ব্যাঙের ছাতা দেখেছেন। খেয়েওছেন। তাই বলে শুনেছেন কখনও ব্যাঙের ছাতা আবার কথাও বলতে পারে। ব্যাপারটা অদ্ভুত শোনালেও নাকি একশো শতাংশ সত্যি। কী বলছেন বিজ্ঞানীরা? শুনে নিন।
চাইনিজের পাতে মাশরুমের মহিমাই আলাদা। তা এই মাশরুম বা ব্যাঙের ছাতা যে কথা বলতে পারে তা কস্মিন কালেও শুনেছে নাকি কেউ? তবে সম্প্রতি একটি গবেষণায় ধরা পড়েছে এমনই তথ্য।
আপনি ব্যাঙের ছাতার কথা শুনতে পান না বটে। তাই বলে তাঁদের গোপন আলাপন নেই, তা ভাবলে কিন্তু ভুল হবে। মাঝেমধ্যেই নিজেদের মধ্যে দিব্যি আড্ডা বা গল্পে মশগুল হয়ে ওঠে তারা। নতুন এই গবেষণা জানাচ্ছে, একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য অন্তত পঞ্চাশটি শব্দ ব্যবহার করতে পারে তারা। ব্যাঙের ছাতা বা মাশরুম তো একধরনের ছত্রাক। তা ছত্রাক কথা বলতে পারে, এমন দাবি এর আগে কখনও শোনা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও শুনুন: রয়েছে পাখির মতোই ঠোঁট আর লেজ, কোথায় দেখা মেলে এমন আজব ফুলের?
তবে নতুন এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছত্রাকের চার ধরনের প্রজাতি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন তাঁরা। ছত্রাকগুলির ইলেকট্রিকাল অ্যাক্টিভিটি নিয়ে পরীক্ষানিরিক্ষা করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, মানুষ কথা বলার সময় যে ধরনের ইলেকট্রিকাল অ্যাক্টিভিটি লক্ষ করা যায় তাঁর শরীরে, তার সঙ্গে আকারগত দিক দিয়ে অনেকটাই মেলে ছত্রাকের ইলেকট্রিকাল ইমপালস বা ধাক্কা । মানুষ যেভাবে শব্দ ব্যবহার করে করে কথা বলে, ছত্রাকও নাকি নিজেদের ভাব বিনিময় করে অনেকটা সেভাবেই। একে অপরের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের সময় তাদের সেই ইলেকট্রিকাল পালস বেড়ে যায় অনেকটাই। অর্থাৎ সে সময় নিজেদের মধ্যে খবরাখবর আদানপ্রদান করছে তারা। হতে পারে খাবারের খোঁজ বা কোনও আঘাতের কথা। ওই ইলেকট্রিকাল সিগন্যালের মাধ্যমেই তা পৌঁছে যায় এক ছত্রাক থেকে অন্য ছত্রাকে।
আরও শুনুন: মানুষ প্রায় নেই বললেই চলে! এই দ্বীপে বসবাস কয়েক হাজার বিড়ালের
সম্প্রতি রয়্যাল সোশাইটি ফর ওপেন সায়েন্সে প্রকাশ পেয়েছে এই গবেষণা। এই গবেষণার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আন্ড্রু আদামৎজকি। ছত্রাকের ওই বিশেষ ক্ষমতাটি আরও নানাভাবে খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। ওই ইলেকট্রিকাল অ্যাকটিভিটি খতিয়ে দেখারও চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। আর সত্যি যদি তেমনটা করা যায়, তাহলে বোধহয় সত্যিই তা হবে বিজ্ঞানের জগতে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। আমরা ক্রমে বুঝতে শিখব গাছেদের ভাষাও।