করোনা-কাঁটায় বিপর্যস্ত জীবন। গত তিন বছর ধরে কোভিড শব্দটা শুনলেই কানে বেজে ওঠে অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দ আর আতঙ্কের আওয়াজ। তবে তিন বছর আগে ভাবুন, কোভিড, কোয়ারিন্টাইন এসব কত শব্দের কোনও অস্তিত্বই ছিল না আমাদের জীবনে। বাবা-মা শখ করে নাম রেখেছিলেন কোভিড। তবে সেই নামের সঙ্গে মিলিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে যে বিশ্বে এসে পড়তে চলেছে এক ভয়াবহ অতিমারি, তা আর কী করেই বা জানবেন তাঁরা! তবে সেই নামই বিপাকে ফেলেছে বেঙ্গালুরুর যুবককে। কী কী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁকে? শুনে নিন।
করোনা আমাদের জীবন থেকে স্বাভাবিক অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে। আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজার। আর এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ফের আমাদের সঙ্গী হয়েছে ভয় আর হাজার রকমের কোভিড-বিধি। ফের দাপট দেখাতে শুরু করেছে অতিমারির তৃতীয় ঢেউ। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
অথচ তিনটে বছর আগের কথাই ধরুন! তখনও পর্যন্ত আমাদের জীবনে কোভিড বা করোনা শব্দটার তেমন কোনও তাৎপর্যই ছিল না। হ্যাঁ, করোনা নামে একটি বিশেষ অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় ছিল বটে, তবে তার সঙ্গে অতিমারির কোনও সম্পর্ক একেবারেই ছিল না।
আরও শুনুন: ১০১৯ অক্ষরের নাম, বার্থ সার্টিফিকেট ২ ফুটের! বিশ্বরেকর্ড মহিলার
বাবা-মা শখ করে নাম রেখেছিলেন কোভিড কপূর। একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি সংস্থার কর্ণধার কোভিড। তবে বর্তমান সময়ে পিতৃপ্রদত্ত নামই সমস্যায় ফেলেছে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এই যুবককে। ব্যাপারটা নিয়ে রসিকতায় মেতেছে নেটবিশ্বও। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের বায়োতে কোভিড মজা করে লিখেছেন, “আমার নাম কোভিড, আর আমি কোনও ভাইরাস নই।” হ্যাঁ, ওই খানিকটা ‘মাই নেম ইজ খান’ সিনেমার সেই বিখ্যাত ডায়লগটির ঢঙেই। জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে কর্মসূত্রে ভারতের বাইরে যেতে হয়েছিল কোভিডকে, সেখানেও তাঁর নাম শুনে বেজায় অবাক হন আশপাশের লোকজন।
তবে তাঁর নামের ব্যাপারটি পরে ভেঙে বলেছেন ওই যুবক। তিনি জানান, তাঁর পিতৃদত্ত নামটি আসলে কোভিদ, যার মানে শিক্ষিত বা পন্ডিত ব্যক্তি। হনুমান চল্লিশা থেকে অনুপ্রাণীত হয়ে এমন নাম রেখেছিলেন বাবা-মা। তবে সময় আর পরিস্থিতির গেরোয় সেই নামই হয়ে উঠেছে হাসির খোরাক। তাঁর নামের প্রথম অক্ষরটি শুরু হয় ইংরেজি অক্ষর ‘কে’ দিয়ে, আর ভাইরাসটির বানান শুরু ‘সি’ দিয়ে। তবে সে কথা আর খেয়াল রাখেন না কেউই।
আরও শুনুন: শুধু মানুষ নয়, প্রকৃতির পাঠশালাতে মিমিক্রিতে দক্ষ প্রাণীরাও
নিজের নাম নিয়ে এই বছর তিনেক ধরে অনেক রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন যুবক। সে সব শেয়ার করে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানিয়েছেন, তাঁর ৩০ তম জন্মদিনের কেকের উপরে ভুল করে ‘সি’ অক্ষর দিয়েই তাঁর নামটি লিখে ফেলেছিল কেক নির্মাণকারী সংস্থাটি। এমনই হু ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন যুবক, বহুবার। প্রথম প্রথম বিরক্ত লাগলেও এখন এই ব্যাপারগুলোয় দিব্যি মজা পান কোভিদ। টুইটারে তাঁর এইসব পোস্ট দেখে হেসে কুটিপাটি হয়েছেন অনেক নেটনাগরিকই। আপাতত দিব্যি ভাইরাল বেঙ্গালুরুর এই যুবক। তাঁর কথায়, জীবন তাঁকে একটা টোকো লেবু হাতে ধরিয়ে দিয়ে গেছে, আর সেটা দিয়েই মিষ্টি শরবত বানানোর চেষ্টায় রয়েছেন রসিক এই যুবক।