২০২৪-এ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বিজেপি। একুশের মঞ্চ থেকে হুঙ্কার মমতার। বিজেপির কারাগার ভাঙার ডাক দিয়ে লোকসভার সুর বেঁধে দিলেন নেত্রী। জনমুখী প্রকল্পে থাকবে বাংলার নামই। একুশের মঞ্চে সাফ জানালেন অভিষেক। চব্বিশে বাংলার বাইরেও জিতবে তৃণমূল। সমাবেশে প্রত্যয়ী ঘোষণা সাংসদের। দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু-ই। প্রতিদ্বন্দ্বী যশোবন্ত সিনহাকে বিপুল ভোটে হারালেন এনডিএ মনোনীত প্রার্থী। শপথগ্রহণ আগামী ২৫ জুলাই।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 19 জুলাই 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- এখনই গ্রেপ্তার নয়, সুপ্রিম রায়ে স্বস্তি নূপুর শর্মার
বিস্তারিত খবর:
1. করোনাতঙ্ক কাটিয়ে প্রায় দু-বছর পর ধর্মতলায় একুশের সমাবেশ তৃণমূলের। প্রত্যাশামতোই নামল জনতার ঢল। আর মহা সমাবেশের মঞ্চ থেকেই লোকসভার সুর বেঁধে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বক্তৃতায় আগাগোড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়া তারে বেঁধেছিলেন নেত্রী। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, জিএসটি-র কোপ থেকে শুরু করে অগ্নিপথ প্রকল্প – একের পর এক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপিকে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বিজেপি। তিনি বলেন, ”২০২৪-এর নির্বাচন কাউকে বেছে দেওয়ার নয়, ২০২৪ নির্বাচন বিজেপিকে উৎখাত করার। ২০২৪-এর নির্বাচন সিলেকশনের নয়, রিজেকশনের নির্বাচন।” তাঁর দাবি, বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেই বাকিরা একত্রিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী বুঝিয়ে দিলেন, ২৪-এ দিল্লিতে বিকল্প সরকার গড়বে সম্মিলিত বিরোধীরাই। আর তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে তৃণমূল। সিবিআই, ইডির অপব্যবহার নিয়ে সরব মমতা জানান, ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় সংস্থা এলে কর্মীরা যেন ভয় না পান। এদিন কর্মী-সমর্থকদের তাই বিজেপির কারাগার ভাঙার ডাক দিলেন নেত্রী। জোর দিয়েছেন জনসংযোগেও। এদিনের মঞ্চ থেকেই যে লোকসভার প্রস্তুতি শুরু করে দেবেন মমতা, এমনটা অনুমান করেছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেই পথে হেঁটেই কার্যত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের রুট ম্যাপ এদিনের মঞ্চ থেকেই তৈরি করে দিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
2. একুশের মঞ্চ থেকে মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আগে সাংসদ সৌগত রায়ের কথায় এসেছিল ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি লাগু করার প্রসঙ্গ। সেই জিএসটি নিয়ে এদিন কার্যত বিজেপিকে তুলোধনা করেন নেত্রী। এক কর্মীর আনা মুড়ি মঞ্চে তুলে ধরে তিনি বলেন, মুড়িতেও যদি জিএসটি লাগু হয়, তাহলে মানুষ খাবে কী? এরপরই বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন – ‘আমাদের মুড়ি ফিরিয়ে দাও, নইলে বিজেপি বিদায় নাও।’ মঞ্চে প্রতীকী গ্যাস সিলিন্ডার এনে গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্রকে তোপ দাগেন মমতা। মূল্যবৃদ্ধি, লাগাতার টাকার দাম পড়ে যাওয়া – অর্থাৎ কেন্দ্রের দিশাহীন সিদ্ধান্তের জেরে দেশের অর্থনীতি যে বেহাল, এদিন তা একেবারে চোখে আঙুল দিয়েই সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে দেন মমতা। ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ টাকা না-পেলে দিল্লি ঘেরাওয়ের দাকও দেন তিনি। এদিন বেকারত্ব ইস্যুতেও সরব মমতা। রেল থেকে কয়েক হাজার চাকরি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মুখ খোলেন, অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়েও। নেত্রীর সাফ কথা সেনার কোনও বিকল্প হয় না। মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব ইস্যুতে বিজেপিকে নিশানা করার পাশাপাশি রাজ্যের প্রেক্ষিতে বামেদেরও একহাত নিয়েছেন মমতা। বাম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম করেই রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে তোপ দাগেন তিনি। জানান, মামলার কারণেই রাজ্যে ১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ আটকে রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, বাম আমলে কত চাকরি দেওয়া হয়েছিল? লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাম আমলে চাকরি দেওয়া হত বলেও দাবি করেন তিনি। এমনকী জন্ম শংসাপত্র নিয়ে দুর্নীতির প্রসঙ্গও একুশের মঞ্চে টেনে আনেন মমতা। যদিও বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই সমস্ত অভিযোগের জবাবে জানিয়েছেন, ‘মমতার সমস্ত দাবি মিথ্যা’। তবে বেকারত্ব থেকে মূল্যবৃদ্ধি- আগামীতেও বাম-বিজেপির বিরুদ্ধে যে একযোগেই আক্রমণ শানাবে তৃণমূল, এদিন নেত্রীর কথাতেই তা কার্যত স্পষ্ট।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।