পোকামাকড়ে অনেকেরই ভয়। কেউ আরশোলা দেখে চিৎকার করে পাড়া মাথায় করেন, তো কেউ আবার টিকটিকি দেখে পালাবার পথ খুঁজে পান না। আর মাকড়সা হলে তো কথাই নেই। তাই বলে মাকড়সা দেখে পুলিশ ডাকার নজির বোধহয় এই প্রথম। কোথায় ঘটেছে এমন ঘটনা?আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বাড়িতে চোর-ডাকাত পড়লে পুলিশ ডাকে লোকে। তাই বলে মাকড়সা তাড়াতে পুলিশ ডাকা! ব্যাপারটা অবাক করার মতো হলেও এমনটাই ঘটেছে সম্প্রতি। বাড়িতে পোকামাকড়ের উপদ্রব তো প্রায়শই আমাদের অতিষ্ঠ করে তোলে। নানা রকম কীটনাশক, ঘরোয়া টোটকা- সব কিছুই বিফলে যায় কখনও কখনও। আর এ বোধহয় ‘ঘর ঘর কি কাহানি’। তাই বলে পোকামাকড়ের উপদ্রবে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার ঘটনা শুনেছেন কখনও?
আরও শুনুন: ‘আপনারাই শেষ ভরসা’, মাকড়সা তাড়াতে খোদ পুলিশের দ্বারস্থ মহিলা
তবে তেমনটাই করে ফেলেছেন ইংল্যান্ডের বাসিন্দা এক মহিলা। বেশ কিছুদিন ধরেই মাকড়সার জ্বালায় তাঁর বাড়িতে টেকা দায়। সেসব তাড়ানোর জন্য সব রকম চেষ্টাই করেছেন তিনি। কাজ হয়নি। শেষমেশ মাকড়সার জ্বালায় তিতিবিরক্ত হয়ে একদিন সোজা ফোন করে বসলেন থানায়। পুলিশের হেল্পলাইন নম্বর-এ ফোন করে তাঁর কাতর আবেদন, “আপনারাই আমার শেষ আশা-ভরসা। দয়া করে আমাকে বাঁচান। আপনারা কেউ আমার বাড়িতে আসুন, এবং এই মাকড়সাগুলিকে তাড়িয়ে দিয়ে যান।”
এমন অদ্ভুত আবদারে হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন ওই হেল্পলাইন অপারেটররা। মহিলার কাতর আবেদনের উত্তরে তাঁরা জানান, “দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে, পুলিশ আপনার বাড়ি থেকে মাকড়সা তাড়ানোর জন্য আসতে পারছে না।”
পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে দিনরাত বহু অমূলক ফোনই আসে। সারাদিনে ১২০টিরও বেশি এমন ফোন আসে, যা মোটেও ততটা জরুরি নয়। ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের জন্যও বেশ বিরক্তকর। তবু সেসব পেশার অঙ্গ বলে ধরে নিয়েই চলেন তাঁরা। তাই বলে মাকড়সা মারতে পুলিশ! এমনটা বোধহয় ভাবতেও পারেনি সে-মুলুকের পুলিশ বিভাগ। এই ঘটনার পরে পরেই ওয়েস্ট ওয়ার্কশায়ার পুলিশের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। যেখানে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আপনার বাড়িতে মাকড়সার উপদ্রব হলে দয়া করে পুলিশকে ফোন করবেন না। এটা ছোট্ট একটা উদাহরণ শুধু। এমন অজস্র অমূলক ফোন দিনরাত আসে পুলিশের ইমার্জেন্সি নম্বরে। যা মোটেও জীবন-মরণ সমস্যা নয়।
আরও শুনুন: কুমিরের বিয়ে থেকে বরের গলায় সাপের মালা! অদ্ভুত সব ঘটনায় তাক লেগেছে বিশ্ববাসীর
পুলিশের কাছে ব্যাপারটি যতটাই বিরক্তিকর হোক না নেটিজেনরা কিন্তু বিষয়টিকে বেশ উপভোগই করেছেন। কমেন্টে উপচে পড়েছে ওয়ার্কশায়ার পুলিশের ওই টুইট। কেউ বলেছেন, ‘বাড়িতে গিয়ে ওই মহিলাকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা উচিত ছিল পুলিশের।’ কেউ আবার জানিয়েছেন, তিনিও মাকড়সায় খুবই ভয় পান, তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশকে ফোন করার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি তাঁকে। অনেকে আবার পুলিশের সময় নষ্ট করার জন্য ওই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনারও পরামর্শ দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সব মিলিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন ওই মহিলা। একে তো মাকড়সার উৎপাত, তার পর গোদের উপর বিষফোড়া পুলিশের ভর্ৎসনা। নেটনাগরিকরাও এক হাত নিতে ছাড়েননি তাঁকে। মাকড়সা তাড়াতে গিয়ে যে তাঁকে এমন সমস্যাতেও পড়তে হতে পারে, তা বোধহয় কল্পনাও করতে পারেননি ওই মহিলা।