চুলের ঢেউ, ঠোঁটের ফাঁকে দুষ্টুমি মাখা হাসি আর একের পর এক হিট ছবি। সব মিলিয়ে কার্তিক আরিয়ান বলতে পাগল জেনারেশন ওয়াই। মাঝখানে সারা আলি খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় চলেছে জোর গুঞ্জন। ইতিমধ্যেই বক্সঅফিসে তুমুল সফল কার্তিক আরিয়ানের ‘ভুলভুলাইয়া-টু’। অসংখ্য মহিলা ভক্তের হৃদয়ে দোলা লাগানো সেই কার্তিকের নাকি চুম্বনে বিস্তর অনিহা। একবার একটি চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে ৩৭ বার রিটেক দিতে হয়েছিল কার্তিককে। কেন জানেন? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
‘গব্বর সিং’-কে যদি বলিউডের ‘খতরনাক দুশমন’ বলা যায়, তাহলে বলিউডে উল্লেখযোগ্য ভূতেদের তালিকায় বেশ উপর দিকেই থাকবে ‘মঞ্জুলিকা’। ঠিক ধরেছেন, ‘ভুলভুলাইয়া’ সিনেমা নিয়েই কথা বলছি আমরা। কৌতুক আর ভৌতিকের মিশেলে তৈরি সেই ছবিটি কিন্তু যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিল দর্শকমহলে। সেই ‘ভুলভুলাইয়া’ সিনেমার সিকুয়েল মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। যেখানে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কার্তিক আরিয়ান। ইতিমধ্যেই বক্সঅফিসে তুমুল হিট ‘ভুলভুলাইয়া টু’। প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে ছবিটি এর মধ্যেই।
কার্তিকের নক্ষত্রযোগ যে রীতিমতো ভাল যাচ্ছে, তা বলতেই হবে। তাঁর শেষ ছটি ছবির মধ্যে পাঁচটিই হিট। যার মধ্যে রয়েছে ‘ভুলভুলাইয়া টু’-ও। কে বলে, বলিউড টিকে রয়েছে স্বজনপোষণের উপরে! নিন্দুকের মুখে দুয়ো দিয়ে কার্তিক আরিয়ান সম্পর্কে তেমন কোনও কানাঘুষো শোনা যায়নি এখনও অবধি। ‘পেয়ার কা পঞ্চনামা’ ছবি দিয়ে পথচলা শুরু। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি কার্তিককে। বরং একের পর এক হিট ছবি দিয়ে বলিউডে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন এই তরুণ অভিনেতা। দোলা লাগিয়েছেন অসংখ্য হৃদয়েও।
আরও শুনুন: ‘ফুলেরা’র মেয়ে রিঙ্কি হয়ে বাজিমাত, চাকরির জন্য অভিনেত্রীকে আর চাপ দেন না মা-বাবা
মহিলা ভক্তদের হার্টথ্রব সেই কার্তিক আরিয়ানের নাকি শুরুর দিকে চুমুতে ছিল প্রবল আপত্তি। একটি চুমুর দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে অন্তত ৩৭ বার রিটেক দিতে হয়েছিল অভিনেতাকে। শুধু কি তাই, তার জন্য পরে বকাও খেতে হয়েছিল মা-ঠাকুমার কাছে। একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছিলেন কার্তিক নিজেই।
সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘কাঞ্ছি: আনব্রেকেবল’ ছবির শুটিংয়ে ঘটেছিল সেই ঘটনা। অভিনেত্রী মিষ্টির সঙ্গে সেখানে একটি চুম্বনদৃশ্যে অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর। আর সেই সময়ে দাঁড়িয়ে কার্তিকের জন্য মোটেও সহজ ছিল না কাজটা। তখন সবে সবে অভিনয়ে পা রেখেছেন কার্তিক। জড়তা কাটেনি পুরোপুরি। তাছাড়া বাড়ির লোক ব্যাপারটাকে কেমন ভাবে নেবেন, সেটা ভেবেও দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। তাই সাত-পাঁচ ভেবে চুম্বন-দৃশ্যে সটান ‘না’ বলে দেন কার্তিক। তবে ছবির প্রয়োজনে শেষমেশ রাজি হতেই হয়েছিল অভিনেতাকে।
তা-ও আবার যে সে চুমু নয়। পর্দায় উল্টোদিকে থাকা অভিনেত্রীকে আশ্লেষে চুমু খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্দেশক সুভাষ ঘাই। আর সেই দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে ল্যাজে-গোবরে হতে হয়েছিল কার্তিক এবং মিষ্টি দুজনকেই। শেষ পর্যন্ত ৩৭ নম্বর শটে গিয়ে সবুজ সিগন্যাল দেন নির্দেশক। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন কার্তিক। অবশ্য সেই ছবিতে কার্তিকের অভিনয়ের প্রশংসা করেছিলেন অনেকেই।
আরও শুনুন: উপার্জন ছিল না চার বছর, খ্যাতির পরেও স্ট্রাগলের গল্প শোনালেন অভিনেতা মাধবন
তবে যা নিয়ে ভয় পেয়েছিলেন অভিনেতা, বাস্তবে কিন্তু ঘটেওছিল তাই। সেই চুম্বনদৃশ্য দেখে বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে যান তাঁর মা। এমনকি ছেলেকে ওই অবস্থায় দেখে কেঁদেও ফেলেছিলেন তিনি। তবে আজ কার্তিকের সাফল্যে দেখে সেদিনের দুঃখ নিশ্চয়ই ভুলে গিয়েছেন কার্তিকের মা। তবে এই সাফল্যের পিছনে কিন্তু পরিশ্রমও কম নেই তাঁর। অভিনয়ের জন্য মুম্বইয়ে চলে এসেছিলেন মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়ারের ছেলে কার্তিক। একটি ফ্ল্যাটে বারো জন মিলে ঠেসেঠুসে কোনওমতে থেকেছেন সেসময়ে। প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার পথ পেরিয়ে আসতে হত অডিশনে। তবে সেই কষ্টের ফল হাতেনাতেই পেয়েছেন কার্তিক। খুব অল্প দিনেই বলিউডে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছেন যে কয়েকজন হাতে গোনা অভিনেতা, বলাই বাহুল্য, তাঁদের মধ্যে কার্তিক আরিয়ান অন্যতম।