নাম বিভ্রাটের অনেক রকম গল্পই তো শুনেছেন। একই নামের গেরোয় পরিচয় বিভ্রাট থেকে শুরু করে, নামের জন্য বন্ধুমহলে রঙ্গরসিকতা – এ সব তো শোনাই যায়। তবে কিচ্ছু না করে পিতৃদত্ত নামের জন্য গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা পাওয়ার কিন্তু মুখের কথা নয়! আর তেমনটাই করে দেখিয়েছেন এক মহিলা। কে তিনি! শুনে নিন।
অনেকেই নিজের পুরো নাম ব্যবহার করতে পছন্দ করেন না। কারোর নাম আবার লোকের মুখে মুখে পালটে যায় হরদম। কেউ বা নিজের নামকে আমূল পালটে নেন নিজেরাই। তবে মা-বাবার দেওয়া নামের জোরে গিনেজ বুকে নাম তোলার ক্ষমতা বা সৌভাগ্য কিন্তু সব লোকের হয় না। তবে এমনই হয়েছে আমেরিকার টেক্সাসের বাসিন্দা জেমির বেলায়।
আজকাল অবশ্য ছোট ছোট নাম রাখারই চল বেশি। সিনেমা, ফুল, গাছ -কত কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে ছেলেমেয়েদের কত রকমের নামই না রাখেন বাবা-মা। তার মধ্যে কেউ আবার একটু খটমট নাম রাখতেই পছন্দ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় যাকে বলে ‘দন্তমর্দনকারী’ নাম। তবে তেমনই একটি নাম ভেঙে দিয়েছে বিশ্বের সমস্ত রেকর্ড।
আরও শুনুন: শুধু মানুষ নয়, প্রকৃতির পাঠশালাতে মিমিক্রিতে দক্ষ প্রাণীরাও
১৯৮৪ সালে জেমি জন্মানোর পরে পরেই দুর্দান্ত এক বুদ্ধি খেলে গিয়েছিল তাঁর মা সান্দ্রা উইলিয়ামসের মাথায়। সন্তান নাম করুক, সেই ইচ্ছা কোন বাবা-মায়েরই না হয় বলুন। সেই ব্যবস্থা নিজে হাতে করে ফেলেছিলেন জেমির মা নিজেই।
না, জেমির আসল নাম মোটেই জেমি নয়। আত্মীয় পরিজনেরা আদর করে তাঁকে ডাকে জেমি বলে। তবে আদর করে না দাঁত ভাঙার ভয়ে, তা অবশ্য তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। কেননা জেমির নামটা যেমন মস্ত তেমন বিদঘুটে।
জেমি হওয়ার পরে নিজের মেয়ের বেশ লম্বা একটি নাম রেখেছিলেন তাঁর বাবা-মা। লম্বা মানে বেশ লম্বা। তবে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সেই নাম বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কী ভাবছেন, মেয়ের অমন বড় নাম রেখে পস্তাচ্ছিলেন তাঁরা। আজ্ঞে না। উল্টে মেয়ের নামের দৈর্ঘ্য এফিডেভিট করে আরও বেশ খানিকটা লম্বা করে আসেন তাঁরা।
আরও শুনুন: চোরেদের আজব কীর্তি! চুরি হয়ে গেল ৫৮ ফুট লম্বা আস্ত একখানা সেতু
জেমির আসল নামে রয়েছে মোট ১০১৯টি অক্ষর। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। জেমির জন্মের শংসাপত্রে রয়েছে এমনই নাম। আর সেই নামই ভেঙে ফেলেছে বিশ্বের সমস্ত রেকর্ড। পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম নামের অধিকারী সেই কন্যাই। তাঁর বার্থ সার্টিফিকেটের দৈর্ঘ্য নাকি লম্বায় ২ ফুট।
না, ওই নাম শোনার আবদার করে বসবেন না মোটেই। জেমি তাঁর নাম নিয়ে যত গর্বই করুন না কেন, সাধারণের পক্ষে সেই নাম লেখা বা বলা – দুইই বেশ কষ্টসাধ্য। কবি বলেন, নামে কী আসে যায়! কিন্তু এই মহিলার ক্ষেত্রে নামেই যে সবকিছু এসে যায়, সে তো দিব্য বোঝা যাচ্ছে।