থাকেন। সাধারণ ভাবে মানুষ তাঁদের থেকে পুজোর সামগ্রী কিনেও থাকেন। কিন্তু এই হিন্দু নেতার বক্তব্য, মুসলমান বিক্রেতার থেকে হিন্দুদের পুজোর সামগ্রী কেনা উচিতই নয়। কেননা তা শাস্ত্রকে লঙ্ঘিত করে। তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানায় হিন্দু জনজাগৃতি সমিতিও। দুই সংগঠনের পক্ষ থেকেই জানানো হয়, হিন্দু ভক্তদের কাছে এটা শুধু তাঁদের অনুরোধই নয়, বরং আবেদন।
আরও শুনুন: মোদি ‘বহুরূপী’, অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত নন তিনি… জেডিইউ সভাপতির মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সোচ্চার বিজেপি
হালাল সার্টিফিকেশন সিস্টেমের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন প্রমোদ মুতালিক। তাঁর বক্তব্য, সরকারি তরফে এরকম কোনও সার্টিফিকেশন সিস্টেম আদৌ নেই। তবু জামাত-উলেমা-ই-হিন্দ হালাল ট্রাস্টের মতো সংস্থা এই সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু রেখেছে। ওষুধ থেকে শুরু করে নানা খাদ্যসামগ্রী এই ‘অবৈধ’ সার্টিফিকেশনের ভিত্তিতে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। একটি প্রখ্যাত খাদ্য প্রস্তুতকারক সংস্থার নাম করে তিনি বলেন, এই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে অন্তত শতাধিক খাবার তারা বাজারে বিক্রি করছে। এরই প্রতিবাদ জানান মুতালিক। সরকারের কাছে এই বেআইনি সার্টিফিকেশন বন্ধের দাবি যেমন তিনি জানিয়েছেন, তেমনই বিস্ফোরক দাবি তুলে বলেছিলেন, এই সার্টিফিকেশনের নেপথ্যে অর্থ এককাট্টা করে তা দেশবিরোধী কাজেও লাগানো হচ্ছে। আর তাই তাঁর দাবি হালাল সার্টিফিকেশনের ফাঁদে যেন কেউ না পা দেয়। দেওয়ালির উদযাপন যেন হয় হালাল-মুক্ত। একই সঙ্গে শাস্ত্র অমান্য করে মুসলমান বিক্রেতাদের থেকে যাতে হিন্দুরা পূজার সামগ্রী না কেনেন, এমনটাই আবেদন তাঁর।
আরও শুনুন: মন্দির মেরামতের জন্য ১১ লক্ষ টাকা অনুদান মুসলিমদের, সম্প্রীতির অভিনব নজির গড়ল গুজরাটের গ্রাম
দীপাবলি আলোর উৎসব। তবে তাঁর আগেই হিন্দু নেতার এই বক্তব্যে যথেষ্ট বিতর্কের অন্ধকারই নেমেছে।