তবে কি সত্যি হতে চলেছে নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বানী? পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে নাকি বিশালাকার গ্রহাণু। এমনই সতর্কবার্তা জারি করেছে নাসা। এর কী প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীতে? কতটা ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা? আসুন, শুনে নিই।
পৃথিবীর দিকে নাকি তীরবেগে ছুটে আসছে বিশালাকার এক গ্রহাণু। সেই কবে বলে গিয়েছিলেন গ্রিক ভবিষ্যৎবক্তা নস্ত্রাদামুস। শেষপর্যন্ত কি তাঁর কথাই সত্যি হতে চলেছে!
তবে এতে অবাক হওয়ার মতোও কিছু নেই। তাঁর বলে যাওয়া কত কিছুই তো ফলে গিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে। আমেরিকায় সেপ্টেম্বর ১১-র নাশকতার ঘটনা থেকে শুরু করে অতিমারি, সবটাই মিলেছে। এবার বোধহয় ফলে যেতে চলেছে তাঁর আরও একটি ভবিষ্যদ্বানী। সেই কোন কালে তিনি বলে গিয়েছিলেন, ২০২২ সালে গ্রহাণুপুঞ্জ আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। আর সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে সম্প্রতি তেমনই সতর্কবার্তা জারি করল খোদ নাসা।
আরও শুনুন: উপন্যাসে লেখা ছিল মস্ত জাহাজডুবির কথা, ঠিক ১৪ বছর পর সত্যিই ডুবেছিল টাইটানিক
সম্প্রতি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা জানিয়েছে,পৃথিবীর দিকে তির বেগে ছুটে আসছে এক বিশালাকার পাথর। তাদের ব়্যাডারে নাকি ধরা পড়েছে তেমনই দৃশ্য। না, যে সে পাথর নয় সেটি। ইতিমধ্যেই সেটিকে ‘মনস্টার’ আখ্যা দিয়েছে নাসা। প্রায় একটা পিরামিডের আকারের ওই বিশাকার পাথর নাকি পৃথিবী ধ্বংস করতেও যথেষ্ট।
প্রায় ৯ বছর আগে ২০১৩ সালর জানুয়ারি মাসে এই গ্রহাণুটিকে প্রথম বার লক্ষ্য করেছিল নাসা। তার জন্যই সেটির নামকরণ করা হয় ‘2013 BO76’। সে সময়েই ওই গ্রহাণুর ছবি-সহ সতর্কতাও জারি করেছিল নাসা। তখন সেটি ছিল পৃথিবী থেকে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ মাইল দূরে ছিল। তবে এই ন-বছরে স্বাভাবিক ভাবেই পৃথিবীর আরও কাছাকাছি চলে এসেছে সেটি । এই মুহূর্তে পৃথিবী থেকে ৫০০-৬০০ ফুট দূরে রয়েছে গ্রহাণুটি।
আরও শুনুন: প্রকৃতির বিস্ময়! ঝরনার বুকে এ আগুনের শিখা নেভে না কখনও
নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মার্চে মাসের ২৪ তারিখ অর্থাৎ আগামী বৃহস্পতিবার পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি এসে পড়বে ওই অ্যাস্টারয়েড। তখন পৃথিবী থেকে তাঁর দূরত্ব থাকবে মাত্র তিন মাইল। তবে সেটি যদি নিজের ছন্দে পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলে হয়তো তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হবে না। কিন্তু কোনও ভাবে মহাকর্ষের কারণে যদি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায় সেটির, তাহলে কিন্তু সমূহ বিপদের সম্ভাবনা। সেটির একটি অংশ পৃথিবীকে ছুঁলেই নাকি মহা সর্বনাশ।
আগামী ২৪ তারিখ রাত দশটা থেকেই নাসার ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রোজেক্টের মাধ্যমে অনলাইনে দেখা যাবে এই সংক্রান্ত সমস্ত আপডেট। নিজের চোখে দেখতেও পাবেন ভয়ঙ্কর ওই গ্রহাণুর ছুটে আসা।
গ্রহাণুদের এমন পৃথিবীর কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়া নতুন ব্যাপার নয়। এর আগেও এমন বহু ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতেও ঘটবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ২১৮২ সালে নাকি ‘বেন্নু’ নামে একটি বিশালাকার গ্রহাণু ছুটে আসতে চলেছে পৃথিবীর দিকে। তবে তাতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। আগে বৃহস্পতিবারের ধাক্কাটা তো সামলানো যাক।