মাকে চিঠি লিখেছিলেন ছেলে। ঘরের বাইরে আছেন। কেমন আছেন, কী খাচ্ছেন, সেইসব খুঁটিনাটি জানিয়েই লিখেছিলেন ছোট্ট একটা চিঠি। কিন্তু সে চিঠি যখন ঠিকানা খুঁজে পেল তখন মা আর নেই। ছেলেও নেই ইহলোকে। সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। কেননা চিঠি গিয়ে পৌঁছেছে ৭৬ বছর পর। শুনে অবাক হচ্ছেন তো! আসুন তবে গোড়া থেকেই শুনে নেওয়া যাক!
মা, আজ তোমার আর-একটা চিঠি হাতে পেয়েছি। সবকিছু ঠিক আছে জেনে কী যে ভালো লাগছে! আমিও একরকম ভালই আছি। একটাই শুধু অসুবিধা, খাবারটা কিছুতেই মনের মতো পাচ্ছি না। বেশিরভাগ সময় যা খাবার হাতে আসে সবই রদ্দি। যাই হোক, আশা করছি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরব। ইতি- তোমার জনি।
আরও শুনুন: প্রতি মিনিটে অর্ডার ১১৫ প্লেটের, চলতি বছরে দেশে রেকর্ড চাহিদা বিরিয়ানির
ছোট্ট একটা চিঠি। লিখেছিল ২২ বছরের ছেলেটি। মাকে নিজের খবর দিয়ে। কিন্তু কে জানত সে চিঠি সময়ে পৌঁছাবেই না! তা, ডাকবিভাগের গোলযোগ বা অন্য অনিবার্য কারণে চিঠি না-ই পৌঁছাতে পারে। এরকম কত চিঠি তো হারিয়ে যায়। কত না মনের কথা থেকে যায় অগোচরেই। কিন্তু চিঠিটি যে পৌঁছায়নি তা বরং আশ্চর্যের নয়। আশ্চর্যের এই যে চিঠিটা যখন ঠিকানায় পৌঁছাল তখন জীবন গিয়েছে চলে ছিয়াত্তরটি বছরের পার। অর্থাৎ, কেটে গিয়েছে সাড়ে সাত দশকেরও বেশি। চিঠির প্রাপক, ছেলেটির মা তো এখন আর ইহলোকে নেই-ই। চিঠির প্রেরক, ছেলেও আর বেঁচে নেই। থাকার মধ্যে শুধু থেকে গিয়েছে একটি চিঠি। বুকে করে যে এতদিন ধরে রেখেছিল সন্তানের কুশল সংবাদ।
আরও শুনুন: Hilsa: ইলিশ মাছকে নাকি সেকালে ভাবা হত ‘নিরামিষ’! কেন জানেন?
ছেলেটির নাম জন গঞ্জালভেস। ১৯৪৫ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি মায়ের উদ্দেশে লিখেছিলেন চিঠিটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ছিলেন তিনি। যুদ্ধের শেষলগ্ন যখন আসন্ন, যখন সবকিছু আবার স্বাভাবিক হওয়ার আশা জাগাচ্ছে, তখন এই চিঠি লিখেছিলেন তিনি। আমেরিকান সৈনিককে তখন থাকতে হচ্ছিল জার্মানিতে। এ সেই সময়কার কথা।
বাকি অংশ শুনে নিন।