গাড়ি তখন ছুটছে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে। আর সেই চলন্ত গাড়ির মেঝেতেই সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হলেন এক মহিলা। কোথায় ঘটেছে এই ঘটনা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন ব্যক্তি। তবে শেষরক্ষা হল না। চলন্ত গাড়ির ভিতরেই সন্তান প্রসব করতে বাধ্য হলেন মহিলা। সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে ইংল্যান্ডের লাঙ্কাশায়ারে।
আরও শুনুন: আশ্চর্য মনের জোর! পক্ষাঘাতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হুইলচেয়ারে চড়েই শৃঙ্গজয় ব্যক্তির
প্রসবের সময় ঘনিয়ে এসেছে। তবে তেমন কোনও শারীরিক অস্বস্তি ছিল না নাটালি হুইটনের। হাতে সময় নিয়েই বেরিয়েছিলেন স্বামী লি রেনল্ডসের সঙ্গে হাসপাতালের উদ্দেশে। ভেবেছিলেন ভালোয় ভালোয় পৌঁছে যাবেন হাসপাতালে। কিন্তু পথেই ঘটে বিপত্তি। মাঝরাস্তায় হঠাৎ করেই প্রসববেদনা ওঠে নাটালির। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে গাড়ির মেঝেতেই বসে পড়েন তিনি।
এদিকে লি-এর ফোর্ড ফিয়েস্তা গাড়িটি তখন এম-৬৫ মোটরওয়ের ঠিক মাঝামাঝি। গাড়ি যে থামাবেন সেই উপায় নেই। এক মুহূর্ত না ভেবে গাড়ি ছোটাতে থাকেন লি। ঘণ্টায় প্রায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে থাকে গাড়ি। তখন একটাই চিন্তা, কত দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছনো যায়। তবে তার আগেই সন্তান প্রসব করে ফেললেন নাটালি। গাড়ির মেঝেতেই জন্মাল তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান।
আরও শুনুন: রাখে হরি, মারে কে! সমুদ্রে পড়ে গিয়ে হাঙরের মুখে, তবু সাঁতরে প্রাণ বাঁচল যুবকের
প্রথমবার জলের ভিতরে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন নাটালি। প্রসব-প্রক্রিয়ায় সেটা বেশ সাহায্য করেছিল তাঁকে। তবে এবার যেন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবটা হয়ে গেল। প্রাথমিক ভাবে বেশ ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন নাটালি। শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে তো সদ্যজাতের? গাড়ির মেঝেতে ছিটকে গিয়ে কোনও রকম চোট পায়নি তো সে! কোনওমতে বাচ্চাটিকে বুকে নিয়ে তা বোঝার চেষ্টা করছিলেন নাটালি।
এরই মধ্যে অবশ্য হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছে গাড়ি। পরীক্ষানিরিক্ষার পরে চিকিৎসকেরা জানান, সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে শিশুটি। মায়ের শরীরেও কোনও রকম জটিলতা নেই। ৬ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পরে নাটালিকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
১১০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে থাকা গাড়ির ভিতরে এমন প্রসবের ঘটনা বোধহয় বেশ বিরল। আর সেই গল্পই সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। সেখানে নাটালির সাহসের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। এমন উদ্বেগের পরিস্থিতিতেও যেভাবে গাড়ি চালিয়েছেন লি, তা-ও কম সাহসীকতার নয়, বলছেন নেটনাগরিকেরা।