কোহলির পর পরবর্তী টেস্ট ক্যাপ্টেন কে? চলছে জল্পনা। উঠে আসছে একাধিক নাম। তার মধ্যেই সুনীল গাভাসকার বললেন, তাঁর পছন্দ ঋষভ পন্থ। তরুণ এই ক্রিকেটারকে কেন পছন্দ সুনীলের? কতটা যুক্তিযুক্ত তাঁর এই নির্বাচন? বিশ্লেষণে সৌরাংশু ।
৬৮টি টেস্টে ভারতের অধিনায়কত্ব করার পর অধিনায়ক পদ থেকে বিদায় নিলেন বিরাট কোহলি। টি২০ এবং ৫০ ওভারের ক্রিকেটের দায়িত্ব আগেই ছেড়েছিলেন বা গিয়েছিল। এখন আর তিনি কোনও ফরম্যাটেই অধিনায়ক রইলেন না। অধিনায়ক হিসাবে ভারতীয় দলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে, তিনি সরে গেলেন, বিশেষত টেস্ট ক্রিকেটে। ৬৮টা টেস্টের মধ্যে মাত্র ১৭টিতে হেরে ৪০টি টেস্ট জয়ের রেকর্ড তাঁর। ভারতীয়দের মধ্যে সর্বাধিক এবং বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে চতুর্থ।
কিন্তু বিরাট কোহলি ও তাঁর টেস্ট নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা এখন নয়। তিনি যে অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন সেটাই বাস্তব। কেন ছাড়লেন কী বৃত্তান্ত সে সবের খোঁজ তদন্তকারীরা করুন। আমরা বরং একবার দেখি কোহলির জায়গায় কে অধিনায়ক হতে পারেন?
সীমিত ওভারের বাকি দুই ফরম্যাটে রোহিত শর্মা অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং টেস্টে সহ-অধিনায়ক। কিন্তু তাঁর হ্যামস্ট্রিং-এর যা অবস্থা তাতে তিনি কতদিন তিন ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকবে।
আরও শুনুন – কপিলের ঐতিহাসিক ১৭৫-এর রেকর্ড নেই কোথাও, ঝলক ফিরল সিনেমায়
রোহিত শর্মার জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকায় সহ-অধিনায়ক এবং দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্ব করেন লোকেশ রাহুল। তিনিও বেশ শক্তপোক্ত দাবিদার।
এই দুজন ছাড়াও আরও দুটো নাম উঠে আসছে – তার মধ্যে একজন যশপ্রীত বুমরাহ; তিনি এখনও পর্যন্ত দেশের মাটিতে সেভাবে টেস্ট খেলেননি। এবং ফাস্ট বোলার হবার কারণে তাঁকেও ওয়র্কলোড বুঝে বেছে বেছে খেলতে হবে, যাতে তিন ফরম্যাটে কেরিয়ার দীর্ঘস্থায়ী হয়।
আমরা বরং অন্য নামটাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করি। তিনি ঋষভ পন্থ। যাঁকে বিরল প্রতিভা হিসেবেই ধরা হচ্ছে এই মুহূর্তে। মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের পরে টেস্ট ক্রিকেটে কিছুদিন ঋদ্ধিমান সাহার চলাচল, তারপরেই ধূমকেতুর মতো ঋষভের আগমন। মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ত্রিশতরান, ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ৪৮ বলে সেঞ্চুরি, আইপিএলে সাফল্য। ঋষভ পন্থ দ্রুত ভারতীয় দলে শামিল হন। ঋদ্ধির চোটে সুযোগও পান। তারপর যমুনা দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গেছে, প্রথমে কিপিং এবং পরে ব্যাটিং নিয়ে বহু সমালোচনার পর আজ ২০২২-এ পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর তিনি দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার। বলা যায়, টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মাটিতে সেঞ্চুরি করে এবং শেষ কেপ টাউন টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও সেঞ্চুরি করে দ্রুততম ভারতীয় উইকেট কিপার হিসাবে টেস্টে ১০০০ রান করে এবং মাত্র ২৮টা টেস্টে ৪টি সেঞ্চুরি করে তিনি এখন তিন ফরম্যাটেই অপরিহার্য।
আরও শুনুন – সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে… বিরাটের আগেও অধিনায়কত্ব বিতর্কে বিদ্ধ হয়েছেন এই কিংবদন্তিরা
যদিও ৫০ ও ২০ ওভারের আন্তর্জাতিকে এখনও পর্যন্ত সেই বিশেষ ইনিংসটি খেলে উঠতে পারেননি যেটি তাঁকে প্রতিভা, বিস্ময় ইত্যাদি শব্দ থেকে কিংবদন্তির পর্যায়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু টেস্টে তাঁর এক একটা ইনিংস লোকগাথার পর্যায়ে চলে গেছে। বিশেষত, গত অস্ট্রেলিয়া সফরে সিডনি ও ব্রিসবেন টেস্টে এবং সাম্প্রতিকতম কেপটাউন টেস্টের ইনিংসগুলি। তাই সুনীল গাভাসকরের মতো কিংবদন্তি যখন পরবর্তী অধিনায়ক হিসাবে ঋষভের কথা বলেন তখন নড়েচড়ে বসতেই হয়। পরিসংখ্যান বাদ দিন, ওটা তো গুগল সার্চ করলেও চলে। তবে ২০২১-এর প্রথম পর্যায়ের আইপিএলে শ্রেয়স আইয়ার চোটগ্রস্ত হবার পর দিল্লি ক্যাপিটালসের দায়িত্ব যায় ঋষভের কাছে। এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে শ্রেয়স ফিরে এলেও ঋষভের থেকে অধিনায়কত্ব ফেরত নেওয়া হয়নি। দিল্লি ক্যাপিটালস আগের বছরের ফাইনালের পর ২০২১-এও লিগে এক নম্বর দল হয়। দিল্লির মুখ্য প্রশিক্ষক রিকি পন্টিং-এর অধীনে ঋষভ নিজের প্যাঁচ পয়জার ঘষামাজা করলেন, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পেস বোলারদের ভালো হ্যান্ডলিং করলেন।
বাকি অংশ শুনে নিন।