আম আদমী হোক বা রাজা-মহারাজা! ফলের রাজা আমের কদর কিন্তু সর্বত্র। তা সত্ত্বেও অনেকেই নানা কারণে এড়িয়ে যেতে চান লোভনীয় এই ফলটিকে। মোটা হওয়া থেকে ত্বকের সমস্যা, বাজারে রয়েছে একগুচ্ছ চলতি ধারণা! আমের এই বদনাম কতখানি সত্যি, আর কতখানি ভুল, আসুন শুনে নেওয়া যাক নিজের কানেই।
গ্রীষ্ম মানেই প্রখর-দহন দিন, প্যাচপ্যাচে ঘাম আর ঘামাচি। তা এসবের মধ্যেই গরমের কিন্তু একটা ভাল দিকও রয়েছে। কী বলুন তো সেটা? ঠিক ধরেছেন, গরম মানেই কিন্তু আম-আনারস-লিচুর মতো দারুণ মিষ্টি কিছু ফল।
আর কথায় বলে ফলের রাজা আম। হিমসাগর, ল্যাংরা, পেয়ারাফুলি, গোলাপখাস থেকে ফজলি, যেমন বাহারি তার নাম, তেমনি বাহারি তার স্বাদ। সব মিলিয়ে আমের মরসুমের মজাটাই আলাদা। ইতিমধ্যেই গাছভর্তি আমে লাগতে শুরু করেছে কাঁচা হলদেটে রং। বাজারেও ইতিউতি দেখা মিলছে ফলের রাজার। তা দামের কারণে হোক বা স্বাস্থ্যের কথা ভেবে, কষ্ট করে হলেও সেই হাতছানিকে অগ্রাহ্য করে চলেছেন অনেকেই।
কেন? ওই যে কথায় বলে, আম খেলে ঘাম হয়। তা এসব কথা কতটা সত্যি, আর কতটাই বা ভুল, চলুন একবার যাচাই করে নেওয়া যাক।
আরও শুনুন: কোথাও পেঁয়াজ, কোথাও বা গিরগিটি! জ্বর সারানোর রকমারি টোটকায় ভরসা গোটা বিশ্বের
অনেকেই মনে করেন, আম খেলে ওজন বাড়ে তড়তড়িয়ে। সেই জন্য মনের দুঃখ মনে চেপে আমকে দূরে সরিয়ে রাখেন অনেকেই। তবে পুরো ব্যাপারটি কিন্তু আদৌ ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আমে ফ্যাট বা কোলেস্টেরল- দুটোর পরিমাণই অনেকটা কম। ফলে আম থেকে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বরং স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় এই ফলে কিন্তু বেজায় পুষ্টিগুণও রয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
আম খেলে ডায়াবিটিক রোগীদের সমস্যা বাড়তে পারে বলেও মনে করেন অনেকে। তবে পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন আমে গ্লাইকিমিক ইনডেক্স ততটা বেশি পরিমাণে থাকে না। যা আসলে শরীরে সুগারের মাত্রা বাড়ার জন্য অনেকখানিই দায়ী। তবে ডায়াবিটিক রোগীদের জন্য সব কিছুই পরিমাপ মেপে খাওয়া প্রয়োজন। ফলে সেই হিসেব মেনে আম খেলে সুগার বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
অনেকেই আবার মনে করেন, বেশি আম খেলে ব্রনর পরিমাণ বাড়ে। তার কারণ আমের মধ্যে থাকে ফাইটিক অ্যাসিড। যা শরীরে তাপ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। সেই কারণে আম খেলে ব্রন বা ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন অনেকে।
আরও শুনুন: সিলিন্ডারের দাম ছাড়িয়েছে ১০০০ টাকা, রান্নার সময় গ্যাস সাশ্রয় করবেন কীভাবে?
তবে তার একটা চটজলদি সমাধান আছে হাতের কাছেই। ওই ফাইটিক অ্যাসিডের উপস্থিতির জন্যই বহু সময় ত্বকের সমস্যা, ব্রন প্রভৃতির কারণ হয়ে ওঠে এই আম। আর সেই সম্ভাবনা কমাতে আম খাওয়ার আগে সেটিকে ৩০ মিনিট জলে ডুবিয়ে রাখতে ভুলবেন না। তাতে আমের তাপ উৎপন্ন করার ক্ষমতাটি অনেকটাই হ্রাস পায়। ফলে ত্বক বা অন্যান্য সমস্যার সম্ভাবনাও কমে।
তবে আর কী! মুশকিল আসান তো রয়েছে হাতের সামনেই। আমের মরসুমে আমকে আর দূরে সরিয়ে রাখবেন কেন তবে? বরং সমস্ত দুশ্চিন্তা ভুলে এই গ্রীষ্মই হয়ে উঠুক আপনার জন্য আমের উৎসব।