ভুল ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েছিল অনলাইনে অর্ডার দেওয়া খাবার। অথচ সেই ভুল যে কারও কারও ক্ষেত্রে এমন ঠিক হয়ে যেতে পারে, কে জানত! বেখেয়ালে করা সেই ছোট্ট ভুলটুকুর জন্যই খুশিতে ঝলমলিয়ে উঠল ডেলিভারি বয়ের মুখ। কেন? আসুন, শুনে নেওয়া যাক সে কথা।
অনলাইনে খাবারের অর্ডার দিয়ে হাপিত্যেশ করে বসে আছেন। পেট চুঁইচুঁই করছে খিদেয়। এমন সময় ফোন এল ডেলিভারি বয়ের। প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ফোন ধরলেন… আর সঙ্গে সঙ্গেই, ‘ধুক করে নিভে গেল বুকভরা আশা’। যাহ্! মেনুর দিকেই সবটুকু মন দিতে গিয়ে ঠিকানার দিকে যে আর তাকানোর ফুরসত পাননি। বাড়ি বদলেছে কবে, এদিকে অনলাইন অ্যাপে ঠিকানা বদলানোর কথা বেমালুম ভুলে বসে আছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। খাবার পৌঁছেছে বটে, তবে ভুল ঠিকানায়।
আরও শুনুন: বাজল বাজনা, ঘর সাজল বিয়েবাড়ির মতো, কফিনবন্দি তরুণ জওয়ানের জন্য আয়োজন মা-বাবার
না না, গল্প নয়, সত্যি সত্যিই এমনটা হয়েছে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে। ঠিকানা না বদলানোর দরুন তাঁর পুরনো ঠিকানাতেই খাবার নিয়ে গিয়ে হাজির হয়েছিল ডেলিভারি বয়। খিদের পেটে এমন ঘটনা ঘটলে রাগ দুঃখ সব হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে সত্যি বলতে কি, এরকম ভুলের ঘটনা একেবারে বেনজির নয়। কিন্তু এর পরে যা ঘটেছে, তা-ই এই চেনা গল্পে এনে দিয়েছে নতুন মোচড়। কীরকম? তবে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: এড়াতে হবে যুদ্ধের থাবা, ২০ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে ইউক্রেনের সীমান্ত পেরোলেন যুবক
আমেরিকার একটি অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপে খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা শা ডেভিস। ডেলিভারি বয় যখন জানায় যে সে বাড়ির দোরগোড়ায় এসে হাজির, তখন তাঁর টনক নড়ে। কারণ সেই বাড়িটি আসলে আইওয়াতে। বেচারা আর কী করবেন, ব্যাপারটা খুলে বলে সেই ছেলেটিকেই বলেন, “ভাই, তুমিই বরং খাবারটা দিয়ে লাঞ্চ সেরে ফেলো।” তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাজি হয়ে যায় ছেলেটি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে ফের ডেভিসের ফোনের পর্দায় ভেসে ওঠে ছেলেটির আরও একটি মেসেজ। সে জানিয়েছে, আরও একবার ডেভিসকে ধন্যবাদ জানাতে চায় সে। কারণ এদিন তার ভাইয়ের জন্মদিন ছিল। আর ডেভিসের পুরনো বাড়ি, অর্থাৎ যেখানে ছেলেটি খাবার নিয়ে গিয়েছিল, তার খুব কাছেই চিরঘুমে শায়িত আছে তার ভাই। ভাইয়ের জন্মদিনে তার কবরের পাশে বসেই খাবার খেয়েছে ছেলেটি। তার মনে হয়েছে, যেন তারা দুই ভাই একসঙ্গে লাঞ্চ করেছে সেদিন। ভাইয়ের জন্মদিনে এমনটা করতে পেরে ছেলেটি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ডেভিসকে।
এই মন ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাগ করে নিয়েছিলেন ডেভিস। যা দেখে আবেগে ভেসেছেন গোটা পৃথিবীর নেট দুনিয়ার মানুষেরাই। কারণ, স্থান বা কাল যাই হোক না কেন, ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের ভালবাসার ধরন যে একইরকম।