শোনা যায় এক ট্রাফিক সিগনালে সুজানকে প্রথম দেখেই প্রেমে পড়েছিলেন বলি-দুনিয়ার গ্রিক গড হৃতিক রোশন। ট্রাফিক জ্যাম যতই বিরক্তিকর হোক, তার দরুন এমন ভাল কিছুও ঘটে যেতে পারে কখনও কখনও। আর সে কথারই প্রমাণ পেয়েছেন বেঙ্গালুরুর এই ব্যক্তিও। এই যানজটের ঠেলাতেই তাঁর প্রেম, আর অবশেষে বিয়েটা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক সেই গল্প।
বিশ্বসাহিত্যের খ্যাতনামা লেখক ও হেনরি এক গল্পে লিখেছিলেন, এক যুবক তার ভালবাসার মেয়েটিকে কিছুতেই মনের কথা বলে উঠতে পারছিল না। এদিকে শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে মেয়েটি। যাওয়ার আগে তাকে থিয়েটারে পৌঁছে দিতে গিয়ে এক ট্রাফিক জ্যামের দরুন খানিক বাড়তি সময় মিলেছিল, শেষমেশ তাতেই প্রেমিকের সমস্যা মিটে যায়। আর সেই গল্পের মতো কাণ্ডই যেন ঘটেছে এখানে। একটি পরিচিত মেয়েকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পথে যানজটে আটকে গিয়েছিলেন দুজনে। সেখান থেকেই প্রেমের সূচনা, অবশেষে যা পরিণতি পেয়েছে বিয়েতে। তাই এই সুখী জীবনের জন্য বেঙ্গালুরু শহরের সেই ট্রাফিক জ্যামকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: হিন্দু রীতিতে পরালেন সিঁদুর, বেনারসের মন্দিরে বিয়ে সারলেন মুসলিম যুগল
এমনিতেই দৈনন্দিন যানজটের দৌলতে সারা দেশেই দুর্নাম কুড়িয়েছে বেঙ্গালুরু শহর। ‘গ্লোবাল লোকেশন’ বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা একটি বছরে বেঙ্গালুরুর এক জন সাধারণ যাত্রী রাস্তায় যানজটে সময় ব্যয় করেন প্রায় ১০ দিন ৩ ঘণ্টা। কয়েকদিন আগেই যানজটে আটকে পড়ে রোগীর অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে পৌঁছতে পারছিলেন না এক চিকিৎসক, শেষমেশ টানা ৪৫ মিনিট ধরে দৌড়ে তিনি সেখানে পৌঁছন, যে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল নেটদুনিয়ায়। তেমনই এক অনন্ত যানজটে আটকে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি এবং তাঁর বর্তমান স্ত্রী। অবশ্য সেই সময়ে দুজনে ছিলেন নেহাতই পরিচিত, প্রেমের লেশ মাত্রও ছিল না তাঁদের মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ওই ব্যক্তি সম্প্রতি ভাগ করে নিয়েছেন তাঁদের প্রেম শুরু হওয়ার গল্প। এর আগে তিনি জানিয়েছেন, সোনি ওয়ার্ল্ডের সিগন্যালের সামনে তাঁর মনের মানুষকে খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। আর এবার বিস্তারিতভাবেই সে গল্প জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তিনি লিখেছেন, ইজিপুরা উড়ালপুল তৈরির সময়ে তখন শহরজুড়ে তীব্র যানজট। এক দিন পরিচিত ওই মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু যানজট ছাড়ার নাম নেই দেখে শেষমেশ গাড়ি ঘুরিয়ে কাছেই এক জায়গায় ডিনার সারেন তাঁরা। আর সেইভাবেই প্রেমের শুরু, এমনটাই জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
যদিও যানজটের দৌলতেই তাঁদের যৌথ যাপনের সূত্রপাত, সে কথা জানিয়েও লেখার শেষে কিন্তু শহর কর্তৃপক্ষকে সামান্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ওই ব্যক্তি। তিনি লিখেছেন, তিন বছরের প্রেমের পর দু’বছরের বিবাহিত জীবনও কাটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। তবে আড়াই কিলোমিটারের ওই উড়ালপুল তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। তাহলে কি সেই যানজটে জমে রয়েছে এমন আরও গল্প? সে কথা অবশ্য জানা যায়নি আর।