হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেই এবার একসঙ্গে গণেশ পুজোর আয়োজন করলেন কর্ণাটকে। দেশজোড়া অসহিষ্ণুতার আবহাওয়ার মাঝেই এক অভিনব সম্প্রীতির নজির গড়লেন তাঁরা। ধর্মের নামে হিংসার ঘটনা যখন বারেবারেই শিরোনামে আসছে, তখন এ যেন এক সপাট জবাব। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
নানা ধর্ম, নানা মত, নানা পরিধানও। তবুও মিলনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি এর কোনও কিছুই। তাই একসঙ্গে মিলেমিশেই গণেশ পুজোর আয়োজনে মাতলেন হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। আর এইভাবেই এক বেনজির সম্প্রীতির ছবি আঁকল কর্ণাটক। যে রাজ্যটি সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে বারেবারেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। কখনও হিজাব ইস্যুতে, কখনও লাউডস্পিকারে আজান চলা নিয়ে, কখনও হনুমান চালিশা পাঠ নিয়ে সে রাজ্যে উসকে উঠেছে বিতর্ক। এমনকি সেই ধর্মীয় অশান্তির জের গড়িয়েছে আদালত পর্যন্তও। সেখানেই এবার দেখা গেল সম্প্রীতির এমন অভিনব উদাহরণ।
আরও শুনুন: রদ হয়েও হইল না রদ! ঠান্ডা খাবার দেওয়ায় স্ত্রীকে তিন তালাক, যোগীরাজ্যে ধৃত ব্যক্তি
কর্ণাটকের মান্ডিয়া জেলার একটি আবাসনেই গণেশ পুজোর দিনে এমন ছবি দেখা গিয়েছে। সেখানে পূজামণ্ডপেও রাখা হয়েছিল একটি পোস্টার, যাতে গণেশের ছবির পাশেই রাখা হয়েছে দুই শিশুর আলিঙ্গনরত ছবি। যাদের বেশভূষা জানান দিচ্ছে তারা দুই ভিন্ন ধর্মের সন্তান। অধিবাসীদের মতে, দেশবাসীকে সম্প্রীতির বার্তা দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। তবে এই প্রথম নয়, বিগত ১৭ বছর ধরে নাকি এভাবেই মিলেমিশে গণেশ পুজোয় অংশ নেন তাঁরা। গণপতির কাছে প্রার্থনা জানান, প্রসাদ বিতরণও করেন একসঙ্গে। নিজেদের ধর্ম অনুযায়ী পোশাক পরেই গণেশ চতুর্থীর উৎসবে শামিল হন হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই। এই ঘটনার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে সে রাজ্যের প্রশাসনও।
আরও শুনুন: বেকারত্বের জেরে বাড়ছে কমবয়সিদের আত্মহত্যার ঘটনা, তালিকার শীর্ষে কোন শহর?
গণেশ চতুর্থীর প্রাক্কালেই এই পুজো নিয়ে নতুন করে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল কর্ণাটকে। ইদগাহ ময়দানে গণেশ পুজো করার ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এবং ওই ময়দানের ওয়াকফ বোর্ড। সুপ্রিম কোর্ট পুজো করার দাবি নাকচ করলেও এই দাবির পক্ষেই রায় দেয় কর্ণাটকের উচ্চ আদালত। এদিকে এই বিতর্কের আবহেই একেবারে উলটো ছবি তুলে ধরল কর্ণাটকের এই জেলা। যা বুঝিয়ে দিল, বিচ্ছিন্নতা নয়, বেঁধে বেঁধে থাকাই আসলে ধর্মের মূল কথা।