একটিই মাত্র পান্না কেটে বানানো শিবলিঙ্গ। এমন শিবলিঙ্গ দারুণ মূল্যবান তো বটেই, তবে শুধু রত্নের বিচারেই নয়; এর অন্য গুরুত্বও আছে। কথিত আছে, এই ধরণের সাতটি শিবলিঙ্গ, যার কাছে থাকবে, তিনি নাকি অমরত্ব লাভের সুযোগ পাবেন। ইতিমধ্যেই পান্নার এমন শিবলিঙ্গ পাঁচ-পাঁচটি চুরি গিয়েছে তামিলনাড়ু থেকে! তবে সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে এমনই একটি পান্নার শিবলিঙ্গ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর ভাবতে পারেন, তাঁর দাম নাকি পাঁচশো কোটি টাকা! ঠিকই শুনেছেন। কী ভাবে উদ্ধার হল সেই শিবলিঙ্গ? শুনে নিন।
ঠিক যেন ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর গল্প! তবে এখানে আফ্রিকার রাজার কাছে ছিল না পান্নার শিবলিঙ্গ। ছিল এক ব্যক্তির ব্যাংকের লকারে। আর সেই শিবলিঙ্গের দামটা চমকে ওঠার মতোই। আনুমানিক পাঁচশো কোটি টাকা তো হবেই!
দিন দুয়েক আগে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরের কাছে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই ব্যক্তির অবশ্য দাবি, ওই সুপ্রাচীন পান্নার শিবলিঙ্গটি তাঁর বাবার। তিনিই তাঞ্জাভুরের একটি ব্যাংকের লকারে সযত্নে সরিয়ে রেখেছিলেন শিবলিঙ্গটি। ওটা তাঁদের পারিবারিক সম্পত্তি।
তবে তা মানতে নারাজ পুলিশ। কারণ তেমন কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি এনএস অরুণ নামে ওই ব্যক্তি। তাঁর বাবা এন এ সমিয়াপ্পনের বয়স প্রায় ৮০। তাঁর পরিবারের কাছে ওই মূর্তিটি কী ভাবে এবং কোথা থেকে এল, তা ভাল করে জানেন না অরুণ। তবে সেটি অনেকদিন ধরেই আছে।
আরও শুনুন: দত্তক নিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা, ৪৭০ জন অনাথ মেয়ের ‘বাবা’ হয়ে উঠেছেন মহেশ
দৈর্ঘ্যে প্রায় আট সেন্টিমিটার এবং ওজনে ৫৩০ গ্রাম। রত্নবিশেষজ্ঞেরা পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, পান্নার ওই শিবলিঙ্গটি একেবারে আসল। এবং তার আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচশো কোটি টাকার কাছাকাছি।
আটের দশকের কাছাকাছি সময়ে তামিলনাড়ুর একের পর এক মন্দির থেকে এমন পান্নার শিবলিঙ্গ চুরি যাওয়ার খবর আসে। ২০১৬ সালেও নাগাপ্পট্টিনাম জেলার থিরুকুভালাইয়ের একটি শিবমন্দির থেকে এমনই একটি পান্নার শিবলিঙ্গ চুরি হয়ে যায়। নিয়মিত পুজোর পর মন্দিরের একটি লকারে তুলে রাখা হত মহামূল্য শিবলিঙ্গটিকে। তবে নিরাপত্তা কড়া বলয় সত্ত্বেও চুরি যায় সেটি।
আরও শুনুন: চোরেদের আজব কীর্তি! চুরি হয়ে গেল ৫৮ ফুট লম্বা আস্ত একখানা সেতু
এমন পান্নার শিবলিঙ্গ নাকি তামিলনাড়ু জুড়ে রয়েছে মোট সাতটি। তার মধ্যে থেকে ইতিমধ্যেই পাঁচটি চুরি হয়ে গিয়েছে। কথিত আছে, এমন সাত-সাতটি পান্নার শিবলিঙ্গ যাঁর কাছে থাকবে, তাঁর অমরত্ব নাকি কেউ আটকাতে পারবে না। তা অমরত্ব লাভের প্রত্যাশাতেই একের পর এক চুরি না এর পিছনে রয়েছে পাচারকারীদের দুষ্ট চক্র, তা এখনও জানা যায়নি। এই শিবলিঙ্গটি থিরুকুভালাইয়ের সেই মন্দির থেকে চুরি যাওয়া মূর্তিটিই কি-না, তা জানতে আরও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এর মধ্যেই ওই মহামূল্যবান শিবলিঙ্গটি আদালতে পেশ করার কথা রয়েছে তামিলনাড়ু পুলিশের। তার পরেই জানা যাবে ৫০০ কোটি টাকার ওই শিবলিঙ্গের ভবিষ্যৎ।