প্রকাশ্যে স্তন্যদান। আজও এ নিয়ে একরকমের সংস্কার যেন থেকেই গিয়েছে। তবে তা কাটিয়ে উঠতে এগিয়ে এসেছেন তারকা-মায়েরা। কোনও রাখঢাক না করেই প্রকাশ্যে মাতৃত্বের উদযাপন করতে দ্বিধা করেননি তাঁরা। চলুন, শুনে নিই তেমন কয়েকজন প্রথাভাঙা সাহসী মায়ের কথা।
মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই। সদ্যোজাত শিশুর একমাত্র খাবার মাতৃদুগ্ধ। এ কথা সবাই জানে। তবু এই নিয়ে ট্যাবুর যেন শেষ নেই। হ্যাঁ, এই ২০২২-এ দাঁড়িয়েও ছবিটা বদলায়নি। এই তো কদিন আগে সন্তানকে স্তন্যদানের ছবি পোস্ট করে বিরূপ মন্তব্যের সামনে দাঁড়াতে হল অভিনেত্রী ইভলিন শর্মাকে।
তিনি একা নন, আজ শুনব তেমনই কয়েক জন সাহসী মায়ের গল্প, যাঁরা তাঁদের মাতৃত্ব নিয়ে, সন্তানকে প্রকাশ্যে স্তন্যদানের স্বাধীনতা নিয়ে সরব হয়েছেন। ট্যাবু ভেঙে মাতৃত্বের উদযাপন করেছেন যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও শুনুন: ৪২ লিটার স্তনদুগ্ধ দান হাসপাতালে, ছকভাঙা কাজে কুর্নিশ আদায় করলেন ভারতীয় মহিলা
সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন লিসা হ্যাডন। সম্প্রতি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন লিসা। বরাবরই ব্যতিক্রমী লিসা। বেবি বাম্প নিয়েও একাধিক বার সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ খোলামেলা পোশাকেই মুখ দেখিয়েছেন লিসা। মেয়েকে স্তন্যদান করানোর ছবিও প্রকাশ্যে এনেছিলেন লিসা কোনও রাখঢাক না করেই।
বলিউড অভিনেত্রী সেলিনা জেটলিকেও দেখা গিয়েছে একই রকম ভাবে। সুইম স্যুটে সন্তানকে ব্রেস্ট ফিডিং-এর ছবি প্রকাশ্যে এনেছিলেন তিনিও।
এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই বলিউড অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়াও। এই নিয়ে দু-দুবার মা হয়েছেন নেহা। জীবনের সব ক্ষেত্রেই তিনি বেশ সাহসী। অন্তঃসত্তা অবস্থাতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। সন্তানকে স্তন্যদান নিয়ে কোনও ছুৎমার্গ নেই তাঁরও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে নিজেই জানিয়েছিলেন নেহা।
সম্প্রতি মা হয়েছেন অভিনেত্রী অমৃতা রাও। সংস্কার বা ট্যাবু ভাঙার পথে এগিয়েওছেন তিনিও। মডেল পদ্মালক্ষ্মী সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছেন সন্তানকে স্তন্যদানের ছবি। তবে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি ওয়ার্কিং ওম্যান। একই সঙ্গে মেকআপ এবং সন্তানপালন, দুটো ব্যপারই সামলেছেন সমান দক্ষতায়।
এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই হিন্দির ছোট পর্দার অভিনেত্রীরাও। শিখা সিং থেকে একতা কল, বা জনপ্রিয় মুখ শ্বেতা সলভেরাও প্রকাশ্যে মাতৃত্বের উদযাপন করতে পিছপা হয়নি।
আরও শুনুন: দাড়িতে লজ্জার কী আছে! একমুখ দাড়ি নিয়ে সামনে এসে দেদার প্রশংসা কুড়োলেন তরুণী
কেরলের একটি পত্রিকার প্রচ্ছদে এক মডেলকে দেখা গিয়েছিল সন্তানকে স্তন্যদান করাতে। সেটা অবশ্য বছর কয়েক আগের ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন সেই দক্ষিণী মডেল গিলু জোসেফ। তবে সে সময় তাঁর পাশে দাঁড়ায় ইউনিসেফ। আজও সমাজ সেই অবস্থান থেকে কতটা এগিয়েছে বলা মুশকিল। তবে গিলুর মতোই সাহসী হয়ে এগিয়ে এসেছেন আরও অনেকে। প্রকাশ্যে স্তন্যদানের সঙ্গে শালীনতার বেড়া টপকানোর যে তেমন কোনও সম্পর্ক নেই, তা নিয়ে অল্প হলেও সচেতনতা বাড়ছে। নিজে মা না হয়েও গিলু যে মশালখানা জ্বালিয়েছিলেন সেদিন, সেই মশালটাই যে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন লিসা, নেহা কিংবা শ্বেতারা… সেটা বললে বোধহয় খুব ভুল কিছু বলা হবে না।