ফুল না পাখি, একনজরে বোঝাই দায়! হ্যাঁ, এমনই এক অদ্ভুত গাছের খোঁজ মেলে এই বিশ্বে, যার ফুলগুলি দেখতে অবিকল পাখির মতো। কোথায় দেখা মেলে এমন গাছের? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ছদ্মবেশ ধরতে জানে ফুলও। হ্যাঁ, তা ছাড়া আর কী বলবেন একে! দেখে মনে হবে যেন ছোট্ট পাখি। তাও যে-সে পাখি নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট পাখি হামিংবার্ডের মতোই চেহারা এর। কিন্তু বংশপরিচয়ে এটি আদৌ পাখি নয়, বরং একরকমের ফুল। আর এ কথা জানার পরেই তাজ্জব হতে হয়।
আরও শুনুন: সেনাবাহিনীতে চাকরি পেল পেঙ্গুইন, মিলল ‘স্যার’ উপাধিও
টিয়াপাখির মতো সবুজ রং এই ফুলের পাপড়ির। সামান্য আর সেই পাপড়িগুলির সজ্জা এমনই, দেখে মনে হয় যেন যেন পাখির পালক আর লেজ। আর গাছের সঙ্গে ফুলটিকে ধরে রেখেছে যে বৃন্ত, সেটি মনে পড়িয়ে দেয় পাখির ঠোঁট সহ মাথার কথা। ঠোঁট সদৃশ বৃন্ত আর ডানার মতো পালকে দেখা যায় অল্প অল্প লালচে বেগুনি আভাও। সব মিলিয়ে রূপের অন্ত নেই এই আশ্চর্য ফুলটির। আর যদি একসঙ্গে একগুচ্ছ ফুল ফোটে? তবে তো কথাই নেই। দূর থেকে গাছের দিকে তাকালে মনে হয় যেন একঝাঁক পাখিই উড়ে এসে বসেছে গাছের ডালে। না, ঠিক বসেনি। বরং শূন্যেই থমকে গিয়েছে তারা। কেবল ঠোঁট জুড়ে গিয়েছে গাছের ডালে, যেন মধু খাওয়ার জন্য।
আরও শুনুন: মানুষ প্রায় নেই বললেই চলে! এই দ্বীপে বসবাস কয়েক হাজার বিড়ালের
অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে দেখা পাওয়া যায় এই গাছটির। বালিয়াড়ি এলাকার উষ্ণ আবহাওয়ায়, যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যালোক মেলে সারাদিন, সেখানেই এই গাছের ছড়াছড়ি। স্থানীয় নাম গ্রিন বার্ড ফ্লাওয়ার। আর উনিশ শতকের বিখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী অ্যালান কানিংহ্যামের নামের অনুসরণে করা হয়েছে এই গাছের বৈজ্ঞানিক নামকরণ। উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে, মাটি থেকে জল, পলি আর পুষ্টিকর উপাদান সহজেই সংগ্রহ করতে পারে এই গাছ। আর তা সঞ্চয় করে রেখে নিজের কাজেও লাগাতে পারে প্রয়োজনমতো। অস্ট্রেলিয়ান নেটিভ প্ল্যান্টস সোসাইটির মতে, কেবল নিজের জন্য পুষ্টি সংগ্রহই নয়, মানুষেরও উপকারে লাগে এই গাছটি। ওই অঞ্চলের আদিবাসীরা এই গাছের রস দিয়ে চোখের সংক্রমণের চিকিৎসা করে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা।