বিশ্বজুড়ে ফের থাবা বসাচ্ছে করোনা। ক্রিসমাস আর নিউ ইয়ার্স ডে-র সেলিব্রেশন পেরিয়েই করোনার দাপটে আবার প্রায় ঘরবন্দি আমরা। কেউ আক্রান্ত, কেউ আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে। মোট কথা, একরকম করে আইসোলেশন চলছেই। কিন্তু এই ঘরে থাকা যদি কেবল একঘেয়েমি উপহার দেয়, তাহলে তো খারাপ থাকাই চেপে বসবে বেশি করে। কী করা যায় তাহলে?
নতুন বছর শুরু হতে না হতেই খেল দেখাচ্ছে করোনা। হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বস্তির কথা একটাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাসপাতালের রোগশয্যার বদলে নিজেদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। যতই অসুস্থতা থাক, অচেনা পরিবেশের বদলে নিজের চেনা ঘরে থাকা একরকমের মানসিক শান্তি দেয়। কিন্তু একটানা ঘরে থাকতে থাকতে একঘেয়ে লাগবে না তো? শরীরের অসুস্থতার মধ্যে সেই মানসিক ক্লান্তি কিন্তু মোটেও আরাম দেবে না। তাই নিজের রোজকার চেনা ঘরটিকেই সাজিয়ে নিন একটু নতুনভাবে। যাতে মন থাকে তরতাজা।
আরও শুনুন: ওমিক্রন ছোঁয়ার আগেই সতর্ক থাকুন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে কোন কোন খাবারে?
প্রথমেই ঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন অপ্রয়োজনীয় জিনিসের বোঝা। চারদিকে জামাকাপড়, জিনিসপত্র যদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, তাহলে এমনিতেই ঘর অপরিচ্ছন্ন লাগে। সুতরাং বাড়তি জিনিসগুলি ঘর থেকে সরাতে না পারলেও গুছিয়ে একপাশে রেখে দিন।
অসুস্থতার কারণে শরীর মন যখন অবসন্ন, সেই সময়ে চারপাশ অনুজ্জ্বল থাকলে অবসাদ ঘিরে ধরে আরও বেশি করে। তাই ঘর সাজান উজ্জ্বল ও রঙিন জিনিসপত্রে। জানলা দরজার পর্দা বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের রঙে। ঘরে রাখতে পারেন রংবেরঙের কুশন। একইরকম ভাবে, পছন্দসই রং, পছন্দের ডিজাইন মাফিক বিছানার চাদর, বালিশ বা কম্বলের ঢাকনা ব্যবহার করুন। কারণ ধরে নেওয়া যেতে পারে, আক্রান্ত অবস্থায় অনেকটা সময় কাটবে বিছানায় শুয়ে। এই অবস্থায় নিজের চারপাশে উজ্জ্বলতা থাকলে তার প্রভাব পড়বে আপনার মনেও।
আরও শুনুন: সংক্রমণ রুখতে কোন ধরনের মাস্ক সবথেকে কার্যকরী? জেনে রাখুন খুঁটিনাটি
বেডসাইড টেবিল থাক বা না থাক, বিছানার পাশে ফুলদানি কিন্তু মাস্ট। অসুস্থতার মধ্যে তাজা ফুল দেখলেই ঝরঝরে লাগবে নিজেকে। আর ঘরে সবুজ গাছ থাকলে তো কথাই নেই। স্নেক প্ল্যান্ট, লাকি বাম্বু, মানি প্ল্যান্ট, পিস লিলি, এমন বিভিন্ন গাছই ঘরে রাখা চলে। রুগ্ন অবস্থায় সবুজের চেয়ে বেশি আশ্বাস আর কে দিতে পারে, বলুন!
এ ছাড়া ঘরে সাজিয়ে রাখতে পারেন নিজের বা প্রিয় মানুষদের গ্রুপ ফটো। অস্থির সময়ে আনন্দের মুহূর্তগুলোকে বারবার মনে করে নেওয়া কিন্তু বড্ড জরুরি। হাতের কাছেই রাখুন প্রিয় বই, কিংবা শখের প্রিয় জিনিস। সুন্দর ল্যাম্পশেডের আলোও কিন্তু নিমেষে ভাল করে দিতে পারে মন।
মোট কথা, রোগ শরীরেই থাকুক, কিন্তু মনে তাকে আসতে দেবেন না কিছুতেই। নিভৃতবাস মানেই ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা, এমনটা ভাবার কিন্তু কারণ নেই কোনও। বরং ব্যস্ত জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে এই সুযোগে নিজের সঙ্গেই নিভৃতে কাটিয়ে ফেলুন কিছুটা সময়।