জোড়া শাস্তির কোপে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অপসারিত মন্ত্রিত্ব থেকে, ঘোষণা নবান্নের। তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত সাসপেন্ড দল থেকেও। ফের অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে হানা ইডি-র। SSC দুর্নীতিতে পার্থর গ্রেপ্তারির পরেই আন্দোলনকারীদের ফোন অভিষেকের। নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগেও দুর্নীতি। নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের নিয়ম না মানার অভিযোগ। হাই কোর্টের দ্বারস্থ চাকরিপ্রার্থীরা।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 27 জুলাই 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকেও উদ্ধার বিপুল অঙ্কের টাকা
আরও শুনুন: 26 জুলাই 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- TET দুর্নীতিতেও নাম পার্থর, ইডি-র সিজার লিস্ট ঘিরে জল্পনা
বিস্তারিত খবর:
1. এসএসসি দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়ার ছ-দিন পর শাস্তির খাঁড়া নেমে এল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর। মন্ত্রীত্ব থেকে তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলের সব পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দল থেকে সাসপেন্ড করা হল তাঁকে। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, মন্ত্রীত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে পার্থকে। পার্থর অধীনে যে মন্ত্রকগুলি ছিল, সেগুলির দায়িত্ব সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে এখন এল শিল্প-বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিষদীয় মন্ত্রকের দায়ভারও। এদিনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের দল কঠোর। আমরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। আপাতত ওঁর দপ্তরগুলো আমার কাছে এসেছে। পরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” একই সঙ্গে দল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে নিয়েও রাজ্য-রাজনীতিতে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব হয় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে অভিষেক জানিয়ে দেন, মহাসচিব-সহ সর্বমোট পাঁচটি দলীয় পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তাঁর দলের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক থাকল না পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। যতদিন তদন্ত চলবে ততদিন পর্যন্ত দল সাসপেন্ড করা হয়েছে পার্থকে। তাঁর বদলে আপাতত দলের মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। পরবর্তীতে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে পার্থ যদি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন, তবে দলের রাস্তা তাঁর জন্য খোলা রইল বলিয়েই জানিয়েছেন অভিষেক।
2. ইডি-র অভিযানে দু-দফায় প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে রাজ্য থেকে। এত কালো টাকার উৎস ঠিক কী? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি নোটবন্দির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেছিলেন, নোটবাতিলের ৫০ দিন পর দেশে আর কালো টাকা থাকবে না। নোটবন্দির পরও তাহলে এত কালো টাকা কোথা থেকে এল, সে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। যদিও তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি কাউকে কোনওভাবেই আড়াল করছেন না। তিনি বলেন, তৃণমূল দলটি তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ভিত্তিতে। মানুষের সঙ্গে অন্যায় হয়, এমন কোনও কাজ দল সমর্থন করবে না জানিয়েই, ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে সরব হন অভিষেক। এ রাজ্য এবং অন্য রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিজেপি নেতাদের ক্ষেত্রে একরকম ব্যবস্থা, অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে আর একরকম ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়। অন্যায় করলে তার সাজা হোক, কিন্তু মানুষ যাতে বিচার পান সেদিকটি অন্তত সুনিশ্চিত করুক তদন্তকারী সংস্থাগুলি, দাবি অভিষেকের। এদিন তিনি তুলে আনেন সারদা প্রসঙ্গও। কেন দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, প্রশ্ন অভিষেকের। পাশাপাশি দল হিসাবে তৃণমূলের বিশেষত্ব জানিয়ে দেন সাংসদ। দলের তরফে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারির ৬ দিনের মাথায় সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু নেতার নামে অভিযোগ উঠেছে, তাই এক্ষেত্রে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ নেতাকে নয়, সাধারণ মানুষকেই দেওয়া হল বলে মন্তব্য অভিষেকের।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।