নির্দিষ্ট লিঙ্গের মানুষকে নির্দিষ্ট নিয়মের গণ্ডিতে বেঁধে ফেলতে চায় সে দেশ। কিন্তু সেই চাপিয়ে দেওয়া নিয়মকেই প্রত্যাখ্যান করেছেন এই জনপ্রিয় মডেল। নিজের পোশাকভাবনা দিয়েই সৌদি আরবের বেঁধে দেওয়া সামাজিক ছককে অস্বীকার করছেন তিনি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মাথার চুলে কখনও ঝুলছে চড়া গোলাপি হেয়ার এক্সটেনশন। কখনও বা লেপার্ড প্রিন্টের প্যান্টস্যুট। কখনও বেগুনি রঙের গাউনের মতো পোশাক। সাম্প্রতিক ফোটোশ্যুটে এমনই ছকভাঙা পোশাক নির্বাচন করে চমকে দিয়েছেন এই পুরুষ মডেল। যে রং, যে নকশা, যে আকৃতির পোশাক কেবল মেয়েদের জন্যেই নির্ধারিত বলে দাবি করে সমাজ, সেইসব ভাবনা চুরমার করে লিঙ্গসাম্যের নয়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। সৌদি আরবের মতো গোঁড়া রক্ষণশীল একটি দেশে দাঁড়িয়ে তাঁর এহেন পদক্ষেপ কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে সকলের কাছ থেকে।
আরও শুনুন: মেয়ে হিসেবে দত্তক রূপান্তরকামীকে, পেলেন জামাই… ছক ভাঙা সিদ্ধান্ত দম্পতির
সম্প্রতি এমনই অভিনব ভাবনার পরিচয় দিলেন ২৫ বছর বয়সি মডেল জিয়াদ আল-মেসফের। সৌদি আরবের রাজধানী শহর রিয়াধের রাস্তায় এই পোশাকেই ফোটোশ্যুট সারলেন তিনি। সারা বিশ্ব জুড়েই ফ্যাশনের ক্ষেত্রে যে লিঙ্গসাম্যের ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যেখানে নারী পুরুষের পৃথক পোশাকবিধি আর থাকছে না, সেই ভাবনাকেই নিজের পোশাকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন মেসফের। স্বাভাবিকভাবেই এহেন পোশাক নজর কেড়েছে সকলের। যা একইসঙ্গে ইতিবাচক, আবার সমস্যারও।
আরও শুনুন: অবৈধ সম্পর্কে জড়ালেও বিচ্ছেদের পর খোরপোষের দাবিদার স্ত্রী, রায় আদালতের
সমস্যাটা ঠিক কোথায়?
আসলে লিঙ্গভিত্তিক নিয়মনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সৌদি আরব যে কীরকম কড়া মনোভাব নিয়ে চলে, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। মেয়েদের জন্য হাজারও বিধিনিষেধের বেড়া টানা রয়েছে সে দেশে। বোরখা আর হিজাব-সহ পোশাকবিধি বেঁধে দেওয়া হয়েছে তাদের জন্য। তাদের উপর যেমন পুরুষের পোশাক পরার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে, পাশাপাশি, কোনও পুরুষের ক্ষেত্রেও মেয়েদের পোশাক পরা নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব। কোনও পুরুষ তথাকথিত নারীর মতো আচরণ করলে তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে কড়া শাস্তি। এমনকি সমকামও সে দেশে পাপ বলেই গণ্য হয়। এই ফোটোশ্যুট করার সময় এক ব্যক্তি মেসফেরকে সমকামী বলে অভিযোগের আঙুল তোলে। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী যে অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
তবে মুখোমুখি এবং ভারচুয়াল দুনিয়ায় এমন বিবিধ হেনস্তা সত্ত্বেও নিজের ভাবনায় অনড় হয়েই আছেন মেসফের। এমনকি দেশ ছেড়ে যেতেও নারাজ তিনি। মাতৃভূমিতে থেকেই নিজের এহেন কাজের মধ্যে দিয়ে লিঙ্গসাম্যের বার্তা দিয়ে যেতে চান জনপ্রিয় মডেল জিয়াদ আল-মেসফের।