লকডাউনে আটকে পড়া মানুষকে বাড়ি ফেরানো হোক বা অসুস্থের চিকিৎসা। যে কোনও প্রয়োজনে এক ডাকে সাড়া মিলেছে তাঁর। দুঃস্থদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি, বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। হ্যাঁ, কথা বলছি তারকা সোনু সুদকে নিয়েই। গত কয়েক বছর ধরে বিপদে-আপদে সোনুকে পাশে পেয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সোনু হয়ে উঠেছেন মসিহা। আর তাঁর সেই নিরলস চেষ্টার পুরস্কারই পেলেন এবার সোনু। না, কোনও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মান নয়। বরং যা পেয়েছেন তিনি, তার সঙ্গে তুলনা হয় না সেসব কোনও কিছুরই। এ যেন বিরল স্বীকৃতি। ঠিক কী পুরস্কার পেলেন অভিনেতা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পর্দায় তিনি কখনও নায়ক তো কখনও দুর্ধষ দুশমন। কিন্তু বাস্তব জীবনে তিনি শুধুই মসিহা। বিনা স্বার্থে তাই অসংখ্য মানুষকে অনবরত সাহায্য করে চলেন অভিনেতা সোনু সুদ। আর সে কাজের জন্য যে কোনও পদক, যে কোনও সম্মানই বোধহয় কম পড়বে। দেশের মানুষের অফুরান ভালবাসা ও আশীর্বাদ তো তিনি জিতেই চলেছেন অহরহ। তবে এবার সোনু যা পেলেন, তার তুলনা হয়না। এভাবেও যে স্বীকৃতি আসতে পারে, তা বোধহয় কোনওদিনই ভাবতে পারেননি অভিনেতা। নিজের কাজের জন্য এবার তিনি পেয়েছেন আস্ত একটা সোনার পদক।
না, যে সে পদক নয় সেটা। এই পদকে যে লেগে রয়েছে অসীম সম্মান, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা। আসুন, খুলেই বলা যাক তবে ব্যাপারখানা।
আরও শুনুন: স্রেফ ঘরকন্না করা মহিলার ধারণাকে বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়েছিলেন মিতালি
২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে ক্যারাটের জন্য সোনার পদক জিতে ফেরেন দিল্লির মেয়ে অমৃতপাল কৌর। এর আগেও একাধিক বার বিভিন্ন পুরস্কার জিতেছেন ব্ল্যাক বেল্ট অমৃতপাল। তবে এরই মাঝে তাঁর জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। ২০২০ সাল সেটা। হঠাৎই জানতে পারেন হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন অমৃত। বন্ধ হয়ে যায় খেলা। হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে সেই ব্যায়বহুল চিকিৎসা করানোর মতো সঙ্গতি ছিল না অমৃতের পরিবারের। সে সময়ে খেলার স্বপ্নই ছেড়ে দেন অমৃত। কোনও দিনও ফের খেলায় ময়দানে ফিরতে পারবেন, সেই আশাটুকুও ছিল না। আর সেই বিপদের দিনেই পাশে এসে দাঁড়ান সোনু। একবাক্যে তাঁর চিকিৎসার সমস্ত ভার তুলে নেন নিজের কাঁধে।
আরও শুনুন: ‘অফসাইডের ঈশ্বরী’… অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস গড়া স্মৃতিকে নিয়েও হোক হইচই
সেই অস্ত্রোপচারের পরে ভাল আছেন অমৃত। ফিরতে পেরেছেন ক্যারাটের রিংয়ে। আর তার জন্য অভিনেতার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তরুণ এই খেলোয়ারের। সম্প্রতি সোনুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল অমৃতের। আর সেখানেই নিজের সোনার মেডেল সোনুর হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর সাফল্যের সমস্তটাই তিনি উৎসর্গ করেছেন অভিনেতাকে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে সেই ছবি ভাগ করে নিয়েছেন সোনু নিজেই। অমৃতের এই উপহারে আপ্লুত সোনু। জানিয়েছেন, কারওর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে হয় তাঁর। এই সম্মান তাই তাঁর জীবনের সেরা প্রাপ্তি বলেই জানিয়েছেন সোনু। অভিনেতার পোস্ট করা সেই ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর ওই পোস্ট ভরে উঠেছে নেটিজেনদের ভালবাসা ও প্রশংসায়।
অমৃতের ডুবতে বসা স্বপ্নের তরীকে ফের ভাসতে সাহায্য করেছেন সোনু। আর থেমে থাকতে রাজি নয় অমৃত। খুব শিগগিরই বার্মিংহামে কমনওয়েলথ গেমসে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করার কথা তাঁর। নিজের পোস্টে অমৃতকে তার জন্য শুভেচ্ছাবার্তা জানাতেও ভোলেননি মসীহা সোনু।