ক্রমশ আকাশছোঁয়া হচ্ছে বাজারদর। আর তার চাপে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। বিশেষ করে জ্বালানি এবং রান্না দুই ক্ষেত্রেই তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সুতরাং আসুন, এই বেলা বরং শুনে নেওয়া যাক তেলের খরচ বাঁচানোর কয়েকটি উপায়।
গত দুবছর ধরে নিয়ম করে বেড়েছে তেলের দর। না, কেবল জ্বালানির কথা বলছি না। রান্নার তেলের ক্ষেত্রেও দরটা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। আবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো হাজির হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আজকাল স্বাস্থ্য সচেতনতার জেরে ভারতীয়দের রান্নাঘরে যে সানফ্লাওয়ার অয়েলের দারুণ কদর, তার অধিকাংশটাই আমদানি করা হয় ইউক্রেন থেকে। যুদ্ধের বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে সাপ্লাই চেনে, তার ফলে এই ভোজ্য তেলের দামও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের। এই পরিস্থিতিতে পকেট বাঁচাতে কী করতে পারেন আপনি? রান্নার এই অত্যাবশ্যকীয় উপকরণটিকে কাটছাঁট করাও তো সহজ কথা নয়। আসুন, সেরকমই কিছু উপায়ের কথা শুনে নেওয়া যাক তাহলে।
আরও শুনুন: বেজায় গরমে ঘাম আর দুর্গন্ধ থেকে কীভাবে মিলবে মুক্তি? রইল টিপস
তেল ছাড়া রান্না কিংবা যথাসম্ভব কম তেলে রান্না করার জন্য প্রথমেই যেটা করতে হবে, তা হল উপযুক্ত বাসন বেছে নেওয়া। ননস্টিক পাত্রে যেহেতু খাবার সহজে আটকে যায় না, তাই কম তেলে রান্না করার জন্য এই জাতীয় বাসনই বেশি সুবিধাজনক। রোস্ট বা বেক করার ক্ষেত্রে সিলিকন আভেনওয়্যার কিংবা সরাসরি পার্চমেন্ট পেপারই ব্যবহার করতে পারেন। যদি কোনও শুকনো খাবার রান্না করেন, তাহলে ফ্লেম ডিফিউজার ব্যবহার করতে পারেন। এটি তাপ সরবরাহ করে, কিন্তু পুড়তে দেয় না।
এ তো গেল বাসনের কথা। কিন্তু কীভাবে রান্না করলে খুব বেশি তেলের প্রয়োজন পড়বে না? তেমনই কিছু পদ্ধতির কথা শোনা যাক এবার।
আরও শুনুন: শুধু পরিবেশেই নয়, রক্তেও বিষ ঢালছে মাইক্রোপ্লাস্টিক! হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি
ধরুন সবজি সতেঁ করবেন কি হালকা করে ভেজে নেবেন। তেল ছাড়া কি আদৌ সম্ভব? আজ্ঞে হ্যাঁ। রন্ধনবিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১ থেকে ২ টেবলচামচ জল কিংবা ব্রথ ব্যবহার করে সবজিগুলো নাড়াচাড়া করে নিতে। কড়া করে ভাজতে চাইলে তেলের বদলে আরেকটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন। অ্যারারুট পাউডার গুলে সেই মিশ্রণে জিনিসগুলি ডুবিয়ে উপরে ব্রেড ক্রাম্ব ছড়িয়ে ভেজে নিতে পারেন।
তেলের বিকল্প হিসেবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে পারেন বিভিন্ন রকমের সস, ইস্ট, ভিনিগার ইত্যাদি দিয়েও। যদি সবজি বা মাংস রোস্ট করেন, তার আগে সেগুলোর উপরে তেলের প্রলেপ দেওয়ার দরকারই নেই। চাইলে মশলাপাতি, বা সবজির স্টক কিংবা জল মেশানো সয়া সস দিয়ে কোটিং দিতেও পারেন। হয়তো একটু বেশি সময় লাগবে, কিন্তু ঠিকমতোই রোস্ট হয়ে যাবে আপনার খাবার।
বেশি পরিমাণে তেল খাওয়া শরীরের পক্ষেও কিন্তু ভাল নয়, সে যে তেলই হোক না কেন। তার চেয়ে বরং চেষ্টা করেই দেখুন না, কম তেলে কিংবা তেল ছাড়াই খাবার বানিয়ে ফেলা যায় কি না। শরীর তো বাঁচবেই, সঙ্গে পকেটও।