বেড়াতে যাবেন, কিন্তু হোটেলের দর দেখে চিন্তায় পড়েছেন? তাহলে শুনুন এই পরিবারটির কথা। এঁদের কিন্তু তেমন কোনও চিন্তাই নেই। বিশ্বভ্রমণ করে বেড়ান এঁরা, কিন্তু হোটেলে থাকার জন্য খরচ হয় না একটি পয়সাও। কীভাবে? শুনে নিন।
আক্ষরিক অর্থেই এঁদের পায়ের তলায় সর্ষে। বছরে অন্তত চার-চারবার তল্পিতল্পা গুছিয়ে বেড়াতে বেরোন এঁরা। তাও ধারেকাছে কোথাও নয়। বিশ্বভ্রমণের নেশা এঁদের। তাই পৃথিবীর কোনও না কোনও দেশের উদ্দেশে পাড়ি জমান তাঁরা। অথচ হোটেলে থাকার জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ করা তো দূর, ট্যাঁক থেকে একটি পয়সাও খসাতে হয় না এঁদের। ১৩ বছর ধরে এইভাবেই ভ্রমণের শখ জিইয়ে রেখেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: প্রথমে ছিলেন বেঁটে, পরে বেজায় লম্বা… অদ্ভুত রূপান্তরে বিশ্ববাসীকে অবাক করেছিলেন এই ব্যক্তি
ভাবছেন তো, কীভাবে সম্ভব? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আয়ারল্যান্ডের এক দম্পতি শ্যারন হল্যান্ড ও জের, তাঁদের তিন সন্তানকে নিয়ে এভাবেই ভ্রমণ করে চলেছেন বিগত ১৩ বছর ধরে। বেড়াতে যাওয়ার আগে ট্রেন কিংবা প্লেনের টিকিট রিজার্ভেশন আর হোটেল বুকিং, এই দুটিই তো সবচেয়ে বড় ঝক্কি। সেখানে এই পরিবারটি দ্বিতীয় কাজটিকে স্রেফ নাকচ করে দিয়েছেন। বেড়ানোর সবচেয়ে বড় খরচটির খাতে তাঁদের বরাদ্দ শূন্য। কেবলমাত্র প্লেনের টিকিটটি কাটলেই কেল্লা ফতে। আর গন্তব্যে পৌঁছে থাকার জন্য এক অভিনব উপায় বেছে নিয়েছেন তাঁরা। উঁহু, কোনও আজেবাজে জায়গা নয়। নয় কোনও দাতব্য জায়গাও। বরং দিব্যি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভালভাবে থাকার মতো জায়গাই বেছে নেয় এই পরিবার। কীভাবে? স্রেফ অচেনা লোকের সঙ্গে বাড়ি বদল করে।
আরও শুনুন: নিষিদ্ধ বই দিয়েই তৈরি আশ্চর্য স্থাপত্য, বার্তা দেয় গণতন্ত্র আর বাকস্বাধীনতার
হ্যাঁ, ১৩ বছর ধরে ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতায় এখনও পর্যন্ত মোট ৪০ জন লোকের সঙ্গে বাড়ি বদল করেছেন হল্যান্ড দম্পতি। ভিনদেশে কোনও অপরিচিত মানুষের বাড়ির সঙ্গে তাঁদের দেশে থাকা ফার্মহাউসটি বদল করে নেন তাঁরা। তারপর বেড়াতে গিয়ে সেই মানুষটির বাড়িতেই তাঁরা বাস করেন, আবার তাঁদের ছেড়ে যাওয়া বাড়িতে থাকতে আসেন সেই অপরিচিত মানুষটি। ফলে কখনও তাঁদের ভাগ্যে জোটে ঘরোয়া কোনও বাড়ি, কখনও বা বিলাসবহুল আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট, আর কখনও পুরনো দিনের কোনও প্রাসাদের মতো অট্টালিকা। এইভাবে বাড়ি বদল করে করেই আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইতালি, স্পেন এবং নেদারল্যান্ডসের সমস্ত দর্শনীয় জায়গা ঘুরে এসেছেন এই দম্পতি। একটি ওয়েবসাইটের সূত্র ধরেই এইভাবে বাড়ি বদলে নেওয়া সম্ভব হয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। হোটেলে থাকার বদলে কোনও এলাকার মধ্যে একটি বাড়িতে থাকায় সেই অঞ্চলের মানুষজন, সংস্কৃতি, ইতিহাসকে আরও ভাল করে চেনা যায় বলেই মনে করেন এই দম্পতি। আর এতদিনের অভ্যাসে এমনভাবে ঘুরতেই এখন সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তাঁরা।