বাল্যবিবাহ অভিশাপ। কিন্তু আধুনিক ভারত থেকে কিছতেই যেন তা দূর হচ্ছে না। অন্তত সাম্প্রতিক সমীক্ষা থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। বাল্যবিবাহের নিরিখে সবথেকে খারাপ অবস্থা কোন রাজ্যের? বাংলার স্থানই বা কোথায়! আসুন শুনে নিই।
বয়স ১৮ ছোঁয়ার আগেই বিয়ে। কখনও আবার ২১ হওয়ার আগেই মালাবদল। এখনও যেন ভারতীয় মেয়েরা বাল্যবিবাহের এই শিকল থেকে মুক্ত নন। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যানে যা সামনে এল, তাতে বোঝা যাচ্ছে, বাল্যবিবাহের ভূত এখনও বহাল তবিয়তেই রয়েছে দেশের রাজ্যগুলিতে। আর সেই নিরিখে সবথেকে খারাপ বা করুণ অবস্থা ঝাড়খণ্ডের। খানিকটা চিন্তা বাংলার পরিসংখ্যান নিয়েও।
আরও শুনুন: স্কুলের মধ্যেই মাজার বানানোর নির্দেশ, আপত্তি সরস্বতী পুজোয়… মধ্যপ্রদেশে বরখাস্ত মুসলিম শিক্ষিকা
রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেন্সাস কমিশনারের এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে ২০২০ সালের ছবি। প্রায় ৮৪ লক্ষ মানুষের উপর চালানো সমীক্ষায় খতিয়ে দেখা হয়েছিল বিভিন্ন দিক। আর সেখানেই উঠে এসেছে বাল্যবিবাহের এই উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, আঠেরো ছোঁয়ার আগেই ঝাড়খণ্ডে অন্তত ৫.৮ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। গ্রাম ও নগরের ভিত্তিতে শতাংশের সামান্য হেরফের হলেও, পরিস্থিরি উন্নতি তেমন কিছু দেখা যায় না। বরং শহরের তুলনায় গ্রামে বাল্যবিবাহের হার প্রায় দ্বিগুন। ঝাড়খণ্ডের গ্রাম্য এলাকায় বাল্যবিবাহ ৭.৩ শতাংশ হলে, নগরে তা ৩ শতাংশের কাছাকাছি।
আরও শুনুন: চুম্বনে অ্যালার্জি! ডেটে গিয়ে প্রেমিকের আদরের জেরে প্রাণ নিয়েই টানাটানি যুবতীর
বাল্যবিবাহের এই বাড়বাড়ন্ত বেশ কিছুদিন ধরেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল। অনেকে মনে করেন, কোভিডকালে এই প্রবণতা আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানেও সেই ইঙ্গিত মিলছে। বাল্যবিবাহের নিরিখে খানিকটা চিন্তাজনক পশ্চিমবঙ্গের পরিসংখ্যানও। দেখা যাচ্ছে, বাংলায় ২১ ছোঁয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় অন্তত ৫৪.৯ শতাংশ মেয়ের। ঝাড়খণ্ডে এই হার ৫৪.৬ শতাংশ। যেখানে জাতীয় হার ২৯.৫ শতাংশ, সেখানে এই পরিসংখ্যান খানিকটা উদ্বেগ বাড়ায় বটে।
তবে পরিসংখ্যানের নিরিখে এই দুটি রাজ্যের কথা উঠে এলেও, আধুনিক ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও বহাল তবিয়তেই আছে বাল্যবিবাহ। আর এই তথ্য যে যথেষ্ট লজ্জাজনক, তা নিঃসন্দেহেই বলাই যায়।