বিশুদ্ধ প্রকৃতির মাঝখানে বসে সময় কাটানোর মতো আর কিছুই নাকি হয় না। আর তা যদি হয় রোজা ভাঙার মতো বিষয়, তবে তো কথাই নেই। পবিত্র রমজান মাসে বহু ইসলাম ধর্মাবলম্বীই সারাদিন উপবাস রাখেন। তার পর সন্ধ্যাবেলা ইফতারের মাধ্যমে উপবাস ভাঙেন তাঁরা। আর তা যদি হয় স্বয়ং জঙ্গলের রাজার সামনে বসে, কেমন হয় ব্যাপারখানা? এবার সামনে এল তেমন ব্যবস্থাপনার কথাই। ব্যাপারখানা কী? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জঙ্গল মানেই গাছপালা, অনাবিল প্রকৃতির সান্নিধ্য। আবার জঙ্গল মানে ভয়ঙ্কর সব পশুপাখিরাও বটে। সত্যিই তো, জঙ্গলে বন্যপ্রাণ না থাকলে জঙ্গল আবার জঙ্গল কিসে? তা সেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে বসে যদি উপবাস ভাঙার সুযোগ পাওয়া যায় কেমন হয় বলুন তো?
পবিত্র রমজান মাস চলছে এখন। এ সময়টায় প্রায় সমস্ত ইসলাম ধর্মাবলম্বীই রোজা পালন করে। গোটা দিন নির্জলা উপবাসের পরে সন্ধ্যায় ইফতার খেয়ে ভাঙা হয় উপবাস। এ বার সেই ইফতারের সুযোগ মিলবে জঙ্গলের মধ্যিখানে, বন্যপ্রাণীদের মধ্যে বসে। আর যে পশু নয় কিন্তু, খোদ আফ্রিকার রাজার সামনে বসে ভাঙতে পারবেন উপবাস। সম্প্রতি এমনই ব্যবস্থা করেছে আবু ধাবির একটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: চাকা নড়েও না, চড়েও না! তবু এই রেলগাড়িতে ভিড় জমান অসংখ্য জঙ্গল-যাত্রী
আবু ধাবু মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। পবিত্র রমজান উপলক্ষে এমন একটি আকর্ষনীয় সুযোগের কথা সামনে এনেছে সেখানকার আল আইন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
এবার সিংহদের সঙ্গেই রোজা ভঙ্গ করতে পারবেন সেখানকার বাসিন্দারা। সিংহদের খাওয়াদাওয়ার সময়ে তাদের খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি নিজেরাও ইফতার সারতে পারবেন তাদের সামনে বসেই।
আল আইনের এই চিড়িয়াখানাটি অনেকটাই অভয়ারণ্য গোছের। ফলে এখানে বসে সিংহকে অমন কাছ থেকে দেখতে পাওয়ার ব্যপারটা দর্শকদের অনেকটাই আফ্রিকা সফরের অনুভূতি দেবে বলে দাবি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। সিংহদর্শনের পাশাপাশি রয়েছে বিলাসবহুল খানাপিনার ব্যবস্থাও।
সব মিলিয়ে এলাহি ব্যবস্থা বললেও ভুল বলা হয়। জঙ্গলসাফারি তো রয়েইছে, তার সঙ্গে রয়েছে একটি চমৎকার সূর্যাস্ত দেখার বন্দোবস্তও। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে আটটার মধ্যে ওই রাজকীয় অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারেন দর্শকেরা। বিকেলের জঙ্গলসাফারির পাশাপাশি রয়েছে সকালেও জঙ্গলভ্রমণের ব্যবস্থা।
আরও শুনুন: মন্দির চত্বরেই আয়োজন ইফতারের, মুসলমান পড়শিদের আমন্ত্রণ স্বয়ং পুরোহিতের
বুঝতেই পারছেন, জঙ্গলের রাজার সঙ্গে ইফতার পার্টি বলে কথা! ব্যাপারটা কম রোমাঞ্চকর নয়। তবে সিংহের সঙ্গে উপবাস ভাঙার জন্য আপনার বুকের পাটা থাকা চাই-ই-চাই। তবে আপনি যদি ততটা সাহসীও না হন, কুছ পরোয়া নেই। আবু ধাবিরই আল বাহিয়া নামে একটি চিড়িয়াখানা বন্দোবস্ত করেছে একই রকম ইফতার পার্টির। তবে সেখানে সিংহের পরিবর্তে রয়েছে জিরাফের ব্যবস্থা। লম্বা গলার এই আশ্চর্য পশুটির সঙ্গেই আপনি ভাঙতে পারেন সারা দিনের উপবাস। সে-ও যে কম আশ্চর্য অভিজ্ঞতা হবে না তা তো বলাই বাহুল্য।