যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে এক মন্দিরের ভিতরে রয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। তবে ভক্ত হিসেবে নয়, স্বয়ং ভগবান হিসেবেই এখানে অবস্থান তাঁর। এমনকি সকাল সন্ধে নিয়ম করে আদিত্যনাথের মূর্তিতে পুজোও করা হয় এখানে। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
উত্তরপ্রদেশের এই মন্দিরের আরাধ্য স্বয়ং যোগী আদিত্যনাথ। যথারীতি মুণ্ডিত মস্তক। পরনে গেরুয়া বসন। কিন্তু কাঁধে তূণীর এবং হাতে ধনুক। অর্থাৎ পুরুষোত্তম রামচন্দ্রের আদলেই গড়া হয়েছে এই মূর্তি। কোনও প্রচলিত দেবদেবীর মূর্তি নয়, রামচন্দ্র-রূপী খোদ যোগী আদিত্যনাথের মূর্তিরই দেখা মেলে উত্তরপ্রদেশের এই মন্দিরে। এমনকি সকাল সন্ধে নিয়ম করে পুজোও করা হয় সেই মূর্তিকে।
আরও শুনুন: রাম মন্দিরের মডেল থেকে কমনওয়েলথ জয়ীদের সই করা জার্সি, নিলামে উঠছে মোদির উপহারসংগ্রহ
এর আগে রামমন্দির উপলক্ষে বিজেপির প্রচারে নজর কেড়েছিল একটি ছবি। স্বয়ং রামচন্দ্রের বালক প্রতিরূপের হাত ধরে একটি মন্দিরের দিকে এগিয়ে চলেছেন এক প্রৌঢ়। মুখ দেখা না গেলেও বেশভূষা থেকে আন্দাজ করা গিয়েছিল, সেই প্রৌঢ় আর কেউ নন, তিনি খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেন প্রভু রামচন্দ্রকে তাঁর জন্মস্থান অযোধ্যায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন মোদি, ওই ছবিতে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে মনে করেছিলেন অনেকে। আর সেই অযোধ্যার মাত্র ১৫ কিমি দূরের গ্রাম পুরওয়া। সেখানকার এক মন্দিরেই যেন খুঁজে পাওয়া যায় আরেক ‘রাম’-কে। তবে এই মন্দিরের বৈভব কোনোভাবেই অযোধ্যার রামমন্দিরের ধারেকাছে পৌঁছায় না। নিতান্তই সাধারণ এক লাল রঙের মন্দির, যাকে বাইরে থেকে দেখলে বহির্বঙ্গের প্রচলিত ‘হনুমান মন্দির’ বলেই মনে হবে। কিন্তু দর্শনার্থীদের অবাক করবে মন্দিরের অন্দরে থাকা মূর্তিটি। এই মন্দিরে আলো-আঁধারি মাখা গর্ভগৃহের দেওয়াল জুড়ে বসানো রয়েছে এক ৬ ফুটের মূর্তি। হাতে ধনুক আর কাঁধের তূণীরে একগুচ্ছ তিরে রামচন্দ্রের আদল। কিন্তু মূর্তির মুখের দিকে তাকালেই লাগবে চমক। কারণ সে মুখ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্মদিনে ৫৬ পদ দিয়ে ‘থালি’, সঙ্গে ৮.৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা রেস্তরাঁর
এমনিতে গোটা যোগীরাজ্য জুড়েই আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনাকে অভিনব বলতেই হয়। আর এই ঘটনা সম্ভব হয়েছে যাঁর জন্য, তিনি পুরওয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রভাকর মৌর্য। গেরুয়া শিবিরের এই নেতার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠাতেই গড়ে উঠেছে যোগী আদিত্যনাথের মন্দির। ২০১৫ সাল থেকে তিনি ‘রামমন্দিরের নির্মাতা’-র মন্দির নির্মাণের উদ্দেশে চাঁদা তুলতে শুরু করেন। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। মন্দিরে শুধুমাত্র মূর্তি রেখেই ক্ষান্ত হননি প্রভাকর। নিজেই সকাল সন্ধে পুজো করেন মূর্তিটিকে। পুজোর শেষে প্রসাদ হিসেবে ফল মিষ্টিও বিলি করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর একমাত্র ইচ্ছা স্বয়ং আদিত্যনাথ নিজে এসে এই মন্দিরে পায়ের ধুলো দিয়ে যান। তাঁর কাছ থেকে আশীর্বাদ পেলেই এই প্রয়াসকে সার্থক বলে মনে করবেন ওই ব্যক্তি।