ডুবতে বসা যুবককে বাঁচাতে বড়সড় ঝুঁকি নিলেন মহিলা। নিজের দশ মাসের শিশুকে কোনও রকমে মাটিতে নামিয়ে ঝাঁপ দিলেন জলে। বাঁচিয়ে আনলেন তাঁকে। মহিলার সাহসীকতা দেখে মুগ্ধ দুনিয়া। আসুন, শুনে নিই তাঁর বীরত্বের কাহিনি।
অল্পের জন্য জলে ডুবতে ডুবতে রক্ষা পেলেন যুবক। তবে তার পুরো কৃতিত্বটাই যায় বছর তিরিশের এক মহিলার কাঁধে। তাঁর সাহসীকতার জন্যই কোনও মতে বেঁচে গিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা ২৫ বছরের রাজু আহিরওয়ার। কোলের ছেলেকে মাটিতে নামিয়ে যে বীরত্বের পরিচয় তিনি দিয়েছেন, তা শুনে অবাক নেটদুনিয়া।
আরও শুনুন: ৬০০ বছর আগেই হয়েছে মৃত্যু, তবু অবিকল জীবন্তের মতোই দেখতে এই গাছগুলিকে
বন্ধু জীতেন্দ্রকে নিয়ে ক্ষেতে কীটনাশক ছড়াতে গিয়েছিলেন ভোপালের কড়াইয়াকলা গ্রামের বাসিন্দা রাজু। ফেরার পথে প্রচণ্ড বৃষ্টির মুখে পড়েন তাঁরা। মারাত্মক বৃষ্টিতে ততক্ষণে উপচে গিয়েছে খাল। বন্ধ হয়ে গিয়েছে চলাচলের রাস্তাটুকুও। তবে ঝুঁকির পরোয়া না করেই বাইক নিয়ে খাল পেরোনোর চেষ্টা করেছিলেন ওই দুই যুবক। ওপার থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও কানে তোলেননি তারা। আর তাতেই হয় সর্বনাশ। আসলে ভারী বৃষ্টিতে জলের তল বুঝতে পারেননি তাঁরা। খালে পা দিতেই ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যান তাঁরা, এবং স্রোতের কারণে ডুবতেও শুরু করে দুই বন্ধু।
আরও শুনুন: পুরনো মোবাইল বিক্রির করছেন! ফোনের ডেটা সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে?
কোলে দশ মাসের ছেলেকে নিয়ে এ সমস্তটাই দেখেছিলেন রবিনা কাঞ্জর নামে ওই মহিলা। বারবার না-ও করেছিলেন তাঁদের। তবে তাঁদের ডুবতে দেখে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি রবিনা। দশ মাসের ছেলেকে কোনও মতে মাটিতে নামিয়ে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন জলে। কোনও মতে রাজুকে টেনেটুনে পাড়ে নিয়ে আসেন। তবে চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি জীতেন্দ্রকে। জলের তোড়ে ডুবে যায় সে। পরদিন সকালে খালের কাছ থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ।
জীতেন্দ্রর মতোই অবস্থা হতে পারত রাজুরও। যদি না এগিয়ে আসতেন রবিনা। নিজের কোলের ছেলের কথা পর্যন্ত না ভেবে যে ভাবে ওই যুবককে বাঁচিয়েছেন ওই তিনি, তা কার্যত প্রশংসনীয়। রবিনা জানান, রাজুর চিৎকার শুনে আর দ্বিতীয় বার ভাবিনি। সাঁতার জানি। তাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। এত কিছুর পরেও জীতেন্দ্রকে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ মিটছে না রবিনার। তবে যে সাহসীকতা সেদিন তিনি দেখিয়েছেন, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। পুলিশের তরফে অর্থপুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে রবিনার হাতে। গোটা উদ্ধারকাজে তাঁকে সাহায্য করার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে রবিনার ভাইকেও।