হারিয়ে যাওয়া সম্পত্তি ফিরে পেতে দেবতারা নিযুক্ত করেছিলেন এক দুঁদে গোয়েন্দাকে। ঋগ্বেদ অনুসারে, সেই গোয়েন্দা ছিল সরমা নামে একটি কুকুর। তাকেই পৃথিবীর প্রথম গোয়েন্দা বলা চলে। অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে গোয়েন্দাগিরি সারমেয়কুলের রক্তে। প্রবল ঘ্রাণশক্তি, সজাগ দৃষ্টি আর বুদ্ধিমত্তার পাশাপাশি এরা বিশ্বস্তও। প্রায় সমস্ত দেশেই পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগের কাজে তাই সারমেয়দের আলাদা জায়গা দেওয়া হয়। কয়েকটি বিশেষ প্রজাতির কুকুরই অবশ্য অগ্রাধিকার পায় এ কাজে। তারা কারা? আসুন, শুনে নিই।
কুট্টুস কিংবা পঞ্চুকে ভোলেননি নিশ্চয়ই! তারা দুজনেই সারমেয়। একজন সঙ্গী হত টিনটিনের অভিযানে, অন্যজন পাণ্ডব গোয়েন্দাদের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ত সমস্ত রহস্য সমাধানে। এমনই অজস্র শিশু-কিশোর সাহিত্যে রহস্য সমাধানের সঙ্গী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে কুকুরেরা। শুধু সিনেমা কিংবা সাহিত্য নয়, বাস্তবেও গোয়েন্দা-কুকুরদের সুখ্যাতি কিছু কম নয়। প্রায় কমবেশি সব প্রজাতির কুকুরই সজাগ, বুদ্ধিমান ও বিশ্বস্ত হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাবের জন্য পোষ্য হিসেবেও বেশ প্রিয় এরা। তবে তার মধ্যেই বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, রহস্য সমাধানের কাজে যাদের জনপ্রিয়তা বেশ বেশি।
সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে গ্রেট সুইস মাউন্টেন। সুইস আল্পসের স্থানীয় এক প্রজাতির কুকুরের সঙ্গে বড় আকারে মাস্টিফ কুকুরকে ব্রিড করিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিশেষ প্রজাতিটি। আকারে বেশ বড়, এই প্রজাতির কুকুরদের নাকি হাড়ের জোর সাংঘাতিক, তার সঙ্গে বেশ চটপটে হয় এরা। সহজে মিশেও যেতে পারে। তাই এই ধরনের কুকুরদের কিন্তু পুলিশি কাজে সহজেই ব্যবহার করা যায়।
আরও শুনুন: স্রেফ গন্ধ শুঁকেই নাকি করোনা রোগী চিহ্নিত করে ফেলবে কুকুর! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজ্ঞানীদের
এর পরেই পছন্দের তালিকায় রয়েছে জার্মান শেফার্ড। পোষ্য হিসেবেও নেহাত মন্দ নয় এরা। এদের উৎপত্তি কিন্তু জার্মানে। আদতে ভেড়া প্রতিপালনের কাজে ব্যবহার করা হত এই প্রজাতির কুকুরদের। তবে বুদ্ধিমান হওয়ার পাশাপাশি চট করে কোনও জিনিস শিখে নিতে এদের জবাব নেই। বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সহায়তা, তল্লাশি বা উদ্ধারকাজ থেকে শুরু করে মিলিটারি ও পুলিশের বহু কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এদের।
লাব্রাডর বা লাব্রাডর রিট্রিভার বোধহয় পোষ্য হিসেবে পৃথিবীর সব চেয়ে জনপ্রিয়। কানাডায় এককালে ফিশিং ডগ হিসেবে ব্যবহার করা হত এদের। মিশুকে হওয়ার পাশাপাশি এদের প্রধান বিশেষত্ব এদের প্রভুভক্তি। সে কারণেই দৃষ্টিহীন কিংবা অন্যরকম ভাবে যারা বিশেষ সক্ষম যাঁরা, তাঁদের সহায়তার কাজে লাগানো হয় এই প্রজাতির কুকুরদের।
আরও শুনুন: স্রেফ একটি কুকুরের কারণেই দুই দেশের মধ্যে হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, জানেন এই ঘটনা?
মুধোল হাউন্ড বা মারাঠা হাউন্ডরাও কিন্তু এই ধরনের কাজের জন্য ভীষণ উপযোগী। সীমান্ত পাহারা দেওয়ার কাজে এদেরকে ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা। বিস্ফোরক খুঁজতেও বেশ ওস্তাদ এই ধরনের কুকুর।
এর পর বলব বাখারওয়ালদের কথা। এই রোমশ কুকুরটির উৎপত্তিস্থল মূলত লাদাখে। তিব্বতি মাস্টিফ বলেও অনেকে চেনেন এই কুকুরদের। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বসবাসকারী আদিবাসী সম্প্রদায় বাখারওয়াল ও গুজ্জরদের কাছেই আগে বেশি দেখা যেত এই ধরনের কুকুর। তবে বর্তমানে সেনাদের বহু কাজেই ব্যবহার করা হয় এদের।
বাকি অংশ শুনে নিন।