স্মার্টফোনের স্মার্টনেস ততক্ষণই, যতক্ষণ তার চার্জ আছে। ফোন একটু পুরনো হতে না হতেই ব্যাটারি ব্যাকআপ কমতে থাকে। চার্জার নিয়ে ঘুরলেই তো হল না, চার্জ দেওয়ার জন্য পোর্টও পাওয়া চাই। অগত্যা মুশকিল আসান পাওয়ার ব্যাঙ্ক। আজকাল কমবেশি সকলেই সঙ্গে রাখেন এই মুশকিল আসানটিকে। কিন্তু তার ক্ষমতাও তো সীমিত। আর সেই সমস্যারই সমাধান করে ফেলেছেন এক ব্যক্তি। তিনি বানিয়ে ফেলেছেন এমন এক পাওয়ার ব্যাঙ্ক, যাতে একই সঙ্গে চার্জ দেওয়া সম্ভব পাঁচ হাজার মোবাইলে। এমনকী এই পাওয়ার ব্যাঙ্ক ব্যবহার করে চালানো যাবে টিভি কিংবা ওয়াশিং মেশিনও। কে তৈরি করলেন এই বিশালাকার পাওয়ার ব্যাঙ্ক? আসুন শুনে নিই তাঁর কথা।
দৈত্যাকার বললে ভুল বলা হবে না মোটেও। আর তা হবে নাই বা কেন! একখানা পাওয়ার ব্যাঙ্ক থেকেই যে চার্জ দেওয়া যাবে অন্তত ৫ হাজার ফোনে। অবাক হচ্ছেন! তা অবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনাই বটে। সম্প্রতি সামনে এল এমনই এক আশ্চর্য ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার ব্যাঙ্ক।
এই দৈত্যাকার পাওয়ার ব্যাঙ্ক তৈরির গল্পটাও বেশ চমকপ্রদ। জিনিসটি বানিয়েছেন জনৈক চিনা যুবক। তাঁর নিজের একটা পাওয়ার ব্যাঙ্ক ছিল, তবে সেটির ক্ষমতা ছিল সাধারণ। অর্থাৎ বলার মতো তেমন কিছু নয়। এদিকে তাঁর বন্ধুদের পাওয়ার ব্যাঙ্কগুলি ছিল বেশ ক্ষমতাশালী। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে সেইসব পাওয়ার ব্যাঙ্ক দেখতে দেখতে হীনমন্যতাতেই ভুগতেন যুবক। তবে হতাশ হলেও হাল ছাড়েননি ওই তরুণ। কিছু একটা করতে হবে- এই ভাবনা নিয়ে নেমে পড়েন কাজে। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার শখ তাঁর বরাবরের। সুতরাং মাথায় ভূত চাপল, এবার এমন একটা পাওয়ার ব্যাঙ্ক তিনি বানাবেন, যা চমকে দেবে গোটা দুনিয়াকে। শুরু হয়ে গেল কাজ। আর শেষমেশ একাই বানিয়ে ফেলেন দৈত্যাকার একখানা যন্ত্র। যা সম্ভবত পৃথিবীর সব চেয়ে বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার ব্যাঙ্ক। গোটা কর্মকাণ্ডেরই ভিডিও তিনি আপলোড করেছেন, যা দেখে সত্যিই চমকে গিয়েছেন বিশ্ববাসী।
আরও শুনুন: অভিনব রেকর্ড! মাটি থেকে ৬০০০ ফুট উপরে দড়ি ধরে হেঁটে তাক লাগালেন যুবক
চিনা এই তরুণের নাম হ্যান্ডি গেং। তাঁর তৈরি পাওয়ার ব্যাঙ্কটি লম্বায় প্রায় ৫.৯ ফুট এবং চওড়ায় ৩.৯ ফুট। বিশালাকার ওই পাওয়ার ব্যাঙ্কে ৬০ খানা পাওয়ার সকেট রয়েছে। ইলেকট্রিক ভেহিকলে যে বড় বড় ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করা হয়, তেমন ব্যাটারি দিয়েই পাওয়ার ব্যাঙ্কটি তৈরি করেছেন হ্যান্ডি। একসঙ্গে পাঁচ হাজার ফোনে চার্জ দেওয়ার পাশাপাশি ল্যাপটপ, টিভি, ওয়াশিং মেশিনও চালানো যেতে পারে ওই পাওয়ার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। শুধু কি তাই, প্রয়োজন হলে এটির মাধ্যমে চার্জ দেওয়া যেতে পারে ইলেকট্রিক স্কুটারেও।
আরও শুনুন: এও কি সম্ভব! বাড়ির বাগানে বসে ইউটিউব দেখে আস্ত প্লেন বানিয়ে ফেললেন যুবক
ভাবছেন নিশ্চয়ই, এমন বিশালাকার পাওয়ার ব্যাঙ্ক আবার পোর্টেবেল হল কী করে? অর্থাৎ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সেটিকে নিয়েই বা যাওয়া যাবে কী উপায়ে? এত কাঁচা কাজও কিন্তু করেননি হ্যান্ডি। প্রথম থেকেই পাওয়ার ব্যাঙ্কের তলায় বসিয়ে দিয়েছেন চাকা। রয়েছে একটি লম্বা দড়ি। যার মাধ্যমে অনেকটা রথের মতো করেই টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে পাওয়ার ব্যাঙ্কটিকে। যেখানে খুশি যখন ইচ্ছা।
এর আগেও এমন নানা ধরনের অভিনব জিনিস বানিয়েছেন হ্যান্ডি। কখনও কাবাব গ্রিলার দিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন পিয়ানো তো কখনও অন্য কিছু। তবে এই দৈত্যাকার পাওয়ার ব্যাঙ্ক বানানোর নেটদুনিয়ায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন চিনা এই যুবক।