মোবাইল দেখার অভ্যাস আজ ঘরে ঘরে। মোবাইলে হাত দেয় না, এমন বাচ্চা আজ বিরল বললেও ভুল হবে না। আর এই অহরহ মোবাইল ঘাঁটার প্রভাব যে শুধু শিশুর মানসিক ও শারীরিক গঠনের উপরে পড়ে, তা নয় মাঝেমধ্যে বড়সড় শিক্ষা পেতে হয় অভিভাবকদেরও। যেমনটা ঘটেছে এই দম্পতির সঙ্গে। গচ্চা গিয়েছে লক্ষাধিক টাকা! কীভাবে? শুনে নিন।
বাড়ির দরজায় হঠাৎ এসে হাজির বিশাল বিশাল সব বাক্স। পেল্লায় সে সব বাক্সের উপরে লাগানো সেলোটেপ সরাতেই জানা গেল, তার ভিতরে রয়েছে একগাদা আসবাব। বাড়ির ঠিকানাও একেবারে নির্ভুল। এদিকে বিল শুনে তো চোখ ঠিকরে কপালে ওঠার জোগাড় গৃহিনীর। সব মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা! কোথা থেকে এল এত সব দামী আসবাব? কে-ই বা অর্ডার করল!
দিন কয়েক হল বাড়ি বদল করেছেন মধু ও প্রমোদ। বাস তাঁদের নিউ জার্সিতে। নতুন বাড়ি সাজানোর জন্য কয়েকটি অনলাইন অ্যাপে আসবাবপত্র দেখছিলেন মধু। কিন্তু শুধু তো দেখেইছিলেন। অর্ডার তো করেননি। এ দিকে বাড়িতে বড় বলতে তো শুধু স্বামী-স্ত্রী দুজনে। আর রয়েছে এক বছর আট মাসের ছেলে আয়াংশ। প্রমোদকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, তিনি অর্ডার দেননি। তবে কে অর্ডার করল এত সব আসবাবপত্র! এমন ভুতুড়ে কাণ্ড যে ঘটতে পারে, তা ভেবেই আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা।
আরও শুনুন: এও কি সম্ভব! বাড়ির বাগানে বসে ইউটিউব দেখে আস্ত প্লেন বানিয়ে ফেললেন যুবক
তবে ভুল ভাঙল অচিরেই। না, কোনও ভূতবাবাজির কাণ্ড নয়। আসল কলকাঠি নেড়েছে ওই একরত্তি। মায়ের মোবাইল নিয়ে প্রায়শই খেলে ছোট্ট আয়াংশ। সে সব করতে করতেই কখন যেন অনলাইন অ্যাপে গিয়ে গুচ্ছখানেক আসবাবপত্র অর্ডার করে ফেলেছে সে। প্রমোদ জানিয়েছেন, সব সময় মোবাইল ফেস রেকগনাইজেশন বা কোড দিয়ে লক করে রাখেন তাঁরা। তবে তাতেও একরত্তির হাত থেকে বাঁচানো যায় না মোবাইলটিকে।
সব মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। আপাতত পুরোটাই ওই অনলাইন সংস্থাকে মিটিয়ে দিতে হয়েছে ওই দম্পতিকে। তবে ওয়ালমার্ট সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের। খুদের কেনা সমস্ত আসবাবই ফেরত নিতে রাজি হয়েছে তারা। মিলবে পুরো টাকা ফেরতও। তবে একরত্তি ছেলের এ হেন অনলাইন শপিংয়ের কাণ্ড কোনও মতেই ভুলতে পারছেন না তাঁরা।
আরও শুনুন: গল্পে নয়, বাস্তবেও ছিল ‘মোগলি’… জঙ্গলে থাকত নেকড়েদের সঙ্গে, ডাকত ঠিক পশুদের মতোই
আজকালকার বেশির ভাগ খুদেরাই মোবাইল ছাড়া চোখে অন্ধকার দেখে। খেতে, বসতে, খেলতে, পড়তে- সব কিছুতেই তাঁদের মোবাইল চাই-ই-চাই। অভিভাবকেরাও বেশিরভাগ সময়ে ঝঞ্ঝাট এড়াতে বাচ্চাদের মোবাইল হাতে বসিয়ে দেন। তার ফলে বাজে অভ্যেস যেমন তৈরি হয়, অনলাইনে ভুলভাল ব্যাপারেও অনেক সময় জড়িয়ে পড়ে খুদেরা। এই বাচ্চাটির কথাই যেমন ভাবুন না, এই বয়সে লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র অর্ডার দিয়ে বসেছে সে। ওই অনলাইন সংস্থার দৌলতে অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেছেন এবার। তবে সাবধানের মার নেই। তাই এখন থেকে মোবাইল একরত্তির নাগালের বাইরে রাখবেন বলেই ঠিক করেছেন এই দম্পতি।