ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে আসা। অদম্য সাঁতার। এত সব কিছু কিসের জন্য? না একটুকরো চকলেট! তা প্রিয় জিনিসের জন্য মানুষ কত ঝুঁকিই তো নেয়। নিজের প্রিয় চকলেটের লোভে ঝুঁকি নিয়েছিল সেই কিশোরও। তবে শেষরক্ষা হল না। কী হল তারপর? শুনে নিন।
চকলেট খেতে কে না ভালবাসে! ভালবাসত এই কিশোরও। না, যে কোনও চকলেট নয়। একটি বিশেষ ধরনের চকলেটই তার ছিল বেশি পছন্দ। তবে মুশকিলের কথা, সেই চকলেটটি আবার তার নিজের দেশে পাওয়া যেত না। মিলত প্রতিবেশী দেশে। কিন্তু মাঝখানে তো কাঁটাতারের বেড়া, পাসপোর্ট, ভিসা আরও কত কী! তবে সেসব তাঁকে চকলেটপ্রেম থেকে টলাতে পারেনি এক ইঞ্চিও। বরং নিজের মতো করেই একটা উপায় বের করে নিয়েছিল সে।
আরও শুনুন: মেয়ে হিসেবে দত্তক রূপান্তরকামীকে, পেলেন জামাই… ছক ভাঙা সিদ্ধান্ত দম্পতির
বাংলাদেশের যে জায়গায় তাঁর বাড়ি, তার পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে শালদা নামে এক নদী। সেই নদীর উপর দিয়েই গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। নদীর ওপারে ভারতের ত্রিপুরা। সেখানকার সিপাহিজালা জেলার কালমচৌরা গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে নদীটি। আর সেখানেই পাওয়া যায় তাঁর প্রিয় চকলেট।
আর সেই চকলেটের লোভেই মস্ত ফন্দি আঁটে ওই কিশোর। নদী সাঁতরে এসে সে একটা ছোট গর্ত বানিয়ে ফেলেছিল কাঁটাতারের বেড়ায়। সেই পথেই এসে কালমচৌরা গ্রামের একটি দোকান থেকে পছন্দের চকলেটটি কিনত সে। তার পর ওই পথেই ফের ফিরে যেত নিজের বাড়িতে।
দিব্যি চলছিল যাওয়া-আসা। তবে সম্প্রতি ছন্দ কাটে। বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যায় হোসেন নামে ওই কিশোর। তার পর যা হওয়ার তাই হল। চকলেটের লোভে সে পৌঁছে গেল শ্রীঘরে। গ্রেপ্তারের পর বিএসএফ তাঁকে তুলে দেয় স্থানীয় পুলিশের হাতে। বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁকে ১৫ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত।
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কিশোরের বাড়ি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায়। চকলেট কেনার জন্য কাঁটাতারের বেড়ায় গর্ত খোঁড়ার কথাও স্বীকার করেছে সে। বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র ১০০ টাকা পাওয়া গিয়েছে তাঁর থেকে। তা বাদে বেআইনি কিছু মেলেনি সেই কিশোরের কাছ থেকে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেই জানায় পুলিশ।
আরও শুনুন: ডাউন’স সিন্ড্রোমকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাবার সঙ্গে এভারেস্ট চড়ল সাত বছরের খুদে
অনেকসময়ই কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে বহু বাংলাদেশের বাসিন্দাই এ দেশে ঢুকে আসেন। তবে শুধুমাত্র চকলেটের লোভে যেভাবে এই কিশোর সাঁতরে এ দেশে চলে এসেছে, তা অবাক করেছে পুলিশ থেকে শুরু করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সকলকেই।