ডিউটি আওয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে কাজ করতে আর কেই বা পছন্দ করে বলুন! তবু অনেক সময়ই তা করতে হয়। ইচ্ছা না হলেও। বেশ কিছু কাজের ক্ষেত্রে তো হামেশাই এমনটা হয়ে থাকে। তবে ডিউটির সময় পার হয়ে যাওয়ার পরে কাজ করতে বেঁকে বসেছিলেন এক পাইলট। আর প্লেন চালাবেন না বলে বায়নাও ধরেছিলেন তিনি। তার পরে কী হল? শুনে নিন
কাজের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে আর একটুও কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন এই ব্যক্তি। আর সে কাজ তো যে সে কাজ নয়, বিমান ওড়ানোর মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজ।
সৌদি আরবের রিয়াধ থেকে ছাড়ার কথা ছিল পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি উড়ান। যাওয়ার কথা ইসলামাবাদে। দু-মাস আগেই সৌদি আরব পর্যন্ত তাদের যাত্রাপথ সম্প্রসারণ করেছে বিমানসংস্থাটি। তো ঘটনার দিন ঠিক সময় মতোই যাত্রা শুরু করেছিল বিমানটি। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় কিছুক্ষণের মধ্যেই জরুরি অবতরণ করাতে হয় বিমানটিকে।
আরও শুনুন: এও কি সম্ভব! বাড়ির বাগানে বসে ইউটিউব দেখে আস্ত প্লেন বানিয়ে ফেললেন যুবক
যাত্রী থেকে বিমানের কর্মী, সকলেই অপেক্ষা করছিলেন বিমানবন্দরে। আবহাওয়া কখন ঠিক হবে, কখন ফের রওনা দেবে প্লেন।
বেশ খানিক্ষণ পরে আবহাওয়া ঠিক হতে ফের বিমান ছাড়ার প্রস্তুতি নেয় বিমানসংস্থা। তবে সে সময় বাধ সাধেন পাইলট। জানিয়ে দেন, তাঁর ডিউটি আওয়ার তো শেষ হয়ে গিয়েছে। আর ডিউটি আওয়ার শেষের পরে আর এক মুহূর্তও অতিরিক্ত কাজ করবেন না তিনি।
এ দিকে, আবহাওয়াও ঠিক। সময়ও পেরোচ্ছে হু হু করে। অথচ প্লেন ছাড়ার নাম নেই। অধৈর্য হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুধু করে দেন যাত্রীরা। শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিমানসংস্থা কর্তৃপক্ষ তো পড়েছেন মহা ফাঁপরে। দুম করে নতুন পাইলট কোথা থেকে জোগাড় করবেন তাঁরা! এ দিকে, যে পাইলট রয়েছেন, তিনি প্লেন চালাতে অস্বীকার করছেন। এদিকে যত সময় যাচ্ছে, যাত্রীদের বিক্ষোভও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে ভিড় সামাল দিতে হয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে।
বাধ্য হয়ে যাত্রীদের জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করে বিমানসংস্থা। শেষ পর্যন্ত ওই দিন রাতে অন্য বিমানচালককে আনিয়ে বিমানটি ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়। বেশ রাত করেই ইসলামাবাদ পৌঁছন যাত্রীরা।
আরও শুনুন: তিনি মেয়র, তিনিই নাগরিক… আশ্চর্য এই শহরের বাসিন্দা মাত্র একজনই
তবে এতকিছুর পরেও ওই বিমানচালকেরই পাশে দাঁড়িয়েছে বিমান সংস্থাটি। তারা জানিয়ে দিয়েছে, বিমানচালকদের জন্য বিশ্রাম খুবই জরুরি। কারণ বিমান চালানো তো আর যে সে ব্যপার নয়। মাঝ আকাশে বিমান ও বিমানযাত্রী, দুইয়ের সুরক্ষার দায়িত্বই তো থাকে পাইলটেরই কাঁধে। তাই তাঁর ঠিক মতো বিশ্রাম না হলে বিপদ হতে পারে যে কোনও সময়।