ভূতের রাজা গান শুনে বর দিয়েছিলেন। আর এখানে রূপ দেখেই মিলতে পারে বর। তবে তিনটি নয়, একটিই। আক্ষরিক অর্থেই, বিয়ের বর পাওয়া যাবে সৌন্দর্যের পুরস্কার হিসেবে। হ্যাঁ, এমনই আশ্চর্য পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছে এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পাত্রপাত্রী চাই-এর বিজ্ঞাপনগুলিতে চোখ রাখলেই দেখা যায়, মেয়েদের ক্ষেত্রে গায়ের রং আর রূপ, আর ছেলেদের ক্ষেত্রে সাফল্যের দাম সেখানে ঠিক কতখানি চড়া। কার্যত সেই মনোভাবকে কাজে লাগিয়েই আয়োজন করা হয়েছিল এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার। যেখানে পুরস্কারটিও রীতিমতো অভিনব। ঘোষণা করা হয়েছিল, সুন্দরীশ্রেষ্ঠার কপালে জুটবে কানাডাপ্রবাসী পাত্র।
আরও শুনুন: ‘আপনি চাইলে বিকিনি পরুন, আমাদের মেয়েদের হিজাব খুলতে হবে কেন?’- হিজাব বিতর্কে মন্তব্য ওয়েইসির
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জিতলে দামি দামি পুরস্কার তো মেলেই। সঙ্গে থাকে গ্ল্যামার জগতের হাতছানি। এই যেমন ধরা যাক, বিগত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় যখন ভারতীয় সুন্দরী হরনাজ সান্ধুর মাথায় উঠেছিল ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরীর শিরোপা, তাঁর সোনা-হিরের মুকুটটিরই কেবল দাম ছিল ৩৭ কোটি টাকা। সঙ্গে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার, বিশ্বভ্রমণের টিকিট, অভিজাত হোটেলবাসের সুযোগ… কী ছিল না তাঁর পুরস্কারের তালিকায়! কিন্তু ভাতিন্ডার এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা সরাসরি আর্থিক পুরস্কারের পথে হাঁটেনি। পরিবর্তে এখানে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে একজন মানুষকেই। আসলে বলা যেতে পারে, ওই প্রবাসী পাত্রের জন্য পরোক্ষে এক স্বয়ংবর সভারই আয়োজন করে বসেছিলেন ওই প্রতিযোগিতার কর্তৃপক্ষ।
বিয়ের বাজারে এনআরআই পাত্রের কদর যে কতখানি, সে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে কেবল সৌন্দর্য নয়, কনের জন্য এখানে আরও একটি শর্ত রাখা হয়েছিল। ওই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপনে সাফ জানানো হয়, কেবল ‘জেনারেল কাস্ট’-এর তরুণীরাই এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। অর্থাৎ সামাজিকভাবে যাঁরা তথাকথিত নিচু জাত বা পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, তাঁদের এই প্রতিযোগিতায় প্রবেশাধিকার নেই। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, অধিকাংশ পাত্রপাত্রী চাই-এর বিজ্ঞাপনের মতো এখানেও আসলে জাতের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন বরপক্ষ।
আরও শুনুন: মন্দির মেরামতের জন্য ১১ লক্ষ টাকা অনুদান মুসলিমদের, সম্প্রীতির অভিনব নজির গড়ল গুজরাটের গ্রাম
চলতি মাসের ২৩ তারিখে ওই শহরেরই এক হোটেলে এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল আয়োজকদের তরফে। কিন্তু শেষমেশ তা ঘটার আর সুযোগ মিলল না। তার আগেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ওই প্রতিযোগিতার দুই আয়োজক, সুরিন্দর সিং এবং রামদয়াল সিং। মানহানি, নারীর সম্ভ্রমহানি, পুরস্কারের অছিলায় ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা, ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের এমন একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এমনকি এহেন প্রতিযোগিতার আড়ালে নারীপাচার কিংবা কোনও যৌন চক্রও সক্রিয় থাকতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন।