বেড়াতে যেতে কার না ভাল লাগে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, স্থাপত্য কিংবা সংস্কৃতির কথা জানতে কার না ইচ্ছা হয়! এই ব্যক্তিরও রয়েছে ভ্রমণের শখ। তবে পাহাড়, সমুদ্র কিংবা জঙ্গল নয়। দেশেবিদেশের বিভিন্ন নামীদামা মানুষের সমাধিস্থান নিজের চোখে চাক্ষুষ করাই একমাত্র শখ তাঁর। সেই শখ মেটাতে ইতিমধ্যেই খরচ করেছেন প্রায় কয়েক কোটি টাকা। কম বিপদের মুখেও পড়তে হয়নি তাঁকে এ জন্য। তবে সেসব কিছুই দমাতে পারেনি তাঁর সেউ উদ্ভট শখ। আসুন, শুনে নেই সেই গল্প।
শখের বশে মানুষ কত কিছুই তো করে! কেউ দুর্লভ জিনিসপত্র জমাতে ভালবাসেন, তো কেউ দেশি-বিদেশি মুদ্রা। কারওর বা ডাকটিকিট জমানোর শখ। কেউ আবার ভালবাসেন বেড়াতে যেতে। সেসবের পিছনে টাকাও খরচ করেন বিস্তর। নিজের শখপূরণের ব্যপারে এই ব্যক্তিও ব্যতিক্রম নন। সুযোগ-সময় পেলেই তিনি বেড়িয়ে পড়েন নানা জায়গায়। না, নিপাট বেড়ানো নয়। বরং তাঁর আসল আগ্রহ সমাধিস্থল নিয়ে। বিভিন্ন জ্ঞানীগুণী ব্যক্তির সমাধিক্ষেত্র ঘুরে বেড়ানোই যে তাঁর নেশা। শুধু দেখাই নয়, সেসব জায়গার ছবি ক্যামেরাবন্দি করতেও ভালবাসেন তিনি।
আরও শুনুন: সীমানা পেরিয়ে এল শুভেচ্ছা, দক্ষ হাতে ভারতের জাতীয় সংগীতের সুর বাজালেন পাকিস্তানি শিল্পী
ব্রিটেনের বাসিন্দা ৩৯ বছরের মার্ক ডেবস। ইতিমধ্যেই ঘুরে ফেলেছেন অসংখ্য দেশ। সাতশোরও বেশি সমাধিস্থল ঘুরে দেখা হয়ে গিয়েছে তাঁর ইতিমধ্যেই। যার মধ্যে রয়েছে অন্তত ২০০ জন বিখ্যাত মানুষের সমাধি। ওয়াশিংটনে গিয়ে দেখেছেন বিখ্যাত ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন ব্রুস লি-র সমাধি। চিনে গিয়ে দেখে এসেছেন মাও-জে-দং-এর সমাধিও। শুধু কি তাই, ব্রিটেনের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীদের সমাধিও দেখে এসেছেন নিজের চোখে। তালিকা এখানেই শেষ নয়। তাঁর দেখা সমাধিস্থলগুলির মধ্যে রয়েছেন বিখ্যাত কবি রবার্ট বার্নসের সমাধি থেকে শুরু করে বিখ্যাত রেসিং গাড়ি চালক জিম ক্লার্কের সমাধিও। আর এসবের পিছনে নয় নয় করে হলেও দেড় কোটি টাকা তো খরচ করেই ফেলেছেন মার্ক।
আরও শুনুন: আকাশ থেকে ঝরেছিল ‘রক্তবৃষ্টি’, কারণ নিয়ে ধন্দে ছিলেন বিজ্ঞানীরাও
ছোট থেকেই ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিষয়ে জানতে ভালবাসতেন তিনি। কিন্তু পুথিগত বিদ্যায় কোনওদিনই আগ্রহ ছিল না মার্কের। বরং ইতিহাসকে দেখতে চাইতেন হাতে-কলমে। সেই থেকে শুরু দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো। না, সেসব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কখনওই টানেনি তাঁকে। বরং টানত সমাধিক্ষেত্রের ইতিহাস। সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে, ছবি তুলে তবেই শান্তি পান মার্ক। সময় পেলেই তাই ক্যামেরা কাঁধে বেড়িয়ে পড়েন তিনি। একবার তো ছবি তুলতে গিয়ে বেশ বিপদেও পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। একবার এক বন্ধ সমাধিক্ষেত্রে গিয়ে আটকা পড়ে গিয়েছিলেন মার্ক। জখম অবস্থাতেই বেশ কয়েক ঘণ্টা পড়ে থাকতে হয়েছিল সেই কবরস্থানে। সে যাত্রায় অবশ্য প্রাণে বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন শেষমেশ। তবে এসব দুর্ঘটনা তাঁর শখে দাঁড়ি ফেলতে পারেনি। বরং নয়া উদ্যমে ফের নতুন দেশে বেড়িয়ে পড়েছেন তিনি। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, চিন ঘোরার পর এবার মার্ক যেতে চান রাশিয়ায়। সেখানে গিয়ে দেখতে চান স্তালিনের সমাধি। আপাতত তার জন্যই প্রস্তুতি সারছেন মার্ক।