নিজেই একরত্তি সে। কিন্তু ছোট্ট বোনকে সামলানোর গুরুভার যে তার ছোট্ট কাঁধেই। তাই স্কুলে গিয়েও সেই দায়িত্ব থেকে মুখ ফেরায়নি সে। দিদিমনির শেখানো পড়া খাতায় টুকে নেওয়ার সময়েও কোলে তার ছোট্ট বোন। সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও শোরগোল ফেলে দিয়েছিল নেটদুনিয়ায়। ছোট্ট মেয়ের সংসারের দায়িত্ব সামলেও পড়াশোনার প্রতি যে নিষ্ঠা তা চোখ টেনেছিল মণিপুরের এক মন্ত্রীরও। তার পরই বদলে গেল গল্পটা? কী হল তারপর? আসুন, শুনে নিই।
‘রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা।’ – সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রায়শই ভাইরালও হয়ে যায় সেসব। নেটদুনিয়ার লোকেরা সে সব দেখে হাসেন, কাঁদেন, প্রশংসা করেন। তার পর নতুন ঘটনাপ্রবাহে ভেসে যান।
মণিপুরের একরত্তি মেয়ের যুদ্ধের গল্পটাও সেভাবেই ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছোট্ট বোনকে কোলে নিয়েই স্কুলের পড়াশোনায় মন দিয়েছিল বছর দশেকের সেই খুদে। খাতায় লিখে নিচ্ছিল প্রয়োজনীয় নোট। সেই দেখে চমকে উঠেছিলেন নেটদুনিয়ার মানুষ। ছোট্ট মেয়ে একরত্তি বোনের দায়িত্ব সামলে যে ভাবে মন দিয়েছে পড়াশোনায়, তা দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই।
আরও শুনুন: অবিশ্বাস্য! মাত্র ১৩ বছরেই স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে তাক লাগাল বালক
মণিপুরের তামেংলং জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে থাকে মেইনিংসিনলিউ পামেই ও তার পরিবার। সকাল ফুটতে না ফুটতেই চাষের কাজে বেরিয়ে পড়েন পামেইয়ের বাবা-মা। একরত্তি বোনের দায়িত্ব বর্তায় তখন বছর দশেকের দিদির উপরেই। ছোট্ট বোনকে কোলে নিয়েই স্কুলে যায় সে। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই চলে বোনের দেখাশোনা। সেই ভিডিওটি চোখে পড়েছিল মণিপুরের পরিবেশ মন্ত্রী থোঙ্গামন বিশ্বজিৎ সিংয়ের।
না, নেটনাগরিকদের মতো এই ব্যাপারটাকে দু-এক দিনে কিছুতেই ভুলে যেতে পারেননি মন্ত্রী। বরং যোগাযোগ করেছিলেন পামেইয়ের পরিবারের সঙ্গে। তাঁদের ডেকে পাঠান নিজের অফিসে। সেই তামেংলং থেকে ইম্ফলে মন্ত্রীর অফিসে দেখা করতে এসেছিলেন পামেইয়ের গোটা পরিবার।
আর সেখানেই তাঁদের হাতে ছোট্ট একটা উপহার তুলে দিয়েছিলেন মন্ত্রী। পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে ছোট্ট পামেইকে ভাল স্কুলে পঠনপাঠনের সুযোগ করে দিয়েছেন মন্ত্রী। ইম্ফলের স্কোপল্যান্ড পাবলিক স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে খুকে। শুধু তাই নয়, তার সারা জীবনের সমস্ত পড়াশোনার ভারও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মন্ত্রী।
আরও শুনুন: নিরন্নের মুখে খাবার তুলে দেওয়াই ধর্ম! ইউটিউব চ্যানেল খুলেই সেই কাজই করে চলেছেন তিন বন্ধু
সম্প্রটি টুইট করে নিজেই সেই সংবাদ জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে ছোট্ট পামেইয়ের পরিবারের সঙ্গে তোলা ছবিটিও টুইটারে পোস্ট করেছেন বিশ্বজিৎ। যে ভাবে স্বতঃপ্রণদিত হয়ে ছোট্ট মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছেন মন্ত্রী, সেই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন নেটদুনিয়ার প্রায় সকলেই। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ভেসেছে শুভেচ্ছাবার্তায়।