দেশভাগ আলাদা করে দিয়েছিল তাঁদের। ৭৫ বছর পর ফের দেখা হল সেই ভাইবোনের। স্বাভাবিকভাবেই আবেগে ভেসেছেন তাঁরা। তার পাশাপাশিই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দেশভাগের ঘটনার দিকেও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মাঝে গড়িয়ে গিয়েছে ৭৫টি বছর। তবুও একে অপরের দেখাই পাননি এই দুই ভাইবোন। এতদিনে মিটল সে আক্ষেপ। পরস্পরের দেখা পেলেন দুজনে। মান আমন সিং চিনা নামে চণ্ডীগড়ের এক সাংবাদিকের সৌজন্যে সামনে এল আবেগে বিহ্বল ভাইবোনের ছবিটি। যা দেখে আবেগে ভেসেছেন নেটিজেনেরাও।
আরও শুনুন: রাজনীতির ধরন বদলাতে দরকার শিক্ষিত ব্যক্তির, বলেই ফেললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
‘৪৭ সালের দেশভাগ রাতারাতি ভাঙন ধরিয়েছিল একাধিক পরিবারে। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে অনেকেই ভেঙে যাওয়া দেশের কোনও এক প্রান্তে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই যাত্রাপথেও ওঁত পেতে ছিল অজস্র বিপদ। সেসবের মাঝে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের থেকে। কে যে কোথায় হারিয়ে গিয়েছেন, বাকিরা আর তার খোঁজও পাননি অনেক সময়েই। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে খোঁজখবর করাও সহজ হয়নি। ফলে সময় গড়িয়েছে, কিন্তু পরিবারের ভাঙন আর জোড়া লাগেনি। কিন্তু মাঝে মাঝে তো এমন কিছুও ঘটে, যা ঘটার কথা হয়তো ভাবতেই পারেননি কেউ। এবার তেমনই আকস্মিকের মুখোমুখি হল একটি পরিবার। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম একই পরিবারের দুই দেশে থাকা দুজন মানুষ একে অপরের সামনে এসে দাঁড়ালেন। সম্পর্কে তাঁরা ভাইবোন। বর্তমানে ভাই বাস করেন ভারতে। তিনি ধর্মে শিখ। এদিকে বোন ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তিনি পাকিস্তানের বাসিন্দা। কর্তারপুর করিডরের সৌজন্যে ৭৫ বছর পর একে অপরের দেখা পেলেন তাঁরা।
আরও শুনুন: তুঙ্গে মাতৃদুগ্ধের চাহিদা, প্রায় ১১৮ লিটার স্তনদুগ্ধ বিক্রি করে নজির মহিলার
কর্তারপুর করিডর খুলে যাওয়ার পর থেকে, দেশভাগের ফলে হারিয়ে যাওয়া সদস্যদের দেখা পেয়েছে অনেক পরিবারই। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন এই দুই ভাইবোন। এতদিন পরে জোড়া লেগেছে পরিবার, সেই আনন্দে আবেগে ভেসে গিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি রয়েছে ক্ষোভও। জীবনের এতগুলো বছর হারিয়ে ফেলার জন্য দেশভাগকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে সহমত হয়েছেন নেটিজেনদের কেউ কেউও। দেশভাগকে উনিশ শতকের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল বলেও চিহ্নিত করেছেন অনেকে। তবে এত কিছুর পরেও যে অবশেষে এক হতে পারলেন দুই ভাইবোন, আপাতত এটুকুই তাঁদের প্রাপ্তি।