আকাশযাত্রার মাঝখানেই হঠাৎ খুলে গেল প্লেনের দরজা। ভয়ে সকলের আত্মারাম খাঁচাছাড়া। কিন্তু ঠিক তখনই, অসামান্য উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দুর্ঘটনার হাত থেকে প্লেনটিকে বাঁচিয়ে দিলেন দুজন যাত্রী। আসুন, শুনে নেওয়া যাক এই অদ্ভুত ঘটনার কথা।
মেঘের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে যদি প্লেনের জানলা খুলে মেঘ ছুঁয়ে আসা যেত, কী ভালই না হত! ছোটবেলায় এমন কথা হয়তো অনেকেই ভেবেছি। আর বড় হতে হতে বুঝতে পেরেছি, অমনটা কেন করা সম্ভব নয়। বরং কোনোভাবে জানলা খুলে গেলে সেই প্লেনের যাত্রীদের জন্য যে কী ভয়ংকর নিয়তি অপেক্ষা করছে, জানা হয়ে গিয়েছে সে কথাও। কিন্তু মনে মনে নয়, সত্যিকারের বাস্তবেই যে ঘটে গেল তেমন ঘটনা। হ্যাঁ, উড়ানের মধ্যেই, আকাশে ভাসমান অবস্থায় থাকাকালীনই দরজা খুলে গেল একটি যাত্রীবাহী প্লেনের। কেবল উপস্থিত বুদ্ধির জোরেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বেঁচে ফিরলেন যাত্রীরা।
আরও শুনুন: ১১ কোটি টাকার কয়েন গায়েব SBI থেকে, উদ্ধারে তদন্তে নামল CBI
কী হয়েছিল ঠিক? খুলেই বলা যাক।
ব্রাজিলের জর্ডাও থেকে রিও ব্র্যাঙ্কোর দিকে পাড়ি দিয়েছিল একটি যাত্রীবাহী বিমান। মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের উড়ান। আর সেই যাত্রার মধ্যেই ঘটল এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি। হঠাৎ করেই খুলে যায় বিমানের দরজা। একজন যাত্রীর মতে, দরজার সাপোর্ট কেবল ভেঙে যাওয়ার ফলেই ঘটে এই বিপত্তি। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ইঞ্জিনের প্রপেলারকে এসে ধাক্কা মারে হ্যান্ডরেল। এদিকে দরজা খুলে যাওয়া মানে বিমানের ভেতর বজায় রাখা বায়ুচাপের তারতম্য ঘটবে, ফলে যে কোনও সময়ে সজোরে মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে বিমান। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। কিন্তু চোখের পলক ফেলার আগেই নিজেদের জায়গা ছেড়ে উঠে দাঁড়ান দুই যাত্রী। দরজা ফের আটকে দিয়ে সেটিকে ধরে থাকেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বিমানটি ল্যান্ড করার আগে পর্যন্ত, প্রায় ২০ মিনিট ওভাবেই দরজাটি ধরে রেখেছিলেন ওই দুজন ব্যক্তি। তবে বিমানের বাকি যাত্রীরাও পরোক্ষে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের সঙ্গে। কেউই আতঙ্কের চোটে অযথা চিৎকার চেঁচামেচি করেননি, বরং পরিবেশ শান্ত রেখেছিলেন। এদিকে দরজার হ্যান্ডরেল ছিটকে এসে বাঁদিকের ইঞ্জিনের প্রপেলারে ধাক্কা দেওয়ার পর সেই ইঞ্জিনটি বন্ধ করে দেন বিমানের পাইলট। একটিমাত্র ইঞ্জিন দিয়েই উড়ানটি সম্পূর্ণ করেন তিনি।
আরও শুনুন: সম্প্রীতির নজির! হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রায় পুষ্পবৃষ্টি মুসলমান পড়শিদের
এহেন দুর্ঘটনা ঘটার পরেও বিমানের কোনও যাত্রীরই কোনওরকম ক্ষতি হয়নি। নিরাপদ দেহেই গন্তব্যে পৌঁছেছেন তাঁরা। আর তার জন্য ওই দুই ব্যক্তিকেই প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনেরা।