নরেন্দ্র মোদি বহুরূপীর মতো নিজের পরিচয় বদলান। আসলে তিনি পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষই নন। এমনই বিস্ফোরক দাবি নীতীশ কুমারের দলের সভাপতির। গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর এই মন্তব্যে বিতর্ক উসকে উঠল রাজনৈতিক মহলে। ঠিক কী বলেছেন ওই নেতা? শুনে নেওয়া যাক।
বিজেপির পাখির চোখ বর্তমানে গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন। আর ভোটের মরশুমেই নীতীশ কুমারের দলের সভাপতির এক মন্তব্যে বিতর্ক উসকে উঠল রাজনৈতিক মহলে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-র সর্বভারতীয় সভাপতি লালন সিংহ, এই ইস্যুতে আপাতত সরগরম রাজনৈতিক মহল। ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে গেরুয়া শিবির।
আরও শুনুন: ধর্ম সংসদে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলার জের, ঘৃণাভাষণে দাঁড়ি টানতে পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের
কী ঘটেছে ঠিক?
গুজরাতের ঘাঞ্চি তেলি জনগোষ্ঠীর মোদী সরকারি খাতায় ওবিসি গোষ্ঠীভুক্ত, অর্থাৎ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ। কিন্তু সম্প্রতি পাটনায় জেডিইউ দপ্তরে দলীয় কর্মীসভায় দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা মুঙ্গেরের সাংসদ লালন সিংহ মন্তব্য করেন, মোদি আসলে একজন বহুরূপী। তিনি ১২টি রূপ দেখান। নিজেকে ‘পিছিয়ে পড়া সমাজের’ মানুষের হিসাবে তুলে ধরতে চান তিনি। জেডিইউ নেতার মতে, এই সবকিছুই আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য মোদির ভান। আসলে তিনি মোটেই পিছিয়ে পড়া মানুষদের প্রতিনিধি নন। প্রকৃত অনগ্রসরদের সামনে এলেই তাঁর স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে যায়, এই মর্মে মোদিকে উদ্দেশ্য করে তোপ দেগেছেন লালন সিংহ। তিনি আরও বলেন, ‘‘মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর জাতকে অনগ্রসর অর্থাৎ ওবিসি শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁরা আসলে ওবিসি নন।’’ এখানেই শেষ নয়, মোদিকে কটাক্ষ করে ওই নেতা ফের বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদি কোথাও, কোনও দিন চা বিক্রি করেননি। উনি শুধু ভান করেন। ভোটে জেতার জন্য উনি সব করতে পারেন।’’
আরও শুনুন: কোভিডের পর নয়া দুর্যোগের ভবিষ্যদ্বাণী স্বঘোষিত ‘ত্রিকালজ্ঞের’, গুজরাট সফরে গিয়ে সাক্ষাৎ করলেন মোদি
দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই নেতার এমন মন্তব্য ‘আপত্তিকর’, এই অভিযোগে নীতীশের দলের বিরুদ্ধে এবার সোচ্চার বিজেপি শিবির। ঘটনাচক্রে লালন বিহারের উচ্চবর্ণ হিসাবে পরিচিত ভূমিহার সম্প্রদায়ের নেতা। সুতরাং এই পরিচয়কে হাতিয়ার করে ওই নেতাকে ‘অনগ্রসর বিরোধী’ বলে তকমা দিতেও উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বস্তুত ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটেও মোদির রাজীব গান্ধীকে আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে রাজনীতির নিচু মানের কথা বলেছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রাজীব-কন্যা তথা কংগ্রেস নেত্রীর ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে মোদি সেসময় পাল্টা অভিযোগ তোলেন, প্রিয়াঙ্কা আসলে ‘নিচু জাতের মানুষের রাজনৈতিক উত্থানের’ বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। একে কার্যত উচ্চবর্ণের রাজনীতি বলে দাগিয়ে দিয়ে এই ইস্যুতে কংগ্রেসকেও একহাত নিয়েছিল বিজেপি। এবার লালন সিংহের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেও একই পথে হাঁটছে তারা।