তাজমহলকে ঘিরে ফের দানা বাঁধল বিতর্ক। জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতর থেকে শিবলিঙ্গ উদ্ধার হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমনিতেই তেঁতে রয়েছে দেশ। হিন্দু দেবদেবীর অনুসঙ্গ থাকতে পারে এমন অভিযোগ এনে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে একের পর এক মসজিদ, দরগাকে। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি ইতিহাস বিজড়িত তাজমহলও। এবার সেই তাজমহল চত্বরে নমাজ পড়ে বিতর্ক বাড়াল চার পর্যটক। কেন তাজমহল চত্বরে নমাজ পড়া বারণ, শুনে নিন।
মন্দির-মসজিদ বিতর্ক লাগাতার চলছেই। একের পর এক মসজিদ, দরগাকে মন্দিরপক্ষের বলে দাবি জানিয়ে চলেছে এক দল মানুষ। চলছে আইন-আদালতও। জ্ঞানবাপী ও ইদগাহ মসজিদ বিতর্ক উস্কে ওঠার পর থেকেই একের পর এক ধর্মস্থান নিয়ে উঠেছে কথা। এমনকী বাদ যায়নি পৃথিবীর অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান তাজমহলও। তাজমহলের তালাবন্ধ ঘরে রয়েছে একাধিক হিন্দু দেবদেবীর অস্তিত্ব। এমনই অভিযোগ এনে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রজনীশ সিংহ নামে এক ব্যাক্তি। যদিও তাঁর আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনাও করেছিল আদালত।জমহলে
আরও শুনুন: কুতুব মিনার চত্বরে আগে মন্দির, পরে মসজিদ! ASI-এর পুরনো রিপোর্টে ছিল কোন তথ্য?
তবে তাতে যে বিতর্কে রাশ পড়েছে তা কিন্তু নয়। বরং সেসব নিয়ে দড়ি টানাটানি এখনও অব্যাহত। তারই মধ্যে ফের তাজমহলকে কেন্দ্র করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল নয়া বিতর্ক। এবার তাজমহল চত্বরে নমাজ পড়ার অভিযোগ উঠল চার পর্যটকের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ শাহি মসজিদ চত্বরে বসে নমাজ পড়া শুরু করেন ওই চার পর্যটক। ব্যাপারটি জানাজানি হতেই শুরু হয় বিতর্ক। এর পরেই বৃহস্পতিবার ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চার পর্যটকের মধ্যে তিন জন আদতে হায়দরাবাদের বাসিন্দা। অন্য একজন থাকেন আজমগড়ে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও শুনুন: হিন্দু রাজার জমিতেই গড়ে উঠেছিল তাজমহল, কীসের বিনিময়ে পেয়েছিলেন শাহজাহান?
না, ওই মসজিদ চত্বরে নমাজ পড়া বারণ, এমনটা নয়। তবে তার বেশ কিছু নিয়মকানুন রয়েছে নমাজ পড়াকে কেন্দ্র করে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ইউনেস্কো দ্বারা সংরক্ষিত ঐতিহাসিক জায়গাগুলির ভিতরে শুক্রবার বাদ দিয়ে অন্য কোনও দিন নমাজ পড়া যাবে না। তাছাড়া শুক্রবারও কেবল তাজগঞ্জ এলাকার স্থানীয়রা বারোটা থেকে ২টোর মধ্যে নমাজ পড়তে পারবে ওই শাহি মসজিদে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। তাজমহলের ইন্তেজামিয়া কমিটির প্রধান ইব্রাহিম জইদি জানান, ইতিমধ্যেই মসজিদ চত্বরে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা ছাপার আকারে টাঙানোও রয়েছে। তবে তা ওই চার পর্যটক জানতেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁদের স্থানীয় ট্যুর গাইড বিনোদ দীক্ষিত। লখনউয়ের বাসিন্দা বিনোদ জানান, ভুল করেই মসজিদ চত্বরে নমাজ পড়তে শুরু করেছিলেন তাঁরা। এ নিয়ে মসজিদ চত্বরে কোনও নিষেধাজ্ঞা ছাপানো নেই বলেও দাবি তাঁর।
তাজমহলের ভিতরেও হিন্দু দেবদেবীর অস্তিত্ব থাকতে পারে এ নিয়ে দিনকতক ধরেই বিতর্কে তোলপাড় গোটা দেশ। এর মধ্যে নমাজ পড়াকে কেন্দ্র করে ফের শিরোনামে উঠে এসেছে মুঘল সম্রাট শাহাজাহান নির্মিত এই সৌধটি। এর জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।