ঋতুকালীন প্রয়োজনে লাগে যেসব জিনিস, সেই সবকিছুই এবার পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সম্প্রতি এমনটাই ঘোষণা করল স্কটল্যান্ড সরকার। গোটা পৃথিবীর মধ্যে প্রথমবার এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এই দেশেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
স্যানিটারি প্যাডের উপর বাড়তি কর চাপানো নিয়ে একসময় শোরগোল পড়েছিল দেশে। যে জিনিসটি কোনোভাবেই শৌখিন দ্রব্যের আওতায় পড়ে না, বরং তা একান্তভাবেই প্রয়োজনীয়, তার উপরে বাড়তি কর চাপানোর প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু এই ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত নিদর্শন সম্প্রতি দেখা গেল পৃথিবীর আরেক প্রান্তের অন্য একটি দেশে। স্যানিটারি প্যাড বা মেনস্ট্রুয়াল কাপের মতো যেসব জিনিস মহিলাদের ঋতুকালীন প্রয়োজনে লাগে, সেই সবকিছুই এখন থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে, সম্প্রতি এমনটাই ঘোষণা করল স্কটল্যান্ডের সরকার। দেশের মহিলারা যাতে বিনামূল্যে ঋতুস্রাবের সময়ে ব্যবহার করার সামগ্রী পান, তারই বন্দোবস্ত করেছে সে দেশ।
আরও শুনুন: অন্য মহিলাদের সঙ্গে স্ত্রীর তুলনা টেনে বিদ্রুপ অপরাধের শামিল, সাফ জানাল আদালত
মুখের কথায় নয়, রীতিমতো আইন পাশ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমি দুনিয়ার দেশটি। স্কটল্যান্ডের সংসদে এই স্যানিটারি দ্রব্য সংক্রান্ত বিলটির প্রস্তাব করেছিলেন স্কটিশ সাংসদ মনিকা লেনন। ‘পিরিয়ড পভার্টি’-র বিরুদ্ধে জোর সওয়াল করেছিলেন তিনি। যাঁদের স্যানিটারি দ্রব্যের প্রয়োজন কিন্তু তাঁরা তা কিনতে পারেন না, সেই আর্থিক অবস্থাকেই এই শব্দবন্ধ দিয়ে চিহ্নিত করেছিলেন তিনি। ২০২০ সালে সর্বসম্মত ভাবেই পাশ হয়ে যায় এই আইনটি। এই আইন অনুসারে সে দেশের সব ওষুধের দোকান ও যুবকেন্দ্র কমিউনিটি সেন্টারে বিনামূল্যে মিলবে স্যানিটারি পণ্য। দু’বছর আগে এক সরকারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিনামূল্যে স্যানিটারি দ্রব্য সরবরাহ শুরু করেছিল স্কটল্যান্ড। সে কাজও সারা পৃথিবীর নিরিখে নজির গড়েছিল। আর এবার এই সুবিধার আওতায় আনা হল দেশের সব মহিলাকেই। দেশের সামাজিক বিচারসচিব সোনা রবিসন-এর কথায়, ‘‘আর্থিক অভাব থাকলেও এখন আর কোনও মহিলার স্যানিটারি দ্রব্য ব্যবহারে বাধা রইল না। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে পেরে আমরা গর্বিত।’’
আরও শুনুন: বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের মুক্তিতে চলল মিষ্টি বিতরণ, কী বলছেন বিলকিসের স্বামী?
বস্তুত, মহিলাদের মৌলিক অধিকারের পক্ষেই কথা বলে এই আইন। ঋতুচক্রের মতো একটি শারীরবৃত্তীয় বিষয়কে দেশে দেশে কালে কালে বিভিন্নভাবে নিচু চোখে দেখা হয়েছে, আর তার ফল ভুগতে হয়েছে মহিলাদের। সেই বাধার প্রাচীর ভাঙতে বড় ভূমিকা নেবে স্কটল্যান্ডের এই নয়া আইন, এমনটাই আশা সকলের।