মহিলা রক্ষীকে নিয়মিত ধর্ষণ করত জেলে বন্দি কুখ্যাত অপরাধীরা। কার্যত যৌনদাসী হিসেবে তাঁকে ব্যবহার করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন ওই বিশেষ জেলের এক মহিলা রক্ষী। যে অভিযোগের জেরে সরগরম সংশ্লিষ্ট মহল। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? শুনে নেওয়া যাক।
বন্দিদের হাতে একাধিকবার ধর্ষিতা হয়েছেন মহিলা। তাও যে কেউ নন তিনি। পদের বিচারে তিনি ওই কারাগারের রক্ষী। রীতিমতো সরকারের প্রতিনিধি বলা যায় তাঁকে। অথচ সেসব কিছু ছাপিয়ে সকলের কাছে যেন বড় হয়ে উঠেছে তাঁর নারী পরিচয়টাই। যে কারণে তাঁকে ধর্ষণ করতে ভয় পায়নি জেলবন্দি অপরাধীরা। এমনকি কারা কর্তৃপক্ষেরও সায় ছিল এই আচরণে, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন ওই মহিলা রক্ষী। তিনি বলেছেন, একাধিকবার তাঁকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে ওই ভয়ংকর পরিণতির সামনে। কার্যত যৌনদাসী হিসেবে তাঁকে ব্যবহার করেছে জেল কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: হারিয়েছেন স্বামীকে, অকালমৃত্যু দুই সন্তানের… শোকের ঝড় পেরিয়ে রাইসিনা হিলসে দ্রৌপদী মুর্মু
কোথায় ঘটেছে এমন ভয়াবহ ঘটনা? সম্প্রতি এই অভিযোগ এনেছেন উত্তর ইজরায়েলের গিলবোয়া জেলের এক মহিলা রক্ষী। ওই জেলে বন্দিদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন মহিলা রক্ষীরা, এই মর্মে এর আগেও ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে একাধিক খবর প্রকাশ পেয়েছিল। বিশেষ করে গত বছর ছয় প্যালেস্তাইন বন্দি জেল ভেঙে পালানোর পর তদন্তের সূত্রে সামনে এসেছিল এজাতীয় তথ্য। ওই জেলের পুরুষ রক্ষীরা মহিলা সহকর্মীদের ইচ্ছাকৃত ভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দেন, শোনা গিয়েছিল এমন কথাও। তবে এর আগে রক্ষীদের কেউ এমন স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেননি, যা করেছেন এই মহিলা। অনলাইনে সরাসরি নিজের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে ওই প্রাক্তন রক্ষী জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ জেনেবুঝে বারবার তাঁকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। বারবার ছেড়ে দিয়েছেন বন্দিদের হাতে। তাদের ব্যক্তিগত যৌনদাসী করা হয়েছে তাঁকে, এমনই ভয়ংকর অভিযোগ মহিলার।
আরও শুনুন: কেউ শিকার গার্হস্থ্য হিংসার তো কেউ পাচারের, নারী নির্যাতন রুখতে একজোট এই ‘গুলাব গ্যাং’
একদিকে অপরাধী, আরেকদিকে তার শাসক। সামাজিক পদমর্যাদায় একের স্থান যে অন্যের নিচে, তা বলাই যায়। কিন্তু একদিকে নারী আর একদিকে পুরুষ থাকলে তখন বোধহয় আর সবকিছু ছাপিয়ে সেই লিঙ্গপরিচয়টাই প্রধান হয়ে ওঠে। অভ্যস্ত পুরুষতান্ত্রিকতা কোনোরকম যোগ্যতার বিচার ছাড়াই যে কোনও মেয়েকে নিচু চোখেই দেখতে বলে। আর এই কারাগারের চৌহদ্দিতে সেরকমটাই ঘটেছে যেন। যদিও এই অভিযোগের যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার ল্যাপিড। তাঁর মতে, কোনও সেনা তাঁর কর্তব্য পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা ধর্ষিতা হচ্ছেন, এমনটা সহ্য করার প্রশ্নই নেই।
কিন্তু পুরুষ হোন বা নারী, সেই লিঙ্গপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে একজন মানুষকে তাঁর পেশাগত পরিচয়ে দেখতে পারাটাই আসল কথা। না হলে এ জাতীয় অপরাধ যে আদৌ কমবে না, তাতে সন্দেহ নেই।