কারও বাড়িতে গচ্ছিত থাকা কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাচ্ছে এক মুহূর্তে। কেউ বা আবার এক মুহূর্তেই মালিক হয়ে যাচ্ছেন বিপুল পরিমাণ অর্থের। আসলে ভাগ্যদেবী যে কখন কার প্রতি সদয় হবেন সে কথা কে বলতে পারে! সেই ভাগ্যের খেলাতেই সম্প্রতি জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছে এই মহিলার। কীভাবে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ভাগ্যবিধাতার কৃপায় কখনও রাজা হয়ে যান ফকির। তেমনই কখনও আবার রাজার সিংহাসনে উঠে বসেন সর্বস্বান্ত ভিখারিও। আর এই দ্বিতীয় ঘটনাটাই যেন ঘটল মধ্যপ্রদেশের হতদরিদ্র পরিবারের এক সাধারণ মহিলার সঙ্গে। ভাগ্যের খেলায় মুহূর্তের মধ্যে বদলে গেল তাঁর এতদিনের চেনা পরিচিত জীবনটাই। কীভাবে? তাহলে খুলেই বলা যাক।
মধ্যপ্রদেশের পুরুষোত্তমপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা ছয় সন্তানের মা। নেহাতই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার তাঁদের। প্রতিদিনের রুটিরুজি জোগাড় করতেই যেখানে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে যে ভাগ্যের চাকাটা আদৌ কোনও দিন ঘুরে যেতে পারে, এমনটা মনে হয় স্বপ্নেও ভাবেননি গেন্দা বাই নামের ওই মহিলা। রোজকার মতো সেদিনও তিনি জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়েছিলেন। উনুন ধরানোর জন্য ওই জ্বালানির উপরেই ভরসা করতে হয় তাঁদের। কিন্তু সেই নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাসের সূত্র ধরেই সেদিন জীবনটা বদলে গেল এই পরিবারের। মধ্যপ্রদেশের পান্নার জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়ে হঠাৎই কোনও কিছুতে হোঁচট খেয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই চকচকে জিনিসটি হয়তো কোনও মূল্যবান পাথর হতেও পারে, এ কথা মনে করে সেটি তুলে এনেছিলেন তিনি। কিন্তু তা যে সাধারণ কোনও পাথর নয়, আসলে তা একটি বহুমূল্য হিরে, সে কথা তখন কে-ই বা জানত! কিন্তু আশ্চর্য হতে হয় এ কথা জেনে, অভাবের সংসারেও থাবা বসাতে পারেনি লোভ। বরং বিরল সততার পরিচয় দিয়েছেন ওই দরিদ্র মহিলা। তাঁর কুড়িয়ে পাওয়া পাথরটি যে হিরে, এ কথা জানতে পারা মাত্রই সরকারি দফতরে গিয়ে তা জমা দিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: রজঃস্বলা হয়ে বৃক্ষরোপণে লাগবে আগুন, ছাত্রীদের গাছ লাগাতে বাধা শিক্ষকের
এমনিতেই মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলা হিরের খনির জন্য বিখ্যাত। তাই জঙ্গলে হিরে পাওয়া নিয়ে অবাক হননি আধিকারিকেরা। তবে ওই মহিলা যে হিরেটি খুঁজে পেয়েছেন, সেটি ‘আনকাট’ অর্থাৎ পালিশ করা নয়। পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, হিরেটির ওজন মোটামুটি ৪.৩৯ ক্যারাট। পান্নার ডায়মন্ড ইনস্পেক্টর অনুপম সিংহ জানিয়েছেন, নিলামে ওই হিরের দাম কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা উঠতে পারে। শীঘ্রই হিরেটি নিলামে তোলা হবে, এবং তা থেকে পাওয়া টাকা সরকারি কর বাদ দিয়ে ওই মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকেরা। সেই টাকা পেলে বসতবাড়িটি মেরামত করার পাশাপাশি দুই বড় মেয়ের বিয়ের কথা ভাববেন, এমনটাই পরিকল্পনা ওই মহিলার।