একবার নাগরিকত্ব পেলে আর বদলাবে না কোনও ব্যক্তির পরিচয়। ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রসঙ্গে এমনই পর্যবেক্ষণ গুয়াহাটি হাই কোর্টের। সম্প্রতি এক মামলার রায়ে এ কথাই জানাল আদালত। ঠিক কী বলা হয়েছে হাই কোর্টের তরফে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
করোনা মিটলেই কার্যকর হবে CAA। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থেকে ঘোষণা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। NRC আর CAA প্রসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সরব গেরুয়া শিবির। আর এবার ফের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কথা শোনা গেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে। এদিকে এই পরিস্থিতিতেই এক মামলা প্রসঙ্গে গুয়াহাটি হাই কোর্ট জানাল, কোনও ব্যক্তিকে যদি একবার ভারতের নাগরিক বলে ঘোষণা করা হয়, তবে আর তার নড়চড় হবে না। অর্থাৎ একবার ভারতের নাগরিকত্ব পেলে সেই ব্যক্তিকে আর বিদেশি বলে ঘোষণা করা সম্ভব নয়, এমনটাই বক্তব্য আদালতের।
আরও শুনুন: দেশদ্রোহ আইন বাতিল নয়, অপব্যবহার রুখতে চাই নির্দেশিকা, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
জানা গিয়েছে, নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল আদালতে। আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, তাঁদের প্রত্যেককেই একসময় ভারতীয় নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে সেই নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। উলটে তাঁদের ফের বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার বিরুদ্ধেই মামলা করেছিলেন ওই ব্যক্তিরা। সম্প্রতি সেই মামলাগুলির শুনানিতে গুয়াহাটি হাই কোর্টের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ সাফ জানায়, কোনও ব্যক্তিকে যদি একবার এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সেই বিষয়টি নিয়ে আর আলোচনা হতে পারে না। সেক্ষেত্রে বিষয়টিকে আইনি পরিভাষায় ‘রেস জুডিকাটা’ (res judicata), অর্থাৎ পূর্বেই বিচার হয়ে যাওয়া বলে বিবেচনা করতে হবে। আর আইনের নীতি অনুযায়ী, পূর্বে বিচার হওয়া কোনও বিষয়ে যদি তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেই একই বিষয় নিয়ে ওই একই বাদী ও বিবাদী পক্ষ আর মামলায় জড়াতে পারবেন না। কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব বিচারের প্রশ্নটিকে এই জাতীয় পূর্বে বিচার হওয়া মামলা বলেই দেখা উচিত, এই মামলা প্রসঙ্গে এমনই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি এন কোটিস্বর সিং এবং বিচারপতি নানি ত্যাগিয়ার বেঞ্চের। বৃহত্তর ক্ষেত্রে এই পর্যবেক্ষণ কতখানি গুরুত্ব পাবে, আপাতত সেদিকেই লক্ষ রাখছে বিশেষজ্ঞ মহল।