নাটকীয় পটপরিবর্তনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ হারিয়েছেন ইমরান খান। এই ঘটনা থেকে গোটা বিশ্ব কী শিক্ষা পেতে পারে? সেই সূত্রই ধরিয়ে দিলেন অভিনেত্রী সিমি গারেওয়াল। আসুন শুনে নিই তাঁর ভাবনা।
শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে টিকে থাকার চেষ্টা করেছিলেন কাপ্তান। আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি আটকানোর। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শনিবার মধ্যরাতের নাটকীয় পালাবদলে পাকিস্তানে শেষ হয়েছে ইমরান-জমানা। পাক প্রধানমন্ত্রীর কুরশি ছেড়ে দিতে হয়েছে কাপ্তানকে। এ যাবৎ পাক মুলুকের কোনও প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। ইমরানও পারলেন না। তবে তাঁর এই অপসারণের মধ্যে বিশেষত্বও আছে। এই প্রথম সে দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রী সরলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এর নেপথ্যে আছে সে দেশের সেনাবাহিনীর অঙ্গুলীহেলন। যদিও সংবিধান ও গণতন্ত্রকে যেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হল এই প্রক্রিয়ায়, তা পাকিস্তানের জন্য ভালো সংকেত বলেই আবার মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
আরও শুনুন: মন্দির চত্বরেই আয়োজন ইফতারের, ধার্মিক মুসলমানদের আমন্ত্রণ স্বয়ং পুরোহিতের
কিন্তু এই রাজনৈতিক তত্ত্বের বাইরে এই ঘটনা আরও অন্তত দুটো জিনিস চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, যা শিক্ষণীয়। আর সেই দুটো সূত্র সকলের সামনে তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী সিমি গারেওয়াল। ইমরানের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। নিজের টক শো-তেও ইমরানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। ইমরান যখন প্রধানমন্ত্রী হননি, তখনই সেই সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করেছিলেন সিমি। তাঁর টুইটে সেই ইঙ্গিত ছিল। যদিও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তখন দ্রুত উঠান হচ্ছিল ইমরানের। পরে যখন ইমরান পাক মুলুকের কুরসিতে বসলেন, তখন গোড়ায় বেশ বিতর্কিত একটি টুইট করেছিলেন সিমি। পরে তা ডিলিট করে দিয়ে পুরনো বন্ধুকে অভিনন্দন জানান। তারপর মাঝের পর্ব পেরিয়ে, ইমরান শিকার হলেন সে দেশের রাজনৈতিক প্রবণতার। গণতন্ত্র যতই সামনে থাকুক, ঘটনা এই যে, ফের একটা নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটল পাকিস্তানে। আর সেদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সিমি। এই ঘটনা থেকে দুটো শিক্ষণীয় জিনিস তিনি চিহ্নিত করেছেন। সেগুলি হল – প্রথমত, চাইলে বিরোধীরা একজোট হয়ে একজন জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, রাজনীতিতে আদর্শবাদীদের কোনও জায়গা নেই। প্রথম মন্তব্যটি নিয়ে ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন। কেননা, তা যে হয়েছে সে তো দেখাই যাচ্ছে। দ্বিতীয় মন্তব্যটিরই তাই ব্যাখ্যা করেছেন সিমি। জানিয়েছেন, ইমরানকে তিনি বহুদিন থেকে চেনেন। ইমরান ভিতরে ভিতর অত্যন্ত আদর্শবাদী একজন মানুষ। ফলত ইমরানের প্রস্থান বুঝিয়ে দিল, আদর্শবাদীদের জন্য আদর্শ জায়গা নয় রাজনীতি।
আরও শুনুন: মানুষের মতো কথা বলতে পারে ব্যাঙের ছাতাও! গবেষণায় উঠে এল আশ্চর্য তথ্য
যদিও এ একান্তই সিমির ব্যক্তিগত মতামত। রাজনীতিতে উত্থান-পতন এবং তার ভিতরের প্যাঁচ-পয়জার থাকেই। কুরশি ধরে রাখার ক্ষেত্রে ইমরানের সিদ্ধান্ত নিয়েও বিস্তর সমালোচনার অবকাশ ছিল। বিশেষজ্ঞরা তা নিয়ে আলোচনাও করেছেন। তবে আপাতত সব কিছু পেরিয়ে কাপ্তানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী? সেদিকেই তাকিয়ে থাকল গোটা বিশ্ব।