বিজ্ঞানের হাতেই এবার অমরত্বের চাবিকাঠি। নতুন গবেষণায় কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে ইঁদুরের বয়স। পরবর্তী নিশানা কি মানুষ? আসুন শুনে নেওয়া যাক, কী বলছে গবেষণা।
কল্পবিজ্ঞানের গল্প নয়। বাস্তবেই ঘটেছে এমন অদ্ভুত কাণ্ড। বিজ্ঞানের হাত ধরেই এবার ঘুরতে পারে বয়সের চাকা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ইঁদুরের বয়স কমিয়ে ফেলতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। যার জেরে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানী মহলে। এভাবে কি কমানো সম্ভব হবে মানুষের বয়সও? কী বলছেন গবেষকরা?
আরও শুনুন: দেওয়ালে রং করলেই আলো জ্বলবে ঘরে, বিজ্ঞানীদের আশ্চর্য আবিষ্কার সৌর রং
আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও ইঁদুরের বয়স যে সত্যিই কমানো সম্ভব হয়েছে, তা প্রমাণিত। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের চিকিৎসকেরা এক বৃদ্ধপ্রায় ইঁদুরকে আবারও তার যৌবন ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। দীর্ঘদিনের গবেষণায় বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ডেভিড সিনক্লেয়ারের নেতৃত্বে গবেষক দল আবিষ্কার করেছেন এক অদ্ভুত পদ্ধতি। যার মাধ্যমে ইঁদুরের দেহের পুরনো হয়ে যাওয়া কোশগুলিকে পুনরায় তার পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এর আগেও এক দৃষ্টিহীন বৃদ্ধ ইঁদুরের চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এই বিজ্ঞানী। সেই পদ্ধতিতে এবার ইঁদুরের দেহের সমস্ত কোশগুলি পুনরুজ্জীবিত করেছেন তাঁরা। ২০০৭ সালে কৃত্রিম ভাবে ইঁদুরের বয়স বাড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন জাপানের এক বিজ্ঞানী। তারপর থেকেই কীভাবে বয়স কমানো সম্ভব সেই চেষ্টা করতে শুরু করেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সাফল্যের মুখ দেখতে পেলেন সিনক্লেয়ার সহ তাঁর গোটা দল। জানা গিয়েছে, দুটি ইঁদুরকে নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছিলেন তাঁরা। একটি ইঁদুরের উপর কোনোরূপ প্রক্রিয়া না করলেও বিশেষ পদ্ধতিতে আরেকটি ইঁদুরের দেহের জিনগত কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল। তারপর দুটি ইঁদুরকেই পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় একটি ইঁদুরের বয়স স্বাভাবিক নিয়মে বাড়ছে। কিন্তু যে ইঁদুরটির দেহে জিনগত পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল, অদ্ভুতভাবে তার বয়সের কোনও পরিবর্তন হয়নি।
আরও শুনুন: মন্দিরের ছাদ থেকে ঝুলছে বিশাল আকারের স্তম্ভ, কোথায় দেখা মেলে এই বিস্ময়ের?
যদিও এই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন অন্যান্য বিজ্ঞানীরা। বয়স কমে যাওয়ার বিষয়টি জীববিদ্যার ইতিহাসে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলেও তার নীতিগত দিকটি নিয়েও ভাবনার অবকাশ রয়েছে। তাই একইসঙ্গে মানুষের দেহে এমন পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব কি না সেই নিয়েও এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়, এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।