হাটেবাজারে বিক্রির আগে মরা মাছ বরফে রাখেন মাছওয়ালারা। তাতে পচন ধরার সম্ভাবনা কমে। তবে বরফ থেকে বের করে আনলে বাঁচিয়ে রাখা মুশকিল, এমন মাছের কথা শুনেছেন আগে! তবে সত্যিই রয়েছে এমন মাছ। আন্টার্কটিক মহাসাগরের তলায় বরফের চাদরের নিচে রয়েছে এমনই মাছেদের কলোনি। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমনই ৬ কোটি তুষার-মাছের বাসা খুঁজে পেয়েছেন সমুদ্রের তলায়। এর আগে এতবড় ফিশ ব্রিডিং কলোনি নাকি কখনও দেখেননি তাঁরা। এমন আশ্চর্য মাছের গল্পই আজ শুনে নেওয়া যাক।
ওয়েডেল সাগরের একেবারে মধ্যিখানে, প্রায় হাজার ফুট নিচে বরফের চাদরের তলায় লুকিয়ে রয়েছে সেগুলো। কতদিন ধরে অবশ্য কেউ জানে না। জার্মানির অ্যালফ্রেড ওয়েগনার ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন আইস-ফিশ বা তুষার-মাছের তেমনই সুবিশাল একটি ব্রিডিং কলোনি।
দেখতে অনেকটাই গর্তের মতো। তবে সেই গর্তের আকার নাকি একেকটা হুলা হুপের মতোই। এক ফুট ছাড়া ছাড়া রয়েছে সেই আশ্চর্য বাসা। আর একটা-দুটো নয়, অন্তত ৬ কোটি তুষার মাছের বাসা খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলায়। আর সেই বাসার প্রায় প্রত্যেকটি পাহারা দিচ্ছে একটি করে তুষার-মাছ।
আরও শুনুন: পাথরও নাকি গান গায়! এমন অদ্ভুত পাথরের দেখা মিলবে কোথায়?
বরফ জমতে শুরু করেছে, ঠিক এমন তাপমাত্রাতেই থাকতে পছন্দ করে এরা। আশ্চর্যের ব্যাপার জানেন, এদের শরীরের রক্ত লাল নয়, বরং একেবারে জলের মতোই স্বচ্ছ। হিমোগ্লোবিন না থাকার কারণেই তাঁদের রক্তের রং এমন অদ্ভুত। এটা একধরনের অভিযোজনও বলা যেতে পারে। এই জন্যই নিজেদের ত্বকের মাধ্যমে জলের গা থেকে অক্সিজেন শোষন করতে পারে এই তুষার-মাছ।
গবেষকদের জাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরায় যখন তুষার মাছের এই কলোনির ছবি ধরা পড়ে, তখনও সূর্যের আলো ফোটেনি। ওয়েডেল সমুদ্রের বুকে তখন ভোর রাত। স্থানীয় সময় রাত তিনটে হবে। গোটা জাহাজের বেশির ভাগ লোকই তখনও ঘুমিয়ে। চোখ লাগিয়ে বসেছিলেন শুধু এক বিজ্ঞানী।
আরও শুনুন: স্রেফ গন্ধ শুঁকেই নাকি করোনা রোগী চিহ্নিত করে ফেলবে কুকুর! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজ্ঞানীদের
হঠাৎ করেই ক্যামেরায় ফুটে উঠেছিল সেই আশ্চর্য দৃশ্য। যা চমকে দিয়েছিল বেহরিঙ্গার নামে ওই বিজ্ঞানীকে। আটন পারসার নামে আর এক বিজ্ঞানীও প্রত্যক্ষ করেন ওই দৃশ্য। তিনি আবার গভীর সমুদ্রের জীব বিষয়ে গবেষণা করছেন। সমুদ্রের ভিতরে প্রায় চার ঘণ্টা ডুব দিয়ে ওই ছবি তোলা হয়েছে। আন্টার্কটিক মহাসাগরের নিচে প্রায় ৯২ বর্গফুট এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল ওই তুষার-মাছের কলোনি। এর আগে এত বড় ফিশ ব্রিডিং কলোনির সন্ধান বিজ্ঞানীরা পাননি বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।
বাকি অংশ শুনে নিন।